উয়েফা সভাপতি আলেক্সান্দর সেফেরিন।
উয়েফা সভাপতি আলেক্সান্দর সেফেরিন।

‘মনে হচ্ছিল কেউ ওয়াশিং মেশিনে ঢুকিয়ে দিয়েছে’

আলেক্সান্দর সেফেরিন ভয়ংকর খেপেছেন। ইউরোপিয়ান সুপার লিগ খেলতে চেয়ে ইউরোপের ১২ পরাশক্তি যে ধাক্কা দিতে চেয়েছিল, এর প্রতিশোধ নিতে চান উয়েফা সভাপতি। এরই মধ্যে সমর্থক, খেলোয়াড়, কোচ ও নীতিনির্ধারকদের প্রশ্নের মুখে ‘কোমা’য় চলে গেছে সুপার লিগ প্রকল্প। এতেই সন্তুষ্ট হচ্ছেন না সেফেরিন। এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, এভাবে ফুটবল বিশ্বের ‘শান্তি’ নষ্ট করায় সব দলকে শাস্তি দেওয়া হবে।

শাস্তিতে অবশ্য রকমফের থাকবে। ১২ দলের মধ্যে সবার আগে নাম কাটিয়ে নিয়েছে ছয় ইংলিশ ক্লাব। ওদিকে এখনো গোঁয়ার্তুমি দেখিয়ে যাচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা ও জুভেন্টাস। এর মধ্যে জুভেন্টাস সভাপতি আন্দ্রেয়া আনেয়েল্লির সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক সেফেরিনের। এত কাছের এক লোকের এমন বিশ্বাসঘাতকতা মানতেই পারছেন না সেফেরিন। জুভেন্টাস সভাপতির কারণে নাকি একপর্যায়ে তাঁর মনে হচ্ছিল যে ওয়াশিং মেশিনের ভেতরে ঘুরপাক খাচ্ছেন তিনি!

রিয়াল সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজের ওপর ক্ষিপ্ত সেফেরিন।

ইংলিশ দৈনিক ডেইলি মেইলের সঙ্গে বিদ্রোহী লিগ নিয়ে খোলামেলা আলাপ করেছেন সেফেরিন। সেখানে ইংলিশ ক্লাবগুলোর প্রতি মমতা দেখিয়েছেন উয়েফার প্রধান ব্যক্তি, ‘ইংলিশ ক্লাবগুলোর সঙ্গে অন্য ছয় ক্লাবের পরিষ্কার পার্থক্য আছে। ওরা সবার আগে নাম সরিয়ে নিয়েছে, ভুল স্বীকার করেছে। “আমি ভুল” এটা বলতেও মহত্ত্ব লাগে।’

সেফেরিনের চোখে অতীত হয়ে যাওয়া বিদ্রোহী লিগের সেই ১২ দলকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথমে আছে ইংলিশ ছয় ক্লাব। দ্বিতীয় ভাগে আতলেতিকো মাদ্রিদ-ইন্টার মিলান-এসি মিলান। আর তৃতীয় ভাগ হলো রিয়াল-বার্সেলোনা-জুভেন্টাস।

এই তিন ক্লাবকে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এভাবে, ‘এরপর আছে অন্যরা, যাদের কাছে দুনিয়াটা সমতল। তারা ভাবে, সুপার লিগ এখনো বেঁচে আছে।’ তবে শাস্তি সবাইকে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন উয়েফা প্রধান, ‘সবাইকেই ভুগতে হবে। কাকে কী রকম ভুগতে হবে, সেটা পরে দেখা যাবে।’

আন্দ্রেয়া আনেয়েল্লি মহা বিপদে পড়েছেন।

এখনো সুপার লিগ নিয়ে কথা বলে যাচ্ছেন পেরেজ। এ নিয়ে পেরেজকে বেশ খোঁচা দিয়েছেন সেফেরিন। তবে ব্যক্তিগতভাবে তাঁর রাগটা আন্দ্রেয়া আনেয়েল্লির ওপর। কাছের লোক হয়েও আনেয়েল্লি তাঁকে কতটা ভুগিয়েছেন, সেটাই জানালেন সেফেরিন, ‘খুবই চাপে ছিলাম। আমার মনে হয়েছিল কেউ আমাকে ওয়াশিং মেশিনে ঢুকিয়ে দিয়েছে। শনিবারে, আমি দেশ থেকে আট ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে সুইজারল্যান্ডে গিয়েছি। আমি চ্যাম্পিয়নস লিগের পুনর্গঠন নিয়ে বক্তব্য প্রস্তুত করছিলাম, অন্য সবকিছু নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম।’

আনেয়েল্লিকে কেন ’সাপ’ বলেছিলেন সেটাও জানালেন, ’আমি এমনকি আনেয়েল্লিকে ধন্যবাদ দেওয়ার কথা ভাবছিলাম। আমাকে আমার বক্তব্য চারবার বদলাতে হয়েছে। আমাকে না বলে তারা সবকিছু ঠিক করছিল। ওই লোক (আনেয়েল্লি) আমাকে মিথ্যা বলেছে, “এটা সত্যি না, এটা সত্যি না...” শেষ পর্যন্ত তাই হয়েছে এবং আমাকে মানুষের সামনে বলতে হয়েছে কী হলো।’