নেইমারের গোলে পাকেতাদের এমন সম্মিলিত নৃত্য পরিচিত হয়ে উঠছে
নেইমারের গোলে পাকেতাদের এমন সম্মিলিত নৃত্য পরিচিত হয়ে উঠছে

মেসি-আর্জেন্টিনা উন্মাদনার মধ্যেই নেইমারের ব্রাজিলের ৫ গোল

প্রথম মিনিট বিশেক ছন্দ খুঁজে পেতে একটু কষ্ট হয়েছে ব্রাজিলের। এর পর থেকে দক্ষিণ কোরিয়াকে আর তেমন পাত্তাই দেননি নেইমাররা। সিউলে শেষ পর্যন্ত আজ প্রীতি ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়াকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে ব্রাজিল। জোড়া গোল করা নেইমারের জন্য বড় ব্যাপার, ব্রাজিলের হয়ে পেলের সবচেয়ে বেশি ৭৭ গোলের রেকর্ডের আর ৪ গোল দূরত্বে চলে গেছেন পিএসজির ৩০ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড।

গতকাল ওয়েম্বলিতে লা ফিনালিসিমায় ইউরোজয়ী ইতালির বিপক্ষে কোপা আমেরিকাজয়ী আর্জেন্টিনার ৩-০ গোলের জয় নিয়ে বিশ্বজুড়ে কী মাতামাতিই না চলছে! এর মধ্যে সিউলে আজ চুপিসারে দারুণ ফুটবলের প্রদর্শনীই রেখেছে তিতের ব্রাজিল। নেইমার, পাকেতা, রাফিনিয়ারা শুরু থেকে দক্ষিণ কোরিয়াকে নাচিয়েছেন। বদলি নামা ভিনিসিয়ুস, কুতিনিও, জেসুসরাও বুঝিয়ে দিয়েছেন, এই ব্রাজিলের বেঞ্চও কাতার বিশ্বকাপে ভরসা করার মতোই!

নেইমার ছিলেন দারুণ ছন্দে

সবচেয়ে বড় ভরসা কে, তা অবশ্য আলাদা করে বলার কিছু নেই। কে আবার, নেইমার! গতকাল সর্বশেষ অনুশীলনে বল দখলের লড়াইয়ে তাঁর পা মাড়িয়ে দিয়েছিলেন সতীর্থ লিও অর্তিজ ও দানিলো, নেইমারের তাই আজ খেলা নিয়েই সংশয় ছিল। কিন্তু চোটটা অতটা গুরুতর ছিল না, তাই শুরু থেকেই আজ নেইমারকে মাঠে নামিয়ে দিয়েছেন ব্রাজিল কোচ তিতে।

৪-২-২-২ ছকে আক্রমণে রিচার্লিসনের সঙ্গে জুটি বাঁধা নেইমারই ব্রাজিলের প্রতিটি আক্রমণে প্রাণ জুগিয়ে বুঝিয়েছেন, কাতারে তাঁর পায়েই বাঁধা ব্রাজিলের ‘হেক্সা’র স্বপ্ন। নেইমার কতটা দারুণ খেলেছেন, তার প্রমাণ সম্ভবত এটি যে ৭৮ মিনিটে তিনি মাঠ ছাড়ার সময় অনেক দক্ষিণ কোরিয়ানই উঠে হাততালিতে অভিবাদন জানিয়েছেন নেইমারকে।

পেনাল্টি থেকে গোল করছেন নেইমার

২টি গোলও করেছেন নেইমার, দুটিই অবশ্য পেনাল্টি থেকে। তবে সে পেনাল্টি দুটিই এত অনায়াসে নিয়েছেন যে দেখে মনে হবে, পেনাল্টি নেওয়া বুঝি দুনিয়ার সবচেয়ে সহজ কাজ! এই ২ গোলে ব্রাজিলের জার্সিতে ১১৮ ম্যাচে নেইমারের গোল হলো ৭৩টি।
নেইমারের ২ গোলের আগেই অবশ্য ম্যাচে দুই দিকে ২ গোল হয়ে গেছে। ব্রাজিল প্রথম ২০ মিনিটে সেভাবে গুছিয়ে নিতে পারেনি, তবে গোল পেতে হলে আগে গুছিয়ে নিতেই হবে, এমন দিব্যিও তো কেউ দেয়নি। সাত মিনিটে ফ্রেডের শট জালে ঢোকার মুহূর্তে রিচার্লিসনের পায়ে লাগে, গোলটা শেষ পর্যন্ত তাই রিচার্লিসনের নামেই লেখা হলো। তবে ৩১ মিনিটে হোয়াং উই-জোর গোলে সমতায় ফেরে দক্ষিণ কোরিয়া।

বেঞ্চের শক্তি বুঝিয়ে দিয়েছে ব্রাজিল

বাকিটা সময় শুধুই ব্রাজিলের। বিরতির তিন মিনিট আগে ভিএআরে দেখার পর পেনাল্টি পায় ব্রাজিল, অনায়াসে লক্ষ্যভেদ নেইমারের। বিরতি থেকে ফিরে আবার পেনাল্টিতে নেইমারের গোল ৫৭ মিনিটে। ২টি গোলেই দৌড়ে এসে গোলকিপারকে বিভ্রান্ত করে নিজের ডান দিকে মেরেছেন নেইমার। দ্বিতীয় গোলে তো বল জালে ঢোকার আগেই বিভ্রান্ত হয়েছেন বুঝতে পেরে দক্ষিণ কোরিয়া গোলকিপারের সে কী হতাশা!

তা নেইমার তো নিয়মিতই গোল করে, করিয়ে আলোচনায়। তাঁকে নিয়ে নতুন করে ব্রাজিল কোচ তিতের কিছু ভাবতে হবে বলে মনে হয় না। তবে তিতেকে সবচেয়ে বেশি তৃপ্তি দেবে বদলি নামা খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স। ৮০ মিনিটে কুতিনিও করেছেন দলের চতুর্থ গোল, যোগ করা সময়ে ডান দিক থেকে ঢুকে দুজনকে কাটিয়ে ঠান্ডা মাথায় বল জালে জড়িয়েছেন জেসুসও।

আগামী সোমবার টোকিওতে জাপানের বিপক্ষে খেলবে ব্রাজিল।