আবাহনীর ইমন বাবুর শট আটকে দেন শেখ রাসেলের গোলকিপার আশরাফুল, সেটিই শেষ পর্যন্ত ব্যবধান গড়ে দেয়
আবাহনীর ইমন বাবুর শট আটকে দেন শেখ রাসেলের গোলকিপার আশরাফুল, সেটিই শেষ পর্যন্ত ব্যবধান গড়ে দেয়

ম্যারাথন টাইব্রেকার শেষে শেখ রাসেল ১৩: আবাহনী ১২

এমন ম্যারাথন টাইব্রেকার বাংলাদেশের শীর্ষ ফুটবলে কখনো দেখা গেছে কি না, গবেষণার বিষয়। দুই দলই একের পর এক গোল করল। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে ১৫তম শটে গিয়ে ম্যাচের নিষ্পত্তি!

আবাহনী লিমিটেডকে টাইব্রেকারে ১৩-১২ গোলে হারিয়ে ফেডারেশন কাপের ‘বি’ গ্রিপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেড। একই গ্রুপে রানার্সআপ আবাহনী।

দুই দলই আগেই উত্তর বারিধারার বিপক্ষে ওয়াকওভার পেয়েছে। না খেলেই তারা উঠে যায় ফেডারেশন কাপের শেষ আটে। আজ গ্রুপ সেরার লড়াইয়ে নির্ধারিত সময় ২-২ শেষে আবাহনী-শেখ রাসেল ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।

প্রথম ৫ শটে দুই দল সমান ৪টি গোল করেছে। দ্বিতীয় শটে আবাহনী অধিনায়ক নাবিব নেওয়াজের শট লাগে পোস্টে। পঞ্চম শটে গিয়ে বারের ওপর উড়িয়ে মারেন শেখ রাসেলের পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড ইসমায়েল তাভারেজ। আবাহনী জীবন পায় শেষ শটে।

টাইব্রেকার শেষে হতাশ আবাহনী

এরপর ষষ্ঠ, অর্থাৎ সাডেন ডেথের প্রথম শটে গোল করেন আবাহনীর ইরানি ডিফেন্ডার মিলাদ শেখ। শেখ রাসেলের মোহাম্মদ জুয়েলও লক্ষ্যভেদ করেন। কিন্তু সপ্তম শটে আবাহনীর সোহেল রানার শট রুখে দেন শেখ রাসেলের অভিজ্ঞ গোলকিপার আশরাফুল ইসলাম।

এরপর আবাহনী ছেড়ে এবার শেখ রাসেলে নাম লেখানো সাদ উদ্দিন বল উড়িয়ে মারেন পোস্টের ওপর। আবাহনী আবারও জীবন পায়।

এরপর টানা ৩টি শটে গোল করেন আবাহনীর নুরুল নাইম, মনির ও রেজাউল। টানটান উত্তেজনার মধ্যে গোল করে শেখ রাসেলকে ম্যাচে রাখেন রহমত মিয়া, খালেকুজ্জামান ও মানিক মোল্লা।

অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে দুই দলেই ১০ জন করে শট নিয়েছেন। বাকি ছিলেন শুধু দুই গোলকিপার আবাহনীর মাহফুজ হাসান (প্রীতম) ও শেখ রাসেলের আশরাফুল। তাঁরা দুজন ১১তম শটে একে অন্যকে পরাস্ত করেন সহজে। ১১ শটে তখন দুই দলের গোল সমান ৯টি করে।

শেখ রাসেলের নাসিরের শট ঢুকছে জালে, জয় নিশ্চিত হল তাতেই

এরপর আবাহনীর ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার দরিয়েলতন, নাবিব নেওয়াজ ও ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার রাফায়েল গোল করেন। পাল্টা গোল করেন শেখ রাসেলের ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার এইলতন, হেমন্ত ও কিরগিজ ডিফেন্ডার আজিজুর আকমেদভ।

১৫তম শটে এসে পারল না আবাহনী। আকাশি–নীলের বদলি মিডফিল্ডার ইমন বাবুর শট আটকে দেন আশরাফুল। শেখ রাসেলের ডিফেন্ডার নাসির উদ্দিন সহজেই গোল করলে ম্যারাথন টাইব্রেকারের ইতি।

টাইব্রেকারে আশরাফুল দুটি শট আটকে শেখ রাসেলের নায়ক। অন্যদিকে কোনো শটই আটকাতে পারেননি আবাহনীর মাহফুজ। বলতে বলতে সহজ সব গোল খেয়েছেন তরুণ এই গোলকিপার।

এর আগে প্রথম ৫ শটে আবাহনীর হয়ে গোল করেন আবাহনীর দরিয়েলতন, রাফায়েল, ইমন বাবু, কলিনদ্রেস। শেখ রাসেলের এইলতন, হেমন্ত, আকমেদভ ও নাসির।

শেখ রাসেল গোলকিপার আশরাফুলকে ঘিরে উল্লাস

ট্রাইব্রেকারের এই জয় শেষ আটে তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষ রহমতগঞ্জকে পেতে পারে শেখ রাসেল। আবাহনী পেতে পারেন শেখ জামাল ধানমন্ডিকে।

আজ ম্যাচের অষ্টম মিনিটে ১-০ করেছে আবাহনী। মানিক হোসেন মোল্লা ঠিকঠাক বল নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি। বক্সে ঢুকে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে কোনাকুনি শটে লক্ষ্যভেদ করেন দরিয়েলতন।

২০তম মিনিটে ১-১। এইলতনের নিচু ক্রসে পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড ইসমায়েল রুতি তাবারেজের শট আবাহনী গোলকিপার ফেরালেও পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে পারেননি। ফিরতি শটে জাল কাঁপান মান্নাফ রাব্বী।

৬০ মিনিটে রাফায়ালের ক্রসে দারুণ হেডে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন আবাহনীর দরিয়েলতন। রাসেলের ডিফেন্ডাররা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলেন তাঁর হেড।

৮৩ মিনিটে আবাহনী গোলকিপার বেরিয়ে আসেন পোস্ট থেকে। হেমন্তের হেডে ব্রাজিলয়ান ফরোয়ার্ড এইতন মাচাদোর টোকায় ২-২।

তখনো অনুমান করা যায়নি ৩০ শটের অবিশ্বাস্য এক টাইব্রেকার পর্ব হতে যাচ্ছে!