২০১৮ সালের অনূর্ধ্ব-১৫ সাফ জেতার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে উদীয়মান আল আমিন
২০১৮ সালের অনূর্ধ্ব-১৫ সাফ জেতার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে  উদীয়মান আল আমিন

ম্যানচেস্টার সিটিতে যাওয়া হলো না, এখন নিষেধাজ্ঞার খড়্গ

ব্রাজিলের সমর্থক হিসেবে আল আমিন স্বপ্ন দেখতেন ব্রাজিলে যাওয়ার। সেই স্বপ্ন পূরণ হবে কি না, তা ভবিষ্যৎই জানে। তবে তাঁর সামনে গত বছর সুযোগ এসেছিল ইংল্যান্ডের বিখ্যাত ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটিতে অনুশীলন করার। ক্লিয়ার মেন অনূর্ধ্ব-১৭ স্কুল ফুটবল টুর্নামেন্ট থেকে বাছাই করা যে ৬ ফুটবলারকে ম্যানচেস্টার সিটির টিকিট দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে ‘হাই প্রোফাইল’ ছিলেন অনূর্ধ্ব-১৫ সাফজয়ী দলের এই সদস্য। কিন্তু শেষ পর্যন্ত করোনার কারণে ম্যানচেস্টার সিটিতে যাওয়া হয়নি আল আমিনের।

সে সুযোগ এখনো আছে বলে শোনা যায়। সম্ভাবনাময় এই ফুটবলারের মাথার ওপর নিষেধাজ্ঞার খড়্গ। অনলাইন বেটিং ও স্পট ফিক্সিংয়ের কারণে আরামবাগ ক্লাবসহ বিভিন্ন মেয়াদে ১৪ জন ফুটবলারকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে তিন বছরের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে আল আমিনকে। সেই শাস্তির বিরুদ্ধে আবেদন করতে আজ বাফুফে ভবনে এসেছিলেন আল আমিন।

আজ বাফুফে ভবনে আবেদন করতে আসা কয়েকজন ফুটবলার

২০১৮ সালের অনূর্ধ্ব-১৫ সাফজয়ী দলের এই সদস্য বলেন, ‘আমি কোনো অন্যায় করিনি। কোনো প্রকার খারাপ কাজের সঙ্গে আমি নেই। আমি শুধু ফুটবল খেলা নিয়েই ভাবি। আমার স্বপ্নটাই বড় ফুটবলার হওয়ার।’ ক্লাবের অনেক সাধারণ খেলোয়াড়ের সঙ্গেও কথা বলে জানা গেছে, শাস্তি পাওয়া কয়েকজন নিরপরাধ ফুটবলারের মধ্যে আল আমিন একজন।

উদীয়মান এই রাইটব্যাক ছাড়াও বেশ কয়েকজন ফুটবলার আজ বাফুফে ভবনে এসে শাস্তির বিরুদ্ধে আবেদন করেছেন। বাফুফে ভবনে এসে আবেদন করতে দেখা গিয়েছে রাকিবুল ইসলাম, মোহাম্মদ রকি, রাহাদ মিয়া ও মিরাজ মোল্লাকে। ২০১৯ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলেছেন রাহাদ। সম্ভাবনাময় এই ফুটবলারের আকুতি, ‘ফুটবলই আমার সব। ফুটবল খেলেই আমি পরিবার চালাই। আমি কোনো অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত নই। এই ব্যাপারে আমার কোনো ধারণাই নেই।’ এ ছাড়া মোস্তাফিজুর রহমান, ওমর ফারুক, জাহিদ হোসেন ও আবুল কাশেম আবেদনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতির সঙ্গে সভা করেছেন শাস্তি পাওয়া ফুটবলাররা

বাফুফে ভবনে আবেদনের আগে তাঁরা ফুটবল খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতির সঙ্গে সভা করে তাদের সাহায্য চান। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার ইকবাল হোসেন, ইমতিয়াজ আহমেদ নকিব, গোলাম গাওস, সাইফুর রহমান মণিসহ অনেকে। ইকবাল খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতির সভাপতিও। জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা নিজেরাও একটা তদন্ত কমিটি গঠন করব। যে খেলোয়াড়েরা অপরাধ করেননি, তাঁদের সঙ্গে আমরা থাকব। যাঁরা অপরাধ করেছেন, তাঁদের সঙ্গে থাকব না।’

শাস্তি পাওয়া ১৪ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে অনেক কম বয়সী খেলোয়াড় আছেন, যাঁরা ক্লাবের চাপে অন্যায় করতে পারেন বলে ধারণা। কম বয়সী খেলোয়াড়দের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তাঁদের শাস্তির বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আহ্বানও জানিয়েছেন সাবেক খেলোয়াড়েরা।