ফিলিস্তিন ১-০ ইসরায়েল! অন্তত ফিলিস্তিনের মানুষ আর্জেন্টিনার সফর বাতিলকে তাদের জন্য রাজনৈতিক জয় হিসেবে দেখছে। গত কিছুদিন ধরে জেরুজালেম আবারও উত্তপ্ত। প্রচুর ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে এই একটা সুখবর যেন বিজয়ের আনন্দ এনে দিয়েছে তাদের। কাল বুধবার রামাল্লার পশ্চিম তীরে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন ফিলিস্তিন ফুটবল সংস্থার প্রেসিডেন্ট জিব্রিল রাজব। সংবাদ সম্মেলনে ছিল আর্জেন্টিনা আর ফিলিস্তিনের পতাকা। বিরাট এক ছবিতে রাজব ও মেসির পাশাপাশি তোলা ছবি ছিল, আর ওপরে লেখা ছিল, ফিলিস্তিনের পক্ষ থেকে মেসি তোমাকে ধন্যবাদ।
রাজব সরাসরি অভিযোগ করেছেন, ‘ইসরায়েলিরা মেসি আর আর্জেন্টিনার তারকাদের ব্যবহার করতে চেয়েছিল। আমি ওদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই সফর বাতিল করায়। এটাই সঠিক সিদ্ধান্ত।’ রাজব অবশ্য এর আগে ঘোষণা দিয়ে মেসির জার্সি পোড়ানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন।
ইসরায়েলের ফুটবল সংস্থা খুবই হতাশ। তবে ম্যাচটিকে যে ইসরায়েল সরকার রাজনৈতিকভাবেও ব্যবহার করতে চেয়েছিল, এতেও সন্দেহ নেই। ম্যাচটি হওয়ার কথা ছিল হাইফায়। কিন্তু পরে ভেন্যু বদলে জেরুজালেমকে বেছে নেওয়া হয়। সারা বিশ্বের নজর থাকবে, এমন একটি ম্যাচ ইসরায়েল জেরুজালেমের স্বাগতিক হিসেবে খেললে তা হতো কূটনৈতিক এক বিজয়ও। যদিও ইসরায়েলের ফুটবল কর্তাব্যক্তিরা মনে করেন, ম্যাচটি হাইফায় হলে এত সব ঝামেলাই হতো না।
এমনকি ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট রিউভেন রিভলিন পর্যন্ত আর্জেন্টিনার ম্যাচটির রাজনীতিকরণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। যদিও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রত্যক্ষ সমর্থনে ম্যাচটি জেরুজালেমের আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল বলে জানা যায়। যেটি ফিলিস্তিনিরা রক্ত দিয়ে হলেও প্রতিরোধের ঘোষণা দিয়েছিল।
জেরুজালেম নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ইতিহাস দীর্ঘ। ইসরায়েল সব সময়ই জেরুজালেমকেই তাদের রাজধানী বিবেচনা করে এসেছে। কিন্তু ফিলিস্তিনিরাও জেরুজালেমকে নিজেদের রাজধানী মনে করে। বিশেষ করে তারা জেরুজালেমের পূর্ব অংশটিকে নিজেদের রাষ্ট্রের রাজধানী মানে। এর মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের আগের অবস্থান পরিবর্তন করে জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন। তখন থেকে দুই পক্ষের বিরোধে নতুন রক্তাক্ত অধ্যায় যুক্ত হয়েছে।