>চেচনিয়ার নেতা রমজান কাদিরভের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার অনেক অভিযোগ আছে। এই মুহূর্তে মুসলিম বিশ্বের জনপ্রিয়তম ফুটবলার সালাহর সঙ্গে ছবিটাকে নিজের জনপ্রিয়তা প্রমাণের লক্ষ্যেই ব্যবহার করতে পারেন কাদিরভ, শঙ্কা এমনটিই
তাঁর ফিটনেস নিয়ে সংশয় এখনো কাটেনি। এই গুঞ্জন ভাসে, উরুগুয়ের বিপক্ষে ১৫ জুন বিশ্বকাপে মিসরের প্রথম ম্যাচেই খেলবেন মোহামেদ সালাহ, তো পরমুহূর্তেই শোনা যায়, তেমনটা না-ও হতে পারে। সর্বশেষ খবর, তাতে মিসর ও সালাহ-ভক্তদের শঙ্কা আরও বাড়ারই কথা। উরুগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচের বাকি আর দুই দিন, অথচ গত সোমবার পর্যন্তও দলের সঙ্গে অনুশীলনে যোগ দেওয়ার মতো অবস্থায়ই পৌঁছাতে পারেননি কাঁধের চোটের সঙ্গে লড়তে থাকা সালাহ!
তাঁকে ঘিরে সংশয় আছে, এর মধ্যে নতুন করে সমালোচনায়ও জড়িয়ে পড়েছেন সদ্য সমাপ্ত মৌসুমে লিভারপুলের হয়ে আলো ছড়ানো ২৫ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। রাশিয়ায় মিসরের বেস ক্যাম্প চেচনিয়ার রাজধানী গ্রোজনিতে, কট্টরপন্থী যে অঞ্চলে দলের বেস ক্যাম্প করা নিয়ে মিসর ও ফিফার সমালোচনা গত ফেব্রুয়ারি থেকেই হচ্ছে। এর মধ্যে পরশু সালাহর একটা কাজ সমালোচনা আরও উসকে দিয়েছে। গত রোববার সালাহ দেখা করেছেন চেচনিয়ার নেতা রমজান কাদিরভের সঙ্গে, যাঁর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার অনেক অভিযোগ আছে। এই মুহূর্তে মুসলিম বিশ্বের জনপ্রিয়তম ফুটবলার সালাহর সঙ্গে ছবিটাকে নিজের জনপ্রিয়তা প্রমাণের লক্ষ্যেই ব্যবহার করতে পারেন কাদিরভ, শঙ্কা এমনটিই।
কাদিরভের সঙ্গে সালাহর দেখা হওয়ার নেপথ্যের গল্পটাও অন্য রকম। গ্রোজনিভিত্তিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন, গত রোববার সালাহ হোটেলে নিজের কক্ষে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। এমন সময় তাঁর কাছে খবর আসে, হোটেলের লবিতে খুব গুরুত্বপূর্ণ কেউ একজন তাঁর জন্য অপেক্ষা করছেন। নিচে নামার পর সালাহর সঙ্গে দেখা হয় কাদিরভের। চেচেন নেতা সালাহকে অনুরোধ করেন তাঁর সঙ্গে গাড়িতে করে মিসরের বাকি দলের অনুশীলন যে স্টেডিয়ামে হচ্ছে, সেখানে যেতে। স্টেডিয়ামটা আবার কাদিরভের বাবার নামেই!
রাশিয়া থেকে আলাদা হতে চাওয়া চেচনিয়া নব্বইয়ের দশকে দুবার যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল। ২০০৪ সালে সেই চেচনিয়ার দায়িত্ব নেওয়ার পর অতিরক্ষণাত্মক নিয়মকানুন জারি করেন কাদিরভ। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা আওয়াজ বন্ধ করতে সামরিক বাহিনীকেও ব্যবহারের অভিযোগ আছে। বিচারবহির্ভূত হত্যা তো আছেই। সেই কাদিরভই এখন সালাহর সঙ্গে ছবিটিকে মুসলিম বিশ্বে নিজের ভাবমূর্তি বাড়াতে ব্যবহার করতে পারেন বলে শঙ্কা দেখা দিচ্ছে। চেচনিয়ায় বিশ্বকাপের কোনো দলের বেস ক্যাম্প কেন নেওয়া হলো, তা নিয়েই তাই প্রশ্ন উঠছে। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার উপপরিচালক র্যাচেল ডেনবারও বলছিলেন, ‘চেচনিয়ায় একটা দলের বিশ্বকাপ ক্যাম্পকে নিজের ভাবমূর্তি বাড়াতে ব্যবহার করছে কাদিরভ। এটা শতভাগ অনুমিতই ছিল।’