গত দুই দিন সাবেক স্পেন কোচ হুলেন লোপেতেগির জীবনে ঝড়ই বয়ে গেছে যেন। বিশ্বকাপে স্পেনের কোচ হিসেবে থাকার কথা ছিল এখন তাঁর, তা না হয়ে রিয়াল মাদ্রিদের কোচ হওয়ার সুযোগ লুফে নেওয়ার ‘অপরাধে’ বিশ্বকাপের আগের দিন স্পেন দলের কোচের পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে তাঁকে। এত কষ্ট নাকি মায়ের মৃত্যুর পর অন্য কোনো ঘটনাতে পাননি লোপেতেগি।
গতকালই আনুষ্ঠানিকভাবে রিয়ালের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে লোপেতেগিকে। ওই মুহূর্তেই জানালেন নিজের অনুভূতির কথা, ‘মায়ের মৃত্যুর পরে গতকালই (পরশু) আমার জীবনের সবচেয়ে কষ্টের দিন ছিল, কিন্তু আজকে আমার জীবনের সবচেয়ে খুশির দিন। আমি বেশি আবেগপ্রবণ হতে চাই না, আমি শুধু রিয়াল সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজকে ধন্যবাদ জানাতে চাই আমার প্রতি ভরসা রাখার জন্য। আমি জানি কোন ক্লাবে যোগ দিতে যাচ্ছি, এই ক্লাবের সম্মান অক্ষুণ্ন রাখার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাব। দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে নিয়ে নতুন করে সাফল্যের নতুন শিখরে আরোহণ করতে চাই আমি!’
সংবাদ সম্মেলনে অবধারিতভাবেই স্পেন দল থেকে তাঁর ছাঁটাইয়ের ব্যাপারে প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে লোপেতেগি বলেন, ‘আমার ভালো লাগত যদি পুরো বিষয়টায় রুবিয়ালেস (স্পেন ফেডারেশনের সভাপতি) অন্যভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাত। খবরটা (রিয়াল মাদ্রিদের কোচ হওয়ার বিষয়টা) সম্পর্কে শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার পরই আমি রুবিয়ালেসকেই সবার আগে জানিয়েছি বিষয়টা। সবাইকে জানানোর জন্য একটা সংবাদ সম্মেলন করারও পরিকল্পনা করেছিলাম আমি। কিন্তু রুবিয়ালেস তখন আমাদের সঙ্গে (রাশিয়ায়) ছিল না, যে কারণে তার জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে আমার।’
‘এই চুক্তির (রিয়ালের সঙ্গে) বিষয়টা বিশ্বকাপ শুরুর আগেই চূড়ান্ত করে ফেলতে হতো, পরে না। স্পেনের প্রতি আনুগত্য দেখিয়েই আমি পুরো বিষয়টা সম্পর্কেই পরিষ্কার থাকতে চেয়েছি, তাই এ ব্যাপারটা বিশ্বকাপের আগে প্রকাশ করে দেওয়া হয়েছে। আমার খেলোয়াড়েরাও এ ব্যাপারটা সম্পর্কে জানত, তারা ব্যাপারটা অনেক পেশাদারি চোখেই দেখেছে, আমার অধীনে এরপর ভালোভাবে অনুশীলনও করেছে।’
যা-ই হোক না কেন, আর দশজন স্পেন সমর্থকের মতো লোপেতেগিও আগ্রহভরে বিশ্বকাপ দেখবেন, দেখবেন স্পেনের ম্যাচগুলো, ‘কোনো সন্দেহ ছাড়াই আমি কাল (আজ) স্পেনের ম্যাচ দেখব। আর দশটা স্প্যানিশ লোকের মতো আমিও দলের জন্য গলা ফাটিয়ে সমর্থন জানাব। এত কিছুর পরেও বিশ্বকাপটা স্পেনেই আসবে—এ আমার দৃঢ় বিশ্বাস,’ লোপেতেগির অকপট স্বীকারোক্তি!