>
চিলির বিপক্ষে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে বিতর্কিত লাল কার্ড দেখেন মেসি। সেই লাল কার্ডের কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবলকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ বলেছিলেন মেসি। এ কারণে কঠোর শাস্তির খড়্গ নেমে আসতে পারে মেসির ওপর। আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ) মেসিকে লাল কার্ড দেখানোর বৈধতা আনুষ্ঠানিকভাবে চ্যালেঞ্জ করেছে। এদিকে মেসির প্রতি কনমেবলের এক সদস্যের পরামর্শ, প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলে তবেই শাস্তি এড়াতে পারবেন তিনি।
আর্জেন্টিনা ও চিলির কোপা আমেরিকায় তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচের কথা। প্রথমার্ধের মাত্র ৮ মিনিট বাকি তখন। সার্জিও আগুয়েরো এবং পাওলো দিবালার গোলে ২-০ গোলে এগিয়ে আর্জেন্টিনা। তখনই ঘটল অঘটন।
গোললাইনের গা ঘেঁষে লিওনেল মেসি ও গ্যারি মেডেলের মাঝে গোল বাধল। দুজনের বল দখলের লড়াইয়ে বল গোললাইন অতিক্রম করলে মেডেল অতি আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে মেসিকে উপর্যুপরি ধাক্কা দিতে থাকেন। মেসি শুধু আত্মরক্ষার কাজটুকু করেছেন। কিন্তু রেফারি মারিও দিয়াজ দে ভিভার মেসি-মেডেল দুজনকেই সরাসরি লাল কার্ড দেখিয়ে দেন। যদিও লাল কার্ডটি ম্যাচের ফলে কোনো রকম প্রভাব ফেলেনি (আর্জেন্টিনা ২-১ চিলি), কিন্তু মেসি সেটি কিছুতেই মানতে পারছেন না। কোপা আমেরিকায় তৃতীয় হওয়ার মেডেলও নেননি আর্জেন্টাইন তারকা। এটি নিয়ে প্রশ্ন উঠলে লাতিন ফুটবল সংস্থাকে (কনমেবল) একহাত নেন তিনি, ‘এমন দুর্নীতিগ্রস্ত আয়োজনের অংশ হওয়াকে অনুচিত বলে মনে করি।’
সে ম্যাচে মেসিকে দেখানো লাল কার্ডের যৌক্তিকতা চ্যালেঞ্জ করে অবশেষে কনমেবলের কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করেছে এএফএ। আর্জেন্টিনার ফুটবল কর্তা ক্লদিও তাপিয়া এবং মেসির সই করা এক চিঠির মাধ্যমে কনমেবলের কাছে প্রতিবাদ জানিয়েছে এএফএ। ম্যাচে মেসি লাল কার্ড পাওয়ার মতো কোনো কিছু করেননি বলে মত তাদের।
এরপরও কনমেবল যদি লাল কার্ড বহাল রাখে, তাহলে মেসির শাস্তির মেয়াদ কমিয়ে এক ম্যাচে নামিয়ে আনা হয়, চিঠিতে সে অনুরোধ করেছে এএফএ। যদি লাল কার্ডের জন্য মেসির শাস্তি কমিয়ে এক ম্যাচে নামিয়ে আনা হয়, তাহলে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর চিলির বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচটি খেলতে পারবেন না মেসি। আর যদি দীর্ঘমেয়াদি শাস্তির মুখে পড়েন মেসি, তাহলে আগামী ২৩ মার্চ থেকে শুরু হওয়া ২০২২ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে বেশ কয়েকটি ম্যাচ খেলতে পারবেন না আর্জেন্টাইন তারকা।
এদিকে মেসি কনমেবলকে সরাসরি ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ সংস্থা বলায় দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী সংস্থার মারাত্মক সম্মানহানি হয়েছে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। অনেকে ধারণা করছেন, ‘বিস্ফোরক’ মন্তব্যের ফলে মেসির ওপর কঠোর শাস্তির খড়্গ নেমে আসতে পারে। এমনও শোনা গেছে, আন্তর্জাতিক ফুটবলে মেসিকে প্রায় দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হতে পারে। তবে মেসি যদি তাঁর মন্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন, তাহলে তিনি শাস্তির হাত থেকে বেঁচে যেতে পারেন তিনি। কনমেবল কোর্ট অব আরবিট্রেশনের আর্জেন্টাইন সদস্য গুস্তাভো আব্রিউ তেমনটিই মনে করেন, ‘আমি মেসিকে ক্ষমা চেয়ে নিতে পরামর্শ দেব। নয়তো বড়সড় শাস্তির মুখে পড়বে সে।’
মেসি এখন ক্ষমা চাইবেন কি না, সেটিই দেখার বিষয়। ক্ষমা না চাইলে যে মেসিকে কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হবে, তা বলাই বাহুল্য। মেসি কি ক্ষমা চাইবেন?