ব্রাজিল শিবিরে এখন স্বস্তির সুবাতাস। ২০২২ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের শুরুটা হয়েছে একদম মনের মতো। নেইমার, কুতিনিও, ফিরমিনো, মার্কিনিওসের মতো পোড় খাওয়া খেলোয়াড়েরা তো আছেনই, দগলাস লুইজ, রেনান লোদি বা রদ্রিগোর মতো অপেক্ষাকৃত তরুণেরাও গত ম্যাচে দেখিয়েছেন, সুযোগ পেলে তারাও মাত করে দিতে পারেন। উদ্যমী এই দল এবার মুখোমুখি হচ্ছে পেরুর। রিকার্দো গারেকার দলের বিপক্ষে আগামীকাল ভোর ছয়টায় মাঠে নামবে সেলেসাওরা।
ইতিহাস বলে, পেরুর রাজধানী লিমার মাঠে জয় পেতে ব্রাজিলকে সব সময়ই ঘাম ঝরাতে হয়। এই মাঠে সর্বশেষ চারবার খেলতে গিয়ে ব্রাজিল জিতেছে দুবার, ড্র করেছে দুবার। শেষ ম্যাচটা ব্রাজিল জিতেছে। আর সেটি সুখস্মৃতি হয়েই আছে নেইমারদের। ২০১৬ সালে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের সেই ম্যাচে রেনাতো অগুস্তো আর গ্যাব্রিয়েল জেসুসের গোলে ২-০ গোলের জয় পায় ব্রাজিল। এর আগের দুই ম্যাচে অবশ্য ড্র হয়েছিল, দুই ম্যাচেরই ফল ছিল ১-১। ২০০৭ সালে বাছাইপর্বের আরেক ম্যাচে কাকা গোল করে বাঁচিয়েছিলেন ব্রাজিলকে। তার আগের ম্যাচটার ইতিহাস খুঁজতে গেলে আরও সাত বছর পিছিয়ে যেতে হবে। দলে এদমুন্দো, রিভালদো, এমারসন, দেনিলসন থাকা সত্ত্বেও সে ম্যাচটি ব্রাজিল ড্র করেছিল আন্তোনিও কার্লোস জাগো নামের এক অখ্যাত খেলোয়াড়ের গোলে।
তবে, ভেন্যুর প্রসঙ্গ বাদ দিলে, দুই দলের সর্বশেষ ম্যাচেও কিন্তু হাসি ফুটেছিল পেরুর মুখে। সে ম্যাচে লুইস আব্রামের শেষ মুহূর্তের গোলে হার নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল ব্রাজিল, গত কোপা আমেরিকার ঠিক পরপরই। গত কোপা আমেরিকাতেই আবার পেরুর বিপক্ষে ব্রাজিলের সুখস্মৃতি আছে। একটা না, দুই-দুইটি। সেবার গ্রুপপর্ব ও ফাইনাল ; দুই ম্যাচেই পেরুর ওপর নিজেদের জাদু প্রয়োগ করেছিলেন ফিরমিনো, উইলিয়ান, জেসুসরা। গ্রুপপর্বের ম্যাচটায় ৫-০ গোলের জয় পাওয়া ব্রাজিল ফাইনালে জেতে ৩-১ গোলে, নিশ্চিত করে কোপার শিরোপা। আগামীকাল ম্যাচের আগে তাই নিঃসন্দেহে এই দুই ম্যাচই হবে সেলেসাওদের সবচেয়ে বড় প্রেরণা।
ওদিকে পেরুর প্রেরণা হিসেবে কাজ করবে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রতিবেশী ব্রাজিলের বিরুদ্ধে টানা দুই ম্যাচ জয়ের রেকর্ডের হাতছানি। গত ম্যাচে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়ার পরেও ২-২ গোলে ড্র করেছে পেরু, প্রেরণা হবে সেটাও।
এদিকে ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম গ্লোবোএস্পোর্তে জানিয়েছে, বলিভিয়ার বিপক্ষে খেলানো একাদশ পরিবর্তন করবেন না কোচ তিতে। করলেও, একটা পরিবর্তন হতে পারে। ৪-২-৩-১ ছকে রাইট উইঙ্গার হিসেবে বেনফিকার এভারতন সোয়ারেসের জায়গায় মাঠে নামতে পারেন এভারটনের রিচার্লিসন। বাকি সবাই অপরিবর্তিত থাকবেন। গোলবারের নিচে লিভারপুলের আলিসন বা ম্যানচেস্টার সিটির এদেরসন থাকবেন না, থাকবেন যথারীতি পালমেইরাসের ওয়েভারতন। সামনে সেন্ট্রাল ডিফেন্সে থিয়াগো সিলভা-মার্কিনিওসের জুটি, দুই ফুলব্যাক হিসেবে আতলেতিকো মাদ্রিদের রেনান লোদি (বাম) ও জুভেন্টাসের দানিলো (ডান)।
দুই রক্ষণাত্মক মিডফিল্ডার হিসেবে খেলবেন অ্যাস্টন ভিলার তরুণ মিডফিল্ডার দগলাস লুইজ ও রিয়াল মাদ্রিদের কাসেমিরো। সবার ওপরে ফিরমিনো, পেছনে কুতিনিও, বাঁয়ে নেইমার, ডানে হয় এভারতন, নয় রিচার্লিসন।
দুই ম্যাচ পরে পূর্ণ ছয় পয়েন্ট ব্রাজিল আদৌ পায় কি না, দেখার জন্য চোখ রাখতে হবে আগামীকাল সকাল ছয়টায়।