কোপা আমেরিকার শিরোপা জয়ের পর সতীর্থদের নিয়ে লিওনেল মেসির উচ্ছ্বাস
কোপা আমেরিকার শিরোপা জয়ের পর সতীর্থদের নিয়ে লিওনেল মেসির উচ্ছ্বাস

বলছেন এমিলিয়ানো মার্তিনেজ

মেসি কথা বললে আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্টকেও চুপ করে থাকতে হবে

লিওনেল মেসি আর্জেন্টিনা দলের অধিনায়ক, তিনিই দলটির সবচেয়ে বড় তারকা—এগুলো সর্বজনবিদিত। কেউ কেউ তো বলে থাকেন, আর্জেন্টিনা দলে মেসিই সর্বেসর্বা!
লাওতারো মার্তিনেজ, আনহেল কোরেয়া, জিওভানি লো সেলসো, এমিলিয়ানো মার্তিনেজ...আর্জেন্টিনা দলের এই খেলোয়াড়দের কাছে মেসির অবস্থান যে কী, এটা স্পষ্ট হয় অ্যাস্টন ভিলার গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেজের একটি কথায়। তাঁর মতে, মেসি কথা বললে সবার চুপ করে থাকা উচিত, এমনকি তিনি আর্জেন্টিনার প্রেসিডেটন্ট হলেও।

ফুটবল বিশ্ব মেসিকে স্বল্পভাষী ও বিনয়ী হিসেবেই চেনে। কিন্তু দলের অধিনায়ক হিসেবে কোনো টুর্নামেন্ট বা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে সতীর্থদের অনুপ্রাণিত করতে তাঁকে তো কথা বলতেই হয়। মেসি ওই রকম সময় ছাড়াও কোনো কথা বললে চুপ করে থেকে তাঁর কথার পুঙ্খানুপুঙ্খ সবার শোনা উচিত বলেই মনে করেন মার্তিনেজ।
মেসির কথা খেলোয়াড়দের কীভাবে অনুপ্রাণিত করে, এর একটি উদাহরণও দিয়েছেন আর্জেন্টিনার গোলকিপার। গত বছর রিও ডি জেনিরোর বিখ্যাত মারাকানা স্টেডিয়ামে কোপা আমেরিকার ফাইনালে স্বাগতিক ব্রাজিলকে হারিয়ে আর্জেন্টিনার জার্সিতে শিরোপা-খরা কাটিয়েছেন মেসি। আর্জেন্টিনারও এটি ছিল ২৮ বছর পর প্রথম শিরোপা জয়।

আর্জেন্টিনার অধিনায়ক লিওনেল মেসি

সেই ফাইনালের আগে ড্রেসিংরুমে সতীর্থদের উদ্দেশে কথা বলেছিলেন মেসি। তাঁর কথা আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়দের কতটা অনুপ্রাণিত করেছিল, সেটাই বলেছেন মার্তিনেজ, ‘সে বলেছিল, এটাই তার শেষ ম্যাচ এবং নিজের সর্বস্ব বিলিয়ে দেবে সে। তার কথা শুনে আমার গায়ে কাঁপুনি অনুভব করেছিলাম আমি।’

মেসির সেই বক্তব্য আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়দের মনে শিহরণ বইয়ে দিয়েছিল। মার্তিনেজ বলে চলেন, ‘মেসি কথা বলছিল, আমার গায়ে কাঁপুনি দিল, সবাই একদম চুপ।’ আর্জেন্টিনার হয়ে সবচেয়ে বেশি ১৬২টি ম্যাচ খেলে সর্বোচ্চ ৮৬ গোল করা মেসির কথা নিয়ে এরপর মার্তিনেজ বলেছেন, ‘মেসি যখন কথা বলে, সবারই এমন চুপ থাকা উচিত, তা তিনি আর্জেন্টিনার কোচ বা আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হোন না কেন। সবাইকে চুপ করে থাকতে হবে।’

কোপা আমেরিকার ট্রফি নিয়ে মেসির উচ্ছ্বাস

মেসির সেই কথা কতটা কাজে লেগেছিল, সেটা বোঝা গেছে মারকানার ফাইনালে। আনহেল দি মারিয়ার ২২ মিনিটের গোলে ১-০ ব্যবধানে জেতা আর্জেন্টিনার সব খেলোয়াড়ই যেন সেদিন মেসির জন্য মরিয়া হয়ে খেলেছিলেন। নিজেদের সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়েছিলেন।

বিশ্বকাপের আগে মেসি নিশ্চয়ই সতীর্থদের অনুপ্রাণিত করতে এভাবেই কথা বলবেন। দেখা যাক, কাতার বিশ্বকাপে মেসির কথা কতটা অনুপ্রাণিত করতে পারে মার্তিনেজদের। কোপা আমেরিকার ফাইনালের মতো আরেকবার যদি মার্তিনেজদের মনে শিহরণ জাগিয়ে তাঁদের সেরাটা বের করে নিতে পারেন মেসি, তাহলে একটা বিশ্বকাপ জিততে না পারার আক্ষেপ তাঁর ঘুচলেও ঘুচতে পারে!