>অর্থনৈতিক অবরোধের কারণ দেখিয়ে ইরানি দলকে বুট দিচ্ছে না ক্রীড়াসামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান নাইকি। ইরান এটিকে নিচ্ছে অনুপ্রেরণা হিসেবেই।
আমেরিকার শত্রু হওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়। বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের যেকোনো মানুষেরই সে কথা অজানা নয়। তবে জাতীয়তাবাদ ও আত্মমর্যাদার প্রশ্নে হাতে গোনা যে দু-একটি রাষ্ট্র বিশ্বে আমেরিকার সঙ্গে কথার পিঠে কথা বলার সাহস দেখায়, তাদের একটি ইরান। তবে পরমাণু বিষয়ে এই দুই দেশের পুরোনো বৈরিতা শেষ পর্যন্ত ফুটবল মাঠ পর্যন্ত গড়িয়েছে। বিশ্বকাপের দুদিন বাকি থাকতে আমেরিকার ক্রীড়াসামগ্রী প্রস্তুতকারী সংস্থা নাইকি জানিয়েছে, তারা ইরান ফুটবল দলকে বুট সরবরাহ করছে না। এমন হঠকারী সিদ্ধান্তও যে ফুটবল মাঠের যুদ্ধে ইরানকে কাবু করতে পারবে না, সেই হুঙ্কারই শোনা গেল ইরানের পর্তুগিজ কোচ কার্লোস কুইরোজের কণ্ঠে।
তিনি জানিয়েছেন, আমেরিকার ক্রীড়াসামগ্রী প্রস্তুতকারী সংস্থা নাইকির এমন বিদঘুটে আচরণ নিয়ে ভাবার সময় নেই বলেই মনে করছেন ইরানের ফুটবল খেলোয়াড়েরা। ইতিমধ্যে রাশিয়ার স্থানীয় দোকান থেকে নিজেদের প্রয়োজনীয় ক্রীড়াসামগ্রী কেনার কাজটি সেরে নিয়েছেন তাঁরা। আর নিজেদের মধ্যেও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন প্রত্যেক খেলোয়াড়। ইরানের কোচ জানিয়েছেন, ‘এটা আমাদের জন্য বরং অনুপ্রেরণা হিসেবেই কাজ করছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘তাদের উচিত এমন অদ্ভুত আচরণের জন্য তাদের কাছে ক্ষমা চাওয়া। এমন আচরণ তো হাস্যকর বটেই, অপ্রয়োজনীয়ও ছিল।’
জি সেভেন সম্মেলনে এবার একটা প্রতীকী ছবি ছিল, ট্রাম্প টেবিলের একদিকে বসে আছে, আর বাকি বিশ্বনেতারা আরেক দিকে। বন্ধুদেশগুলোকেই এবার ট্রাম্প যেভাবে হুমকি-ধমকি দিয়েছেন, তাহলে শত্রুদেশগুলোর সঙ্গে বৈরিতা যে ফুটবল মাঠ পর্যন্ত গড়াবে, কে ভাবতে পেরেছিল সেটি। তবে নাইকির এমন নিন্দনীয় কাজের পর প্রস্তুতি কেমন হচ্ছে ইরান দলের!
বিশ্বকাপে ইরানকে গ্রুপ পর্বে লড়তে হবে স্পেন, পর্তুগাল আর মরক্কোর সঙ্গে। এ অভিযানে প্রথম প্রতিপক্ষ মরক্কো। বিশ্বকাপের আগে গ্রিস আর কসোভোর সঙ্গে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ বাতিল হওয়ায় প্রস্তুতিতেও হয়তো ঘাটতি থেকে গেছে তাদের। ইরানের কোচ মরক্কোর সঙ্গে ম্যাচের আগে নিজেদের প্রস্তুতি নিয়ে বলেন, ‘মরক্কোকে চমকে দেওয়ার সামর্থ্য আছে আমাদের। তাদের দল সম্বন্ধে ভালো ধারণা আছে। আর আশা করছি আমাদের সম্পর্কে তারা খুব কমই জানে।’
গত ব্রাজিল বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার সঙ্গে অতিরিক্ত মিনিটে মেসির গোলে হেরে গেলেও সেবার তারা কাউকে ছেড়ে কথা বলেনি। আর তাই কুইরোজও থেকে গেছেন ইরানের কোচ হিসেবে। কে জানে হয়তো ইরানের জাতিগত ঐতিহ্য আর খেলোয়াড়দের লড়াকু মনোভাবের জন্যই। এবার ফুটবল মাঠে ফুটবলের বাইরের শক্তিকেও যে হারাতে হবে তাদের। রাশিয়া বিশ্বকাপের প্রথম টিকিট পাওয়া দল ইরান এখন কতক্ষণ নিজেদের যুদ্ধ চালিয়ে যায়, তা জানতে চোখ রাখতে হবে তাদের ম্যাচে।