শেষ বাঁশি বাজার পর লিওনেল মেসির মুখে তাকানো যাচ্ছিল না। শুন্য চাহনি বলতে যা বোঝায় তা-ই। লিওন গোরেৎস্কার নিশ্চয়ই ভালো লেগেছে!
লিসবনে কাল রাতের সঙ্গে ছয় বছর আগের বেলো হরিজেন্তের কাগজে-কলমে কোনো মিল নেই। কিন্তু অনুভূতি প্রায় এক। সেই বিশ্বকাপের ব্রাজিল সমর্থকদের জায়গায় বার্সেলোনা সমর্থকদের বসালেই হবে। জার্মানি তবু ৭ গোলের পর আর এগোয়নি। মানে গোল দেয়নি। কাল লিসবনে জার্মানিরই দল বায়ার্ন ছিল আরও নির্মম। বার্সাকে তাই হজম করতে হয় ৮ গোল।
মেসির মুখটা তাই অমন পাংশুটে হওয়াই স্বাভাবিক। তা দেখে বায়ার্ন ভক্তদেরও খারাপ লাগতে পারে। তবে লিওন গোরেৎস্কার কথা আলাদা। বার্সাকে, আরও খোলাসা করে বলতে গেলে মেসিকে এভাবে হারাতে তাঁর মজাই লেগেছে।
গোরেৎস্কা যুব প্রকল্পে থাকতেই মেসি তারকা। অন্য সব ফুটবলারের মতো তাঁর কাছেও তখন আদর্শ ফুটবলারের মধ্যে বার্সার আর্জেন্টাইন এ তারকার থাকার কথা। কিন্তু সেসব বহু পুরোনো কথা। খেলার মাঠে এসব চলে না। কাল ম্যাচের পর বায়ার্ন মিডফিল্ডার যেন এ কথাই বোঝাতে চাইলেন। প্রতিপক্ষ যত বড় ঠিক তত বড় ব্যবধানে হারানোর মজাই আলাদা!
ম্যাচ শেষে গোরেৎস্কাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, মেসিকে এভাবে হারতে দেখায় খারাপ লেগেছে কি না? তাঁর জবাব, ‘না, খারাপ লাগেনি। আসলে মজাই লেগেছে।’ বায়ার্ন এখন সেমিফাইনালে। চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ে অন্যতম ফেবারিট। আনন্দে ভেসে না গিয়ে নিজেদের লক্ষ্যটা ধরে রাখতে চান গোরেৎস্কা। তবে এমন জয়ের রেশ দ্রুত কাটিয়ে ওঠাও কঠিন। গোরেৎস্কা বলেন, ‘ম্যাচ শেষে দ্রুত এসব নিয়ে বলা কঠিন। (এমন জয়) আনন্দ পুরো উপভোগ করতে কয়েক দিন তো লাগবেই। তবে ড্রেসিংরুমে আমরা কথা বলেছি, তিন ধাপের মধ্যে প্রথম ধাপটা পার হলাম।’
বায়ার্নের গোলউৎসবের শুরুটা করেন টমাস মুলার। বার্সার মতো দলের বিপক্ষে বায়ার্ন কীভাবে এত নির্মম ও দাপুটে ফুটবল খেলল, সে কথা বোঝাতে পারেননি মুলার। তবে আনন্দও লুকোতে পারেননি ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা জার্মান মিডফিল্ডার, ‘এটা বোঝানো কঠিন। সবাই মিলে কঠোর পরিশ্রম করেছি। তাড়নাটা ছিল। তাই আমাদের হারানো কঠিন। তবে আজ (কাল) খুব মজা পেয়েছি। আমাদের খেলার যে ধরন তাতে কার মুখোমুখি হচ্ছি এটা কোনো ব্যাপার না। কেউ ড্রিবল করলেও সমস্যা নেই। বলের দখল নেওয়ার পর আক্রমণভাগে যথেষ্ট প্রতিভা আছে। তবে আজ (কাল) আমরা খুব খুশি।’
২০১৪ বিশ্বকাপ জিতেছিল জার্মানি। সেমিফাইনালে ব্রাজিলকে ৭-১ গোলে হারিয়ে এসেছিল তারা। এমন বড় টুর্নামেন্টে বড় জয় পাওয়ার পরের ম্যাচে কাজটা যে কঠিন হয়ে ওঠে মুলারের সে অভিজ্ঞতা আছে। খুশি হলেও মাটিতেই পা রাখছেন জার্মান ফরোয়ার্ড, ‘টুর্নামেন্টে এমন পরিস্থিতির ব্যাপারে জানা আছে। বড় জয় পাওয়ার পর বেশিরভাগ সময়ই কিন্তু কাজটা কঠিন হয়ে ওঠে। তাই মনোযোগ ধরে রাখতে হবে।’