>রীতিটা চলছে বেশ কয়েক বছর ধরেই। ফিফা বর্ষসেরা বা ব্যালন ডি’অরের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রায়ই দেখা যায় মেসি-রোনালদোর মধ্যে যিনি জেতেন না, তিনি সেই অনুষ্ঠানে আসেনও না। এবার দুজনের মধ্যে কেউই এই পুরস্কার দুটি জেতেননি। এ কারণে কেউই অনুষ্ঠান দুটিতে আসেননি। দুজনের এই মানসিকতায় চটেছেন বর্তমান ব্যালন ডি’অর ও ফিফা বর্ষসেরা পুরস্কারজয়ী লুকা মদরিচ, শুনিয়ে দিয়েছেন দুই কথা।
মেসি-রোনালদো ছাড়া গত ১০ বছরে ফুটবলের ব্যক্তিগত সেরার পুরস্কার কেউই পাননি। কিন্তু একটি ব্যাপার গত ১০ বছরে সবার চোখেই খুব লেগেছে। যেবার মেসি পুরস্কার পেতেন, সেবার রোনালদো পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আসতেন না। আবার রোনালদোর দিন অনুপস্থিত থাকতেন মেসি। অন্যজনের সাফল্যে যেন জ্বলে যেতেন অপরজন। ১০ বছর পর মেসি-রোনালদো নন, পুরস্কার জিতলেন লুকা মদরিচ। এবার মেসি-রোনালদোদের কাউকেই দেখা যায়নি এই অনুষ্ঠানে। এমন আচরণে ক্ষুব্ধ ক্রোয়েশিয়ান তারকা মদরিচ।
মেসি-রোনালদোর আধিপত্য খর্ব করে এবার জিতে নিয়েছেন ফিফা বর্ষসেরা ও ব্যালন ডি’অরের পুরস্কার দুটি। মেসি-রোনালদোর মধ্যে কেউই যেহেতু জিতেননি, আগের সেই ধারা অব্যাহত রেখে এবারের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান দুটিতে দুজনের কাউকেই দেখা যায়নি। মেসিকে দেখা গেছে তার তিন ছেলের সঙ্গে বাসায় সময় কাটাতে, রোনালদোও ছিলেন পরিবারের সঙ্গেই। আরেক তারকা নেইমার অনুষ্ঠানে না এসে খেলেছেন ‘কল অফ ডিউটি’। খেলোয়াড়দের এই মানসিকতার তীব্র সমালোচনা করেছেন মদরিচ।
মেসি-রোনালদোর দিকে তোপ দেগে মদরিচ বলেছেন, ‘আমি আসলে জানি না তারা কেন এই অনুষ্ঠানগুলোতে আসে না। তাদের ইচ্ছা, তারা আসে না। মনে হয় তারা যখন এই পুরস্কার জেতে, তখনই খালি এই পুরস্কার দুটির দাম আছে, তা ছাড়া নেই। এটা ঠিক নয়। যারা ১০ বছর ধরে আপনাদের সেরা খেলোয়াড় বানাল, সেসব সতীর্থ, খেলোয়াড়, সাংবাদিক, কোচ, ম্যানেজার, ফুটবল-সংশ্লিষ্ট সবার কাছেই ব্যাপারটা (পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে না আসা) অবমাননাকর।’
তবে মদরিচ এটাও মনে করেন, মানুষ তা–ই করে থাকে, যা সে ভালো বলে মনে করে, ‘আমি আবারও বলছি, আসা না-আসা সম্পূর্ণ তাদের বিবেচনা, তাদের কাছে হয়তো মনে হয়েছে না আসাটাই যথার্থ।’
তবে মদরিচ এটা বেশ ভালো করেই জানেন, এবারের পুরস্কার দুটি তিনি জিতলেও বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় তিনি নন। এ জন্য বারবার ইঙ্গিত করেছেন শুধু গত মৌসুমে নিজের পারফরম্যান্সের দিকে, ‘এ পুরস্কারগুলো মূলত এক মৌসুমের পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়ে থাকে। আর এটাও সত্যি যে গত এক মৌসুমের পারফরম্যান্সের কথা মাথায় রেখেই বিশ্বব্যাপী সব খেলোয়াড়, কোচ, সাংবাদিক এই পুরস্কারের জন্য ভোট দিয়েছেন। নাকি তারা (মেসি-রোনালদো) বলতে চায়, তারা সবাই (সাংবাদিক, খেলোয়াড়, কোচ) একসঙ্গে ভুল মানুষকে ভোট দিয়েছে? পুরস্কারটা শুধু কোনো খেলোয়াড়ের দক্ষতার ওপর দেওয়ার হয় না। সেটা হলে ভোটাভুটি বাদ দিয়ে ফুটবলের সব পুরস্কার ভাগাভাগি করে শুধু মেসি-রোনালদোর কপালেই জুটত।’
গত মৌসুমটা স্বপ্নের মতো কেটেছে মদরিচের। রিয়াল মাদ্রিদকে টানা তৃতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতানোর পাশাপাশি নিজের জাতীয় দল ক্রোয়েশিয়াকেও নিয়ে গেছেন বিশ্বকাপের ফাইনালে। সামনে ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপা জেতার হাতছানি। সেটা জিতে ২০১৮ সালটাকে যথাযথভাবে বিদায় দিতে পারবেন তো তিনি?