গত ২৩ জুন বিকেলে আবাহনী লিমিটেডের মাঠে অনুশীলনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন দানিয়েল কলিনদ্রেস। অনুশীলনে নামার আগে খবর আসে তাঁর অসুস্থ মা আর নেই।
দৌড়ে মাঠ থেকে বাসায় চলে যান। ততক্ষণে দলের মধ্যে খবরটা পৌঁছে যায়। মাকে শেষবারের মতো বিদায় জানাতে কোস্টারিকায় আর যাননি কলিনদ্রেস।
মা হারানোর শোকের পর আজই প্রথম প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ম্যাচে খেলতে নেমেছিলেন রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলা এই ফরোয়ার্ড। সতীর্থ ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার দরিয়েলতন গোমেজকে দিয়ে দুটি গোল করিয়ে দলের জয়ে বড় অবদানই রেখেছেন কলিনদ্রেস।
আজ দরিয়েলতন যেন ‘হেড মাস্টার’! আবাহনী লিমিটেডের খেলা নিয়মিত দেখে থাকলে এ কথায় হয়তো ভুল ধরার লোক পাওয়া যাবে না। প্রতিপক্ষের বক্সের মধ্যে বল বাতাসে ভাসলে সেটাতে মাথা লাগাতে জুড়ি নেই ব্রাজিলিয়ান এই স্ট্রাইকারের।
আজ কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আবাহনীকে বাঁচিয়ে দিয়েছে দরিয়েলতনের মাথা। চট্টগ্রাম আবাহনীর বিপক্ষে দুবার পিছিয়ে পড়েও দরিয়েলতনের জোড়া গোলের কল্যাণে ৩-২ ব্যবধানে জিতে মাঠ ছেড়েছে আবাহনী।
অবশ্য ২-১ গোলে এগিয়ে থাকা অবস্থায় ৫৭ মিনিটে ১০ জনের দল হয়ে যায় চট্টগ্রাম আবাহনী। বাকি সময় এক খেলোয়াড় কম নিয়ে খেলে আর কুলিয়ে উঠতে পারেনি মারুফুল হকের দল। এমন দিনে আবাহনী জয়সূচক গোলটিও কি না পেয়েছে ভাগ্যে।
এই বছর জানুয়ারিতে লিগের প্রথম পর্বে আবাহনীকে ৩-২ গোলে হারিয়েছিল চট্টগ্রাম আবাহনী। লিগের দ্বিতীয় পর্বে ম্যাচের ফলাফল গেছে উল্টে। ৩২ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে আফগানিস্তানের মিডফিল্ডার ওমিদ পোপালজাইয়ের ফ্রি–কিক থেকে করা গোলে এগিয়ে যায় চট্টগ্রাম আবাহনী।
এ গোলে ওমিদের কৃতিত্বের চেয়ে গোলকিপার শহীদুলের দায়ই বেশি। দুই মিনিট পরই কলিনদ্রেসের ক্রস থেকে হেডে গোল করেন দরিয়েলতন। ৪০ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে চট্টগ্রাম আবাহনীকে আবার এগিয়ে নেন পিটার থ্যাঙ্কগড।
৫৭ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন চট্টগ্রাম আবাহনীর নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড অগাস্টিন অগবানে। মারিও লেমোসের দলের সামনে তখন ১০ জনের প্রতিপক্ষ দল।
৭১ মিনিটে কলিনদ্রেসের কর্নার থেকে হেডে গোল করে আবাহনীকে সমতায় ফেরান দরিয়েলতন। ৭৮ মিনিটে আবাহনীর জয়সূচক গোলটি এসেছে ভাগ্যে। লেফটব্যাক নুরুল নাঈমের ক্রস চট্টগ্রাম আবাহনীর শাখওয়াত হোসেনের মাথায় লেগে পোস্টে চলে যায়।
দিনের অন্য ম্যাচে মুন্সিগঞ্জের ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে চমক দেখিয়েছে স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘ। টেবিলের তলানিতে থাকা দলটি ২-১ গোলে হারিয়ে দিয়েছে টানা পাঁচ জয়ে উড়তে থাকা সাইফকে।
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধেই হয়েছে তিনটি গোল। ৫৮ মিনিটে সাইফকে এগিয়ে নেন এমেকা ওগবুগ। ৬৭ মিনিটে স্বাধীনতাকে সমতায় ফেরান জিল্লুর রহমান। ম্যাচের শেষের দিকে স্বাধীনতার জয়সূচক গোলটি সার্বিয়ার মিডফিল্ডার ইভান মারিচের। এর আগে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছেড়েছেন সাইফের অধিনায়ক ও সেন্টারব্যাক রিয়াদুল হাসান।
দিনের আরেক ম্যাচে গোপালগঞ্জ শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত উত্তর বারিধারা ও রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটির ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছে। আজকের জয়ের পর ১৭ ম্যাচে ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে আবাহনী।
সমান ম্যাচে ৪৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে বসুন্ধরা কিংস। ৩০ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে সাইফ। পঞ্চম স্থানে থাকা চট্টগ্রাম আবাহনীর পয়েন্ট ২৬। ১৩ পয়েন্ট নিয়ে নবম স্থানে বারিধারা। তাদের চেয়ে ২ পয়েন্ট কম নিয়ে ১১ তম অবস্থানে রহমতগঞ্জ। তলানিতে থাকা স্বাধীনতার পয়েন্ট ৯।