মেসির বর্ষসেরা নিয়ে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ উঠছেই

ফিফা বর্ষসেরা ‘দ্য বেষ্ট’ পুরস্কার হাতে লিওনেল মেসি। ছবি: এএফপি
ফিফা বর্ষসেরা ‘দ্য বেষ্ট’ পুরস্কার হাতে লিওনেল মেসি। ছবি: এএফপি

ফিফা বর্ষসেরা ‘দ্য বেষ্ট’ পুরস্কারের ভোট প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক বেড়েই চলছে। সুদান ও মিসরের পর এবার নিকারাগুয়া ফুটবল থেকেও উঠল প্রশ্ন। দেশটির জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক হুয়ান ব্যারেরার অভিযোগ, বর্ষসেরা পুরস্কারে তিনি ভোট দেননি। কিন্তু ফিফা প্রকাশিত ভোটদাতাদের তালিকায় ব্যারেরার নাম আছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে ভোটে শীর্ষ তিন স্থানের জন্য যথাক্রমে লিওনেল মেসি, সাদিও মানে ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে বেছে নিয়েছেন ব্যারেরা।

বর্ষসেরা খেলোয়াড় বেছে নেওয়ার ছাড়াও বর্ষসেরা কোচ বেছে নিতেও ভোট দিয়েছেন ব্যারেরা। কিন্তু ৩০ বছর বয়সী এ মিডফিল্ডার টুইটারে জানিয়েছেন, তিনি ভোট দেননি, ‘দ্য বেষ্ট ২০১৯ পুরস্কারে আমি কাউকে ভোট দিইনি। তাই আমার ভোট নিয়ে যেকোনো তথ্য মিথ্যা’—টুইট করে জানান ব্যারেরা। ৪৬ পয়েন্ট নিয়ে এবার ফিফা বর্ষসেরা হয়েছেন মেসি। ৩৮ র‌্যাঙ্কিং পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় নেদারল্যান্ডস ও লিভারপুলের তারকা ডিফেন্ডার ভার্জিল ফন ডাইক। পর্তুগিজ তারকা রোনালদো ৩৬ র‌্যাঙ্কিং পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয়। ফিফার বর্ষসেরা পুরস্কারে সমান ২৫ শতাংশ পয়েন্ট থাকে সাংবাদিক, জাতীয় দলের কোচ, অধিনায়ক ও সমর্থকদের কাছে।

ব্যারেরার অভিযোগ নিয়ে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে ফিফা জানিয়েছে, নিকারাগুয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের তরফ থেকে জমা দেওয়া ভোটের কাগজপত্র তারা পুনরায় পরীক্ষা করে দেখেছেন। সেখানে তাদের অফিশিয়াল স্টাম্পের পাশাপাশি সিল-সাক্ষর রয়েছে, ‘ফেডারেশনগুলো ভোটের যেসব কাগজ জমা দিয়েছে আর ফিফা যা প্রকাশ করেছে তা যাচাই করে দেখা হয়েছে...আমরা নিশ্চিত করতে পারি খেলোয়াড়দের সই করা সঠিক ভোট তালিকাই প্রকাশ করা হয়েছে। আমরা নিকারাগুয়ান এফএ-কে বিষয়টি তদন্ত করার কথা বলেছি।’

নিকারাগুয়া দলের ফুটবলার হুয়ান ব্যারেরার টুইট। ছবি: টুইটার

ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির এ বিবৃতির পর বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনা নাটকীয় মোড় নেয়। নিকারাগুয়ান এফএ বিবৃতিতে জানায়, ব্যারেরা ভোট দেননি। ভুল করে তাঁর নাম ও সই ব্যবহার করা হয়েছে যা বছরখানেক আগে থেকেই ফাইলে ছিল। বিবৃতিতে বলা হয়, আসলে ভোট দিয়েছেন নিকারাগুয়ার জাতীয় দলের লেফট ব্যাক ম্যানুয়েল রোজাস। তাঁকে সম্প্রতি জাতীয় দলের অধিনায়ক বানানো হয়েছে। এই ভুলের জন্য দায়ী ব্যক্তিকে বরখাস্ত করার কথাও জানিয়েছে নিকারাগুয়া এফএ। এ ঘটনাকে ‘প্রশাসনিক ভুল’ বলেছে নিকারাগুয়ান এফএ।

এর আগে সুদান জাতীয় দলের কোচ ড্রাভকো লোগারুসিচও ভোট প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁর দাবি, ফিফা বর্ষসেরার এ পুরস্কারে প্রথম পছন্দ হিসেবে ভোট দিয়েছিলেন মোহাম্মদ সালাহকে। কিন্তু পরে জানতে পেরেছেন, তাঁর ভোট পড়েছে লিওনেল মেসির বাক্সে। দুবাইভিত্তিক আল আরাবিয়া টিভি চ্যানেলকে সুদানের কোচ বলেন, ‘প্রথম স্থানে সালাহকে ভোট দিয়েছি, দুইয়ে সাদিও মানে, তিনে কিলিয়ান এমবাপ্পেকে ভোট দিয়েছি। সইয়ের পর ভোটের আবেদনপত্রের একটি ছবিও তুলেছি আমি। কিন্তু তারপর কী ঘটেছে জানি না।’

মিসরের তারকা ফুটবলার আহমদ এল মোহাম্মদির দাবি, সালাহকে ভোট দিলেও তা নিবন্ধিত হয়নি। এ ছাড়া মিসরের অলিম্পিক কোচ শাকি গারিবও জানিয়েছেন তাঁর ভোটও নিবন্ধিত হয়নি। এ বিষয়ে ফিফার ব্যাখ্যা, মিসরের ভোট দেওয়ার ব্যালট ‘বড় হাতের (ক্যাপিটাল লেটার) অক্ষরে লেখা, যার অনুমোদন নেই। ভোটের ফরমেও ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারির সই নেই, যা বাধ্যতামূলক।’