যখন মাঠে নামছিলেন, তখনো লিওনেল মেসির তাণ্ডব পূর্ণ রূপ পায়নি। নেশনস লিগে ঘরের মাঠে কাল ম্যাচ ছিল ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর্তুগালের। মাঠে যখন নেমেছেন, ততক্ষণে এস্তোনিয়ায় প্রীতি ম্যাচে দুই গোল করে ফেলেছেন মেসি। তাঁর ফ্রি-কিক ঠেকানোর পর সতীর্থ কারভালিও যখন পর্তুগালের প্রথম গোল করলেন, সে সময়ে হ্যাটট্রিকের সুবাস মাখছেন মেসি। এরপর অবশ্য সমতা।
এস্তোনিয়ার বিপক্ষে এর পর আরও দুই গোল করেছেন মেসি। সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের বাকি সময়ে রোনালদোও করলেন দুই গোল। দাপট দেখানো এক ম্যাচে সুইসদের ৪-০ গোলে হারিয়ে নিজেদের গ্রুপে শীর্ষে উঠে গেছে পর্তুগাল। আর রোনালদো আন্তর্জাতিক ফুটবলে নিজের গোল সংখ্যা নিয়ে গেছেন ১১৭-তে।
গতকাল রোনালদো একটু চাপেই ছিলেন। প্রতিদ্বন্দ্বী ইউরোপের আরেক মাঠে ঝড় তুলেছেন বলে নয়, জাতীয় দলে তাঁর ফর্মটা ভালো যাচ্ছে না। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্লে-অফ পর্ব পেরিয়ে পর্তুগাল মূল টুর্নামেন্টে চলে গেছে। কিন্তু সে পর্বে রোনালদোর তেমন কোনো অবদান ছিল না। নেশনস লিগের প্রথম ম্যাচে স্পেনের বিপক্ষে একে তো মূল একাদশে তাঁকে রাখেননি কোচ ফার্নান্দো সান্তোস, তারওপর সেদিন বদলি নেমেও ভালো খেলেননি। টানা পাঁচ ম্যাচে গোল পাননি জাতীয় দলের হয়ে। গত দশ বছরে এমন মন্দা আর আসেনি রোনালদোর।
১৫ মিনিটেই মনে হয়েছে, কাল ভাগ্য বদলাবে। তাঁর ফ্রি-কিক সুইজারল্যান্ডের গোলকিপার গ্রেগর কোবেল ঠেকিয়ে দিলেও ফিরতি শটে গোল করেন উইলিয়াম কারভালিও।
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুনঃ
মেসি শুধু আর্জেন্টিনার নয়, বিশ্বের সম্পদ
রোনালদো ‘ভালো পারেন না’ বলেই একাদশে ছিলেন না
রোনালদো রেকর্ডের পেছনে ছোটেন না, রেকর্ডই রোনালদোর পেছনে ছোটে
পাঁচ মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে প্রথমার্ধেই দলকে ৩-০ গোল এগিয়ে দেন রোনালদো। ৩৫ ও ৩৯ মিনিটের দুই গোলের পর ৪৩ মিনিটে হ্যাটট্রিকও পেয়ে যেতে পারতেন রোনালদো, যদি জোয়াও কানসেলোর দারুণ ক্রস থেকে বলটা জালে রাখতে পারতেন।
প্রথমার্ধে এতটাই দাপট দেখিয়েছে পর্তুগাল যে, কোচ ফার্নান্দো সান্তোসের ম্যাচ শেষেও আফসোস রয়ে গেছে, ‘আমি এমন এক কোচ, জিতলে এবং যা অনুশীলন করেছি দল সেভাবে খেলতে পারলেই শুধু সন্তুষ্ট হই। প্রথমার্ধে আরও এক বা দুই গোল করতে পারতাম আমরা। দ্বিতীয়ার্ধে খেলার মান পড়ে গেছে। খেলোয়াড়রা তো যন্ত্র নয়।’ সুইস অধিনায়ক গ্রানিত শাকার অবশ্য ধারণা, প্রথমার্ধেই আরও দুই তিন গোলও করতে পারত পর্তুগাল।
দ্বিতীয়ার্ধে গতি কমে যাওয়া ফুটবলেই আরেক গোল করেছে পর্তুগাল। ৬৮ মিনিটে কানসেলোর গোলের পর খেলার গতি আরও কমেছে। কিছুদিন আগ পর্যন্তও ভ্লাদিমির পেতকোভিচের অধীনে রক্ষণের জন্য বিখ্যাত সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ৪-০ গোলের জয়েই তাই তৃপ্ত হয়েছেন রোনালদোরা। ম্যাচ শেষে যদিও পর্তুগিজ মহাতারকা আরও ভালো কিছুর আশা দেখিয়েছেন, ‘আমাদের যাত্রাপথে খুব গুরুত্বপূর্ণ এক জয়। অনেক গর্ব আর আত্মবিশ্বাস আছে এই দলের। এ দলের অনেক শক্তি আছে বলেই পর্তুগিজদের যা প্রাপ্য সেটা দিতে পারছি—জয় এবং আস্থা রাখতে পারা পারফরম্যান্স। মনে হচ্ছে মৌসুম শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু...এটা তো কেবল শুরু!’