কিলিয়ান এমবাপ্পে পিএসজিতে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ইনস্টাগ্রামে ছবি পোস্ট করেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা করিম বেনজেমা।
অনেকের সন্দেহ, এমবাপ্পে রিয়ালে যোগ না দিয়ে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন, ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করে এমনটাই বুঝিয়েছেন ফরাসি স্ট্রাইকার। সেই ছবি দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এমবাপ্পেকে তাই এ নিয়ে মুখ খুলতেই হলো।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কা সাক্ষাৎকার নিয়েছে এমবাপ্পের। সেখানে বেনজেমার সে পোস্ট নিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল তাঁর কাছে। রিয়ালে যোগ না দেওয়ায় তাঁর জাতীয় দল সতীর্থ যে বিষয়টি ভালো দেখবেন না, তা এমবাপ্পে নিজের কথাতেই বুঝিয়ে দিয়েছেন।
ফ্রান্স জাতীয় দলে দুজন একসঙ্গে বেশি দিন না খেললেও বোঝাপড়া চমৎকার। প্রজন্মের ব্যবধান ঘুচিয়ে এমবাপ্পের সঙ্গে বন্ধুত্বও গড়ে তুলেছিলেন বেনজেমা। তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস ও প্রত্যাশা ছিল, এমবাপ্পে রিয়ালে আসবেন এবং ক্লাব ফুটবলেও দুজন আক্রমণভাগে জুটি বাঁধবেন। কিন্তু বেনজেমার সেই প্রত্যাশায় জল ঢেলেছেন এমবাপ্পেই।
রিয়াল মাদ্রিদকে অনেকবার নিজের স্বপ্নের ক্লাব বললেও পিএসজির সঙ্গে তিন বছরের চুক্তি নবায়ন করেছেন এমবাপ্পে। সিদ্ধান্তটি তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানোর পর রিয়ালের অনেক খেলোয়াড়ই তা ভালোভাবে নেননি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁদের পোস্ট ছিল ইঙ্গিতপূর্ণ। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ইঙ্গিতটা দিয়েছেন করিম বেনজেমা।
যে ইঙ্গিত তিনি দিয়েছেন, সে কথায় পরে আসা যাবে। আগে তাঁর জাতীয় দল সতীর্থ এমবাপ্পের প্রতিক্রিয়া জেনে নেওয়া যাক। কাল পিএসজির সংবাদ সম্মেলনে এমবাপ্পে এ নিয়ে বলেছেন, ‘হ্যাঁ, হ্যাঁ, রিয়ালের বেশ কয়েকজনকে নানা রকম পোস্ট করতে দেখেছি। এই ব্যাপারগুলো তো এমনই। আমার কিছু বলার নেই। ফ্রান্স জাতীয় দলে যোগ দিয়েই আমি করিমকে বুঝিয়ে বলব, কেন পিএসজিতে থেকেছি। তার সঙ্গে সম্পর্ক বেশ ভালো।’
অনেকের দাবি, রিয়ালকে ব্যবহার করে ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে দামি চুক্তি বাগিয়ে নিয়েছেন এমবাপ্পে। বেনজেমা নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে ইঙ্গিতে এমবাপ্পেকে বিশ্বাসঘাতক বুঝিয়েছেন। শনিবার ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে তিনটি ছবি দেন বেনজেমা। এর মধ্যে তৃতীয় ছবিতে এমবাপ্পের দিকে ব্যক্তিগত বার্তা ছুড়ে দিয়েছেন। প্রয়াত র্যাপশিল্পী টুপ্যাক ও অভিনেতা স্টিভ বল্ডউইনের একটি ছবি।
১৯৯৬ সালের সে ছবিতে টুপ্যাকের পেছনে আরেকজন। শুধু মুখ দেখা যাচ্ছে তাঁর। ছবিটা দেওয়ার কারণ হিসেবে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম কাদেনা সারের অনুষ্ঠান কারুসেল দেপোর্তিভোর ব্যাখ্যা, ‘বিশ্বাসঘাতকতা? এ ছবিতে বিখ্যাত র্যাপার টুপ্যাক এবং তাঁর প্রিয় বন্ধু আছে, পরে টুপ্যাকের মৃত্যুতে তাঁকে সন্দেহভাজন বলে ভাবা হতো।’
১৯৯৬ সালে গুলি করে খুন করা হয়েছিল টুপ্যাককে। আর সন্দেহভাজন হিসেবে দেখা হচ্ছিল তাঁর সাবেক বন্ধু নটোরিয়াস বিগকে। কিন্তু বেনজেমার ছবিতে নটোরিয়াস বিগ নেই। এ কারণে অনেকেই বলছিলেন, টুপ্যাকের ভক্ত বলেই ছবিটি দিয়েছেন বেনজেমা। এর সঙ্গে এমবাপ্পের কোনো সম্পর্ক নেই।
কিন্তু আরেক ভক্ত মনে করিয়ে দেন, ছবিতে স্ট্রেচ আছেন। এই বন্ধুর বিরুদ্ধেও বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ উঠেছে। তবে সবচেয়ে বড় যুক্তি দিয়েছেন আরেক ভক্ত। মনে করিয়ে দিয়েছেন, ২১ মে ছিল নটোরিয়াস বিগের জন্মদিন। বন্ধু থেকে যিনি পরে টুপ্যাকের শত্রু বনে গেছেন। এমন দিনে টুপ্যাকের ছবি পোস্ট করেই যা ইঙ্গিত দেওয়ার দিয়েছেন বেনজেমা।