মেসি না রোনালদো? বিশ্বসেরা ফুটবলারের প্রশ্ন উঠলেই চলে আসে এই দুই তারকার নাম। কিন্তু সবচেয়ে দামি খেলোয়াড়ের দৌড়ে যে ক্রমশ পিছিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। নতুন এক গবেষণা জানাচ্ছে, ইংল্যান্ডের ডেলে আলিকে দলে টানতেও নাকি লিওনেল মেসি কিংবা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর চেয়েও বেশি অর্থ খরচ করতে হবে ক্লাবগুলোকে!
আন্তর্জাতিক ক্রীড়া গবেষণা কেন্দ্রই (সিআইইএস) জানাচ্ছে চমকে দেওয়া এ তথ্য। খেলোয়াড়দের বয়স, পারফরম্যান্স, জাতীয় দলে তাঁর অবস্থান, চুক্তির মেয়াদ এবং মাঠে অবস্থানকে মাথায় রেখে সৃষ্টি করা হয়েছে এলগরিদম। ভিত্তিমূল্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে দুই হাজার দলবদলের তথ্য। সে তথ্য অনুযায়ী মেসিকে কিনতে চাইলে সর্বোচ্চ ১৫১.৭ মিলিয়ন ইউরো খরচ করতে পারে একটি ক্লাব। রোনালদোর ক্ষেত্রে অঙ্কটা আরও অনেক কম—মাত্র ১১২.৪ মিলিয়ন ইউরো। বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পরেও তাঁদের মূল্য হাতের নাগালে রেখে দিচ্ছে বয়স। ২৯ বছরের মেসি কিংবা ৩২ বছরের রোনালদোর জন্য এর চেয়ে বেশি অর্থ খরচ করা নাকি কঠিন!
অথচ টটেনহামের ডেলি আলির মূল্য ধরা হয়েছে ১৫৫.১ মিলিয়ন ইউরো, তাঁর ইংল্যান্ড ও ক্লাব সতীর্থ হ্যারি কেনকেও দলে নিতে চাইলেও নাকি ৪৫৩.৬ মিলিয়ন অর্থ ব্যয় ‘অপচয়’ হবে না! দুজনের বয়স যথাক্রমে ২১ ও ২৩ হওয়াতেই এই উচ্চমূল্য।
অল্প বয়সের কারণেই বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবলারের মুকুট গেছে নেইমারের কাছে। বয়স মাত্র ২৫, বার্সেলোনার সঙ্গে চুক্তিও ২০২১ সাল পর্যন্ত। জাতীয় দল ও ক্লাবের হয়ে দুর্দান্ত সাফল্য তাঁর অর্থমূল্যকে তুলে দিয়েছে চূড়ায়। নেইমারকে দলে টানতে হলে ২১১ মিলিয়ন ইউরো খরচ করতেও নাকি আপত্তি থাকার কথা নয় ইউরোপের সেরা ক্লাবগুলোর। দুই ও তিনে আছেন আলি ও কেন।
মেসির জায়গা হয়েছে চারে। ১৫০.৩ মিলিয়ন ইউরো দর ওঠা আঁতোয়ান গ্রিজমান আছেন পাঁচে। আর রোনালদোর জায়গা হয়েছে এগারোতে। গঞ্জালো হিগুয়েইন আছেন শীর্ষ দশে। তাঁর সঙ্গে আছেন লুইস সুয়ারেজ, পল পগবা, হ্যাজার্ড ও দিবালাও আছেন দশের মধ্যে। একসময়ের দলবদলের রেকর্ড গড়া গ্যারেথ বেল আছে ৪৩ নম্বরে, তাঁকে কিনতে এখন নাকি ৬৬.৭ মিলিয়ন ইউরোর বেশি খরচ করার দরকার নেই!
তবে এ গবেষণার কিছু ফল মেনে নিতে আপত্তি হতে পারে ফুটবল সমর্থকদের। কিলিয়ান এমবাপ্পের জন্য যেখানে ১৩৫ মিলিয়ন ইউরোর প্রস্তাব ক্লাবগুলো করতে চাচ্ছে, সেখানে এই গবেষণায় তাঁর মূল্য ধরা হয়েছে ৯৩ মিলিয়ন! তাঁর চুক্তির মেয়াদ ২০১৯ সাল পর্যন্ত, এ তথ্যটাই হয়তো এমন মূল্যমানের কারণ। লিভারপুলের দুই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড কুতিনহো ও ফিরমিনোর মূল্য দেখেও প্রশ্ন জাগতেই পারে। ২৫ বছরের ফিরমিনোর চুক্তির মেয়াদ ২০২০ সাল পর্যন্ত হওয়ার পরও তাঁর মূল্য ধরা হয়েছে ৮৫.৩ মিলিয়ন ইউরো। আর এক বছরের ছোট কুতিনহোর চুক্তি ২০২২ সাল পর্যন্ত থাকলেও তাঁর মূল্য ধরা হয়েছে মাত্র ৭১ মিলিয়ন!
মাদ্রিদে দুর্দান্ত এক মৌসুম কাটানো ইসকোর মূল্য ধরা হয়েছে ৪৫ মিলিয়ন ইউরো। আর রিয়ালের বেঞ্চেই প্রায় পুরো মৌসুম কাটানো মাতেও কোভাচিচের মূল্য নাকি ৫৬ মিলিয়ন ইউরো!