নেইমারের একটা ব্যালন ডি’অর না জিততে পারার আক্ষেপ পুরো ক্যারিয়ারেরই সঙ্গী
নেইমারের একটা ব্যালন ডি’অর না জিততে পারার আক্ষেপ পুরো ক্যারিয়ারেরই সঙ্গী

‘ভেবেছিলাম নেইমার এত দিনে একটা ব্যালন ডি’অর জিতবে’

তাঁর বয়স ৩০ পেরিয়ে গেছে, প্রতিভায় তিনি বিশ্বসেরাদের সারির ওপরের দিকে। অথচ এত বছরেও নেইমারের কখনো ব্যালন ডি’অর জেতা হলো না। নেইমার আর ব্রাজিল ভক্তদের অনেক বড় হতাশা সম্ভবত এটি!

শুধু নেইমার আর ব্রাজিলের ভক্তই কেন, নেইমারকে প্রতিদিন অনুশীলনে খুব কাছ থেকে দেখা সতীর্থদেরও কারও কারও যেন এটি বিশ্বাস হচ্ছে না। যে তালিকায় আসছে পিএসজির স্প্যানিশ মিডফিল্ডার আন্দের এরেরার নাম। নেইমারকে বিশ্বের সেরা পাঁচ ফুটবলারের একজন জানিয়ে এরেরাও বলছেন, তিনি ভেবেছিলেন, এত দিনে নেইমার অন্তত একটি ব্যালন ডি’অর জিতবেন।

আপাতত সঙ্গিনীকে নিয়ে ছুটিতে আছেন এরেরা

একদিক থেকে নেইমারের দুর্ভাগ্যই, তিনি এমন সময়ে ফুটবলে এসেছেন, যখন বিশ্ব ফুটবল মেতে ছিল লিওনেল মেসি আর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর দ্বৈরথে। সান্তোসে আলো ছড়িয়ে বিস্ময়বালক উপাধি পেয়েছিলেন, সেখান থেকে ২০১৩ সালে বার্সেলোনায় যাওয়ার পর ইউরোপের নজরে পড়েছেন। আর বিশ্ব ফুটবলের প্রাণকেন্দ্র তো ইউরোপই!

বার্সেলোনায় নেইমার আলো ছড়িয়েছেন, মুগ্ধতা কুড়িয়েছেন। কিন্তু অতটুকুই! অন্য কোনো যুগে হলে এত দিনে হয়তো এক-দুটি ব্যালন ডি’অর জেতা হয়েই যেত, কিন্তু মেসি-রোনালদোর যুগে ব্যালন ডি’অরের তালিকায় তৃতীয় হওয়াই নেইমারের এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ অর্জন।

বয়স ৩০ পেরিয়ে গেছে, আর কখনো কি ব্যালন ডি’অর জেতা হবে নেইমারের? প্রশ্নটা ভাবায় নেইমার ভক্তদের, ব্রাজিল ভক্তদেরও। নেইমারের নিজেরও যে এ নিয়ে হতাশা কাজ করে, তা অনুমান করে বলে দেওয়াই যায়।

পিএসজিতে এরেরার সঙ্গী-সাথীদের দিকে তাকান, যেন তারকারাজি! এমবাপ্পে থাকলে পূর্ণতা পেত ছবিটা

তবে পিএসজিতে নেইমারের সতীর্থ এরেরার মনে হচ্ছে, এখনো সময় শেষ হয়ে যায়নি নেইমারের। স্প্যানিশ দৈনিক এএসে সাক্ষাৎকারে এরেরার কথা, ‘আমি ভেবেছিলাম, নেইমার এত দিনে একটা ব্যালন ডি’অর জিতবে। তবে এখনো সে সম্ভাবনা শেষ হয়ে গেছে, তা বলছি না। ওর সঙ্গে থাকা, খেলতে পারাই আনন্দের।’

কতটা আনন্দের, সেটিও ব্যাখ্যা করেছেন এরেরা। নেইমারের হাসিখুশি স্বভাবের কারণে এমনিতে যে কারও সঙ্গে তাঁর সহজেই বনে যায় বলে সবার অনুমান। এরেরার কথায়ও সেটি বোঝা যায়, ‘ওর সঙ্গে আমার সম্পর্কটা দারুণ বন্ধুত্বপূর্ণ। সতীর্থ হিসেবে ও অসাধারণ, আর ফুটবলার হিসেবে বিশ্বের সেরা পাঁচের একজন।’ যদিও এই ‘বন্ধু’ নেইমারের সঙ্গে এরেরা আর কত দিন খেলতে পারবেন, তা নিয়ে সংশয় আছে। এ মৌসুমে যে নেইমারকে পিএসজির বিক্রি করে দিতে চাওয়ার গুঞ্জন বেশ আওয়াজ পাচ্ছে!

তবে নেইমারের যখন এ অবস্থা, আরেকজন পিএসজিতে যেন ‘সিংহাসন’ পেয়ে গেছেন—কিলিয়ান এমবাপ্পে! পিএসজির সঙ্গে চুক্তি শেষে এ মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদে চলে যাচ্ছেন ফরাসি ফরোয়ার্ড, এমন গুঞ্জন পুরো এক বছর বাজার মাতিয়ে রেখেছিল।

আগামী মৌসুমে পিএসজিতে এই ত্রয়ী আর থাকবে?

কিন্তু শেষ পর্যন্ত নতুন করে তিন বছরের চুক্তিতে পিএসজিতেই থেকে গেছেন এমবাপ্পে। এর পেছনে কেউ দেখছেন পিএসজির চোখধাঁধানো অঙ্কের বেতন-বোনাসের অবদান, আবার কেউ বলছেন, চড়া বেতনের পাশাপাশি পিএসজির ক্রীড়া প্রকল্পে এমবাপ্পের সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েই তাঁকে থাকতে রাজি করিয়েছে পিএসজি।

ভেতরের কারণ যা-ই হোক, এরেরা তো আর সেসব বলবেন না! সাক্ষাৎকারে এমবাপ্পেকে রিয়ালে না গিয়ে পিএসজিতে থেকে যাওয়া নিয়েও যখন প্রশ্ন হলো, স্প্যানিশ মিডফিল্ডারের উত্তরটা হলো সহজ।

যদিও উত্তরটাতে রিয়াল মাদ্রিদের উদ্দেশ্যে একটা প্রচ্ছন্ন খোঁচাও থাকল, ‘রিয়াল মাদ্রিদে ও ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়দের একজন হতে পারত, সেখানে খেলতে একটা বাড়তি নিরাপত্তা তো সব সময় আগলেই রাখে খেলোয়াড়দের। তবে পিএসজিতে ও ক্লাবের ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড় হতে পারবে, নিজের শহরের ক্লাবে নতুন ইতিহাস লেখার সুযোগ পাবে। বার্সেলোনায় আনসু ফাতির যে সুযোগ আছে। বার্সেলোনাই ওর জীবন, (প্যারিসে) কিলিয়ানের জন্যও ব্যাপারটা একই।’