অভাগা যেদিকে চায়, সাগর শুকায়ে যায়—মধ্যযুগের বাঙালি কবি মুকন্দরামের এই উক্তি খেটে যাচ্ছে বার্সেলোনায়।
করোনাভাইরাসের প্রভাব চলছে এক বছর ধরে। এর মধ্যে অনেক চেষ্টা করেও ফাঁড়া কাটাতে পারেনি কাতালান ক্লাবটি। লিওনেল মেসি ক্লাব ছাড়তে চেয়েছিলেন। পরে সিদ্ধান্ত পাল্টালেও মেসি যে সুখী, সে কথা কেউ জোর দিয়ে বলতে পারে না।
দ্রুত ক্লাব সভাপতি পাল্টাতে পারলে হয়তো পরিস্থিতি পাল্টানো যেত। কিন্তু বার্সায় তো লেগেছে শনির দশা। একে প্রকট আর্থিক সংকট, এর মধ্যে সভাপতি নির্বাচনও পিছিয়ে নিতে হলো প্রায় দুই মাস।
জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউ সভাপতি পদে ইস্তফা দেওয়ার পর সিদ্ধান্ত হয়েছিল, ২৪ জানুয়ারি নির্বাচনে বেছে নেওয়া হবে নতুন সভাপতি।
এই বার্তোমেউয়ের সঙ্গেই বনিবনা হচ্ছিল না মেসির। ক্যারিয়ারের শেষ অধ্যায়ে এসে সবকিছু শেষবারের মতো গুছিয়ে নিতে মেসিও ছিলেন নতুন সভাপতির অপেক্ষায়।
কিন্তু করোনার মধ্যে লোকের ভোট দেওয়ার ঝুঁকির কথা ভেবে কাতালান ক্লাবটির সভাপতি নির্বাচন পিছিয়ে দিয়েছে কাতালুনিয়া প্রশাসন। ৭ মার্চ সভাপতি নির্বাচনের নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
বার্সার বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রধান কার্লেস তুসকেতস কাল ক্যাম্প ন্যু অফিসে তিন সভাপতি প্রার্থী হুয়ান লাপোর্তা, ভিক্টর ফন্ত ও টনি ফ্রেইসাকে নিয়ে বৈঠকে বসেন। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী চলা এ বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় আগামী ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে সভাপতি নির্বাচন।
আপাতত মৌখিকভাবেই নেওয়া হয়েছে এ সিদ্ধান্ত। কাতালুনিয়া প্রশাসন করোনার যে নতুন বিধিমালা দিয়েছে, তাতে ভোটদান কার্যক্রম বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। আর তাই কাল দুপুরে ক্লাবটির সভাপতি নির্বাচন পেছানো হয়। কাল রাতে বৈঠকের পর জানানো হয় নতুন তারিখ।
জরুরি কাজ, শিক্ষা ও চিকিৎসাসেবা ছাড়া ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত কেউ ঘর থেকে বের হতে পারবে না, কাতালুনিয়া প্রশাসনের এটাই নতুন করোনা বিধিমালা।
নির্বাচনের তারিখের সঙ্গে এই নতুন বিধি সংঘাতপূর্ণ হওয়ায় নতুন তারিখ ঘোষণা করতে বাধ্য হয় বার্সা। প্রায় ৪৫ শতাংশ ভোটার কাতালুনিয়ার, এ ছাড়া প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার ক্লাব সদস্য ভোট দেবেন এ নির্বাচনে।
কাতালুনিয়া ছাড়াও স্পেনের অন্যান্য জায়গা মিলিয়ে বসানো হবে ১০টি পোলিং স্টেশন। সভাপতি নির্বাচনে লাপোর্তো বাকিদের চেয়ে এগিয়ে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম।
চূড়ান্ত মনোনয়ন পেতে যে নির্দিষ্টসংখ্যক ভোটের দরকার হয়, তার চেয়ে অনেক বেশি ভোট পেয়েছেন লাপোর্তো (৯,৬২৫ ভোট)। বার্সা সভাপতি পদে তিনি ফিরতে চান দ্বিতীয় মেয়াদে। তাঁর দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ভিক্টর ফন্ত ও টনি ফ্রেইসা।