মেসির চোখে করোনা বরং দারুণ 'সুযোগ'

>
সন্তানদের সঙ্গে বাড়িতে সময়টা ভালোই কাটছে মেসির। ছবি: মেসির ইনস্টাগ্রাম
সন্তানদের সঙ্গে বাড়িতে সময়টা ভালোই কাটছে মেসির। ছবি: মেসির ইনস্টাগ্রাম

করোনাভাইরাসের ছোবলের এই সময়ে সম্ভাব্য বিপদকে পাশ কাটানোর ব্যাপারে ভক্তদের উদ্দেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন লিওনেল মেসি।

সব খেলা বন্ধ। কি ফুটবল, কি ক্রিকেট, কি টেনিস বা অন্য খেলা—একে একে সব টুর্নামেন্টই স্থগিত করা হচ্ছে, নয়তো পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিছু কিছু টুর্নামেন্ট তো বাতিলই হয়ে গেছে। করোনাভাইরাস তার কালো থাবা ক্রীড়াজগতে ভালোভাবেই বসিয়েছে।

অবশ্য বিশ্বজুড়ে মানুষের জীবনই যেখানে শঙ্কায়, অর্থনীতিও যেখানে পড়ছে হুমকির মুখে, সেখানে খেলা হলো কি হলো না তা নিয়ে কে আর মাথা ঘামায়! বিপদের এই মুহূর্তে এখন দরকার মানুষের প্রাণ বাঁচানোতে মনোযোগ দেওয়া। জনে জনে সচেতনতা বাড়ানো। করোনাভাইরাসের বিপক্ষে এই লড়াইয়ে নেমেছেন খেলার জগতের তারকারাও। ক্রিকেটে বিরাট কোহলি, ফুটবলে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো বা পল পগবারা সে জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে বেছে নিয়েছেন। একই পথে এবার হেঁটেছেন লিওনেল মেসিও।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আজ এক পোস্টে বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড সবাইকে এই বিপদের সময়ে একে অন্যের পাশে দাঁড়ানোর ও আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। পরামর্শ দিয়েছেন ঘরে থাকার। আর ঘরে থাকার প্রসঙ্গেই বললেন, গতিময় এই জীবনে করোনাভাইরাস বরং ‘সুযোগ’ এনে দিয়েছে, নিজ ঘরে আপনজনের সঙ্গে বেশি কিছু সময় কাটানোর।

ইংল্যান্ড থেকে শুরু করে স্পেন-ইতালি-ফ্রান্স কিংবা জার্মানি, ইউরোপের সব ফুটবল লিগই এখন বন্ধ। করোনাভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতেই এই ব্যবস্থা। মেসিও এখন পরিবার নিয়ে আপাতত স্বেচ্ছা গৃহবন্দীই আছেন। চীনের পর করোনাভাইরাসের দাপট তো এখন ইউরোপেই চলছে, আর মধ্যে ইতালি আর স্পেনেই প্রভাবটা সবচেয়ে বেশি। এখন পর্যন্ত চীন, ইতালি আর ইরানের পর স্পেনেই করোনায় সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছেন। আজ এক দিনেই আট শতাধিক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন, সব মিলিয়ে স্পেনে আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ছাড়িয়েছে, মারা গেছেন ২০০-র কাছাকাছি।

এমন বিপদের সময়ে সতর্কতা হিসেবে নিজ বাড়িতেই কাটছে মেসির সময়। ছেলেদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন—এমন একটি ছবি দিয়ে ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে মেসি লিখেছেন, ‘সবার জন্যই সময়টা খুব কঠিন। যা ঘটছে, তা নিয়ে উদ্বেগেই দিন কাটছে আমাদের। অনেকেই খুব কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। সবচেয়ে কঠিন অবস্থায় আছেন, তাঁদের জায়গায় নিজেদের কল্পনা করে সবাইকে সাহায্য করতে চাই আমরা। কেউ হয়তো নিজেই আক্রান্ত, কারও হয়তো পরিবার বা বন্ধু আক্রান্ত।’ বার্সেলোনা ফরোয়ার্ডের কৃতজ্ঞতা ঝরল এই সময়ে করোনার বিরুদ্ধে লড়তে থাকা ডাক্তারদের জন্য, ‘অনেকেই এই কঠিন সময়ে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে লড়ছেন, হাসপাতালে বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোয় সেবা দিচ্ছেন। সৃষ্টিকর্তা তাঁদের সবাইকে আরও শক্তি দিন।’

কিন্তু শুধু ডাক্তারদের পক্ষে তো আর সবার হয়ে লড়াই করা সম্ভব নয়। করোনাভাইরাসের প্রকোপ থেকে বাঁচতে দরকার সতকর্তা। মেসি সেদিকে জোর দিতে আহ্বান জানিয়েছেন সবাইকে, ‘স্বাস্থ্যই সব সময় সবার প্রথম বিবেচ্য বিষয় হওয়া উচিত। এখন অন্য রকম একটা সময় চলছে। এই সময়ে আমাদের অবশ্যই স্বাস্থ্য সংস্থা আর সরকারি কার্যালয়ের নির্দেশনা মেনে চলা উচিত। একমাত্র সেটা ঠিকঠাকভাবে করলেই আমরা এই ভাইরাসের সঙ্গে ঠিকভাবে লড়তে পারব।’

শেষে সবাইকে পরামর্শ দিলেন বাড়িতে থাকার। সে প্রসঙ্গেই করোনার কারণে পাওয়া ‘সুযোগের’ কথা বললেন মেসি, ‘এখন সময় হয়েছে সবার আরও দায়িত্বশীল হওয়ার। এই সময়টাতে বাড়িতে থাকুন। এটা বরং আপনার জন্য দারুণ সুযোগ ভালোবাসার মানুষদের সঙ্গে সময়টা উপভোগ করার, যে সুযোগটা সব সময় পাওয়া যায় না। সবাইকে আলিঙ্গন। আশা করি শিগগিরই আমরা এই পরিস্থিতিটা কাটিয়ে উঠতে পারব।’