>আয়াক্সের বিপক্ষে ম্যাচের পর আকারে ইঙ্গিতে ইচ্ছে করে হলুদ কার্ড হজম করেছি বুঝিয়ে দেন রামোস। উয়েফার তদন্ত শেষে রামোসের সামনে এখন ২ ম্যাচ নিষিদ্ধ হওয়ার খড়্গ।
কথায় আছে, ‘কথা কম কাজ বেশি’। সার্জিও রামোসের কানে এই বাণী পৌঁছে দেওয়ার সময় চলে এসেছে। নইলে সাধে কেউ এত কথা বলে বিপদ ডেকে আনে? শেষ মিনিটে আয়াক্সের বিপক্ষে ইচ্ছে করে হলুদ কার্ড পেয়েছেন, এতে কোনো বিপদ হয়নি। বরং মুখ ফসকে সেটা স্বীকার করে দুই ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা খড়্গ মাথায় নিয়ে ঘুরছেন।
ঘটনার সূত্রপাত চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে। ৮০ মিনিটে অ্যাসেনসিওর গোলে ২-১ গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। তখন সার্জিও রামোস রিয়াল মাদ্রিদ বেঞ্চের দিকে তাকিয়ে ইশারা করেন। ইশারায় বোঝাতে চান যে, তাঁর এখন কার্ড পাওয়া উচিত কি না? তখন বেঞ্চ থেকে বলা হয় একটি হলুদ কার্ড হজম করতে। কারণ আয়াক্সের বিপক্ষে ২টি মহামূল্যবান ‘অ্যাওয়ে গোল’ পাওয়া হয়ে গিয়েছে। নিজেদের মাটিতে রামোসকে ছাড়াই আয়াক্সকে আটকে দিতে পারবে রিয়াল, সে বিশ্বাস আছে সকলের। ফলে হলুদ কার্ড হজম করতে বলা হয় তাকে। শেষ মিনিটে ফাউল করে হলুদ কার্ড হজম করেন রামোস। ফলে পরের ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ। কিন্তু রিয়াল কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেই ঝকঝকে পরিষ্কার হলুদ কার্ডবিহীন রামোস মাঠে নামতে পারবেন।
সমস্যার সূত্রপাত হয় সংবাদ সম্মেলনে। রামোস মুখ ফসকে বলে বসেন ভেতরের কথা, ‘মিথ্যা বলা হবে যদি বলি ইচ্ছে করে আমি এটা করিনি।’ সরাসরি না বললেও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে যে হলুদ কার্ডের কথাই ইঙ্গিত করেছেন তা বুঝতে সমস্যা হয়নি কারও। এতেই পড়লেন বিপদে। উয়েফার নিয়ম অনুযায়ী যদি কেউ ইচ্ছে করে হলুদ কার্ড হজম করেন, তবে তাঁকে বাড়তি শাস্তি দেওয়া হবে। রামোসের ক্ষেত্রে যেটা হতে পারে ২ ম্যাচের। ২ ম্যাচ নিষিদ্ধ হলে কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম ম্যাচ খেলতে পারবেন না রামোস।
রামোসের জন্য এ ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও ২০১০ সালে একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে হলুদ কার্ড দেখে জরিমানা দিতে হয়েছিল রামোসকে। সে ম্যাচে দ্যুদেককে দিয়ে ক্যাসিয়াসকে বার্তা পাঠান মরিনহো। কোচ দলের দুই তারকা রামোস ও জাবি আলোনসোকে হলুদ কার্ড পেয়ে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ হতে বলেন। যা ধরতে পেরে উয়েফা সবাইকে জরিমানা করে। সেসময় রামোসকে ২০ হাজার ইউরো জরিমানা করা হয়েছিল। গ্রুপ পর্বের ম্যাচ বলে জরিমানা দিয়েই পার পেয়ে যান রামোস। কিন্তু এবার নক-আউট পর্বের ম্যাচ, যে কারণে ২ ম্যাচ নিষিদ্ধ হওয়ার মুখোমুখি রিয়াল অধিনায়ক।
গত চ্যাম্পিয়নস লিগেও এমন ঘটনা ঘটেছিল রিয়ালে। সেবার গ্রুপ পর্বের পঞ্চম ম্যাচে ইচ্ছে করে হলুদ কার্ড পান দানি কারভাহাল। যাতে ডর্টমুন্ডের সঙ্গে গ্রুপের শেষ ম্যাচে নিষিদ্ধ থেকে শেষ ষোলোয় নতুন করে শুরু করতে পারেন। কিন্তু সেটা প্রমাণিত হওয়ায় পিএসজির সঙ্গে প্রথম লেগেও নিষিদ্ধ হতে হয়েছিল কারভাহালকে।
রামোস অবশ্য অস্বীকার করছেন এই অভিযোগ। তাঁর মতে, ‘আমি ফাউল করার ব্যাপারে বলেছিলাম যে ইচ্ছে করে করেছি। কার্ড কেউই ইচ্ছে করে হজম করতে চায় না। কার্ড হজম করতে চাইলে আমি গ্রুপপর্বেই হজম করতে পারতাম।’ এখন যত কিছুই বলা হোক না কেন, মুখ ফসকে বলে ফেলা এই কথা কি ফেরানো যায়?