>ফ্রান্স বনাম আর্জেন্টিনা মহাকাব্যিক লড়াইয়ের মঞ্চ প্রস্তুত নকআউট পর্বেই। বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব পেরোতেই ফাইনাল ম্যাচের স্বাদ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে আরও একটি ম্যাচে। গত বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় পর্ব দেখা যেতে পারে রাশিয়ায়। নকআউট পর্বে মুখোমুখি হয়ে যেতে পারে জার্মানি-ব্রাজিল। তবে দুই দলের কেউই সম্ভবত সেটি চাইবে না
নকআউট পর্বে জার্মানি-ব্রাজিল ম্যাচ হতে পারে—সেই সম্ভাবনা বিশ্বকাপ শুরুর আগেই ছিল। তবে দুই দলের কোনো সমর্থকই সেটি চাননি। কে চায় যেচে পড়ে দ্বিতীয় পর্ব থেকেই বাদ পড়ার শঙ্কায় পড়তে? গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচের আগের সমীকরণ দুই দলকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। শেষ ম্যাচে সব সমীকরণ মিলে গেলে শেষ ষোলোতেই বাড়ির পথ ধরতে হবে ব্রাজিল-জার্মানির একদলকে।
জার্মানি যদি ব্রাজিলকে এড়াতে চায়, তাহলে বেশ কঠিন সমীকরণের মধ্য দিয়েই যেতে হবে তাদের। নিজেদের গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পাশাপাশি প্রার্থনা করতে হবে ব্রাজিলও যেন তাদের গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয়। জার্মানি রানার্সআপ হলে ব্রাজিলকেও গ্রুপ রানার্সআপ হতে হবে। দুই দলের একদল চ্যাম্পিয়ন এবং অপর দল রানার্সআপ হলে মুখোমুখি অবধারিত। জার্মানিকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে হলে যা করতে হবে:
* জার্মানিকে নিজেদের ম্যাচ দুই বা তার বেশি ব্যবধানে জিততে হবে। আর আশা করতে হবে, সুইডেনও নিজেদের ম্যাচ ১ গোল ব্যবধানে জিতবে। কারণ, গোল ব্যবধান সমান হলেও মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে থাকায় মেক্সিকোকে টপকে যাবে তারা। আর জার্মানি হবে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন।
* যদি জার্মানি ও সুইডেন ১-০ ব্যবধানে জেতে, তাহলে তিন দলের সবকিছু সমান হবে। তখন তিন দলের হেড টু হেড দেখা হবে। কোরিয়ার সঙ্গে করা গোলের হিসাব বাদ পড়বে। তিন দলের মধ্যে বেশি গোল করায় জার্মানি ও সুইডেন চলে যাবে, মেক্সিকো বাদ। হেড টু হেডে এগিয়ে জার্মানি চ্যাম্পিয়ন।
ব্রাজিলের গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সমীকরণ আরও সহজ।
* সার্বিয়ার বিপক্ষে ব্রাজিল ২ গোলের ব্যবধানে জিতলে এবং সুইজারল্যান্ড কোস্টারিকার সঙ্গে ১ গোলের ব্যবধানে জিতলে বা ড্র করলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। সঙ্গী হবে সুইজারল্যান্ড।
* ব্রাজিল ও সুইজারল্যান্ড দুই দলই ড্র করলে দেখা হবে গোল ব্যবধান। যেখানে এ মুহূর্তে ব্রাজিল এগিয়ে। ম্যাচ শেষে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকলেই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল।
তবে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মেক্সিকোর সুইডেনের কাছে হারার সম্ভাবনা বেশ কম। সে ক্ষেত্রে জার্মানির গ্রুপ রানার্সআপ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। আর তখন ব্রাজিল যদি জার্মানিকে এড়াতে চায়, নিজেদের ম্যাচ ড্র করলেই চলবে। যেহেতু ব্রাজিলের ম্যাচ হবে জার্মানির ম্যাচ শেষ হওয়ার পর, তিতে চাইলেই শিষ্যদের ম্যাচটা ড্র করতে বলতে পারেন। যদিও ম্যাচ–পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এসব আলোচনা উড়িয়ে দিয়েছেন তিতে। মজার ব্যাপার, গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনার পাশাপাশি দুই দলেরই গ্রুপ পর্ব থেকেই বাদ পড়ার শঙ্কাও আছে।
নিরপেক্ষ ফুটবল–সমর্থকেরা এত সমীকরণ মানতে চাইবেন না। তাঁরা হয়তো চাইবেন, ব্রাজিল-জার্মানি ম্যাচ দ্বিতীয় পর্বেই হয়ে যাক! সে প্রত্যাশা পূরণ হবে কি না সেটি আজ রাতেই জানা যাবে।