স্তাদে দি ফ্রান্স—১৯৯৮ সালে এই মাঠেই ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপ জিতেছিলেন লিলিয়ান থুরাম। ২২ বছর পর কাল রাতে সেই একই মাঠে অভিষিক্ত হলেন থুরামের ছেলে মার্কাস থুরাম।
কোথায় খুশি মনে মাঠ ছাড়বেন তা না, মার্কাসের অভিষেকটা তেতো বানিয়ে ছাড়ল ফিনল্যান্ড। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৫৫তম ফিনল্যান্ডের কাছে ২-০ গোলে হেরেছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স!
হোক না প্রীতি ম্যাচ, তবু ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে দ্বিতীয় এবং বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বলে কথা। যেখানে ফিনল্যান্ডকে পাত্তাই দেওয়ার কথা না, ফ্রান্স কি না সেখানে—ঘরের মাঠ—খেলেছে নখদন্তহীন ফুটবল! ছিলেন না শুধু কিলিয়ান এমবাপ্পে, এ ছাড়া আঁতোয়ান গ্রিজমান, পল পগবা, এনগোলো কাঁতে, অলিভার জিঁরুদের মতো তারকারা মাঠে থেকেও ফ্রান্সের হার এড়াতে পারেননি।
উল্টো ফিনল্যান্ডের হয়ে অভিষেকে পাওয়া গোলে দলের জয় এনে দেন মার্কাস ফর্স ও অনি ভালাকারি। এর মধ্য দিয়ে টানা ১২ ম্যাচ অপরাজিত থাকার পর হারের মুখ দেখলে ফ্রান্স। গত বছর জুনে তুরস্কের কাছে শেষ হার দেখেছিল দিদিয়ের দেশমের দল।
আর ফিনল্যান্ড? মাঠে নামানো একাদশ ও বেঞ্চ মিলিয়ে দলটির খেলোয়াড়দের বর্তমান বাজারমূল্য ৯.৩ মিলিয়ন পাউন্ড। অন্যদিকে ফ্রান্সের তারকাসমৃদ্ধ দলের মুল একাদশ ও বেঞ্চ মিলিয়ে মোট দাম ৫৩৯.৮ মিলিয়ন পাউন্ড।
এই পরিষ্কার পার্থক্যকে কি না ভুল প্রমাণ করল মাঠের খেলা—যেখানে দেশমের দলকে উল্টো মনে হয়েছে খেলা ভুলে গেছে! এই ফ্রান্সেরই বিপক্ষে এর আগে আটবার মুখোমুখি হয়ে জয়বঞ্চিত ছিল ফিনল্যান্ড। প্রথম জয়টা তাই মধুর-ই লাগার কথা!
ফ্রান্সের হয়ে থুরামই যা একটু চেষ্টা করেছিলেন। মোট ছয়টি শট নেন তিনি, একবার গোলপোস্ট কাঁপালেও গোল পাওয়া উচিত ছিল তাঁর। গ্রিজমান ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। আর মাঝমাঠে পগবাকে খুঁজে পাওয়াই ছিল ভার। ফিনল্যান্ডের রক্ষণভাগের তালা খুলতে পারেননি পগবা। একটু বেশি নিচে নেমে খেলায় আক্রমণ তৈরিতে দেখা যায়নি তাঁকে।
অন্যদিকে ২৮ মিনিটে খেলার ধারার বিপরীতে গোল করে বসেন ফিনল্যান্ডের ফরোয়ার্ড ফ্রস। বক্সের মধ্যে বাঁ পায়ের শটে গোলটি করেন তিনি। ৩১ মিনিটে ২০ গজ দূরত্ব থেকে করা শটে ফ্রান্সের দুঃস্বপ্ন বাড়ান আরেক অভিষিক্ত ভালাকারি।
গত ৬৪ বছরের মধ্যে বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ না পাওয়া প্রথম দল হিসেবে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের মাঠে জয়ের দেখা পেল ফিনল্যান্ড। সর্বশেষ এমন নজির গড়েছিল সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন।
১৯৫৬ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর তখন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানির মাটিতে জয় পেয়েছিল তারা। ১৯৫৮ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পায় সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন।
অন্য প্রীতি ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের মাঠ থেকে জয় তুলে নিতে পারেনি স্পেন। ১-১ গোলে ড্র হয় ম্যাচটি। ১৮ মিনিটে সার্জিও কানালেসকে দিয়ে গোল করান আলভারো মোরাতা। বিরতির পর ফন ডি বিকের গোলে সমতায় ফেরে ডাচরা।
তবে স্পেন ১-০ গোলে এগিয়ে বিরতিতে যাওয়ার পরই সবাই মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলেন সার্জিও রামোসদের হারের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কেননা দলটি তাদের ১০০ বছরের ইতিহাসে প্রতিপক্ষের মাঠে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যাওয়ার পর কখনো হারেনি। ৮৬ জয়ের পাশাপাশি ২০ ম্যাচ ড্র করেছে স্পেন, হার নেই।
ঘরের মাঠ হিসেবে নিলে স্পেন এগিয়ে থেকে বিরতিতে গিয়ে সর্বশেষ হেরেছিল ১৯৯০ সালে অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে লা রোসালেদায়। এ ম্যাচ দিয়ে কোনো ইউরোপিয়ান দলের হয়ে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ডে জিয়ানলুইজি বুফনের পাশে বসলেন স্পেন অধিনায়ক সার্জিও রামোস। দুজনেই খেলেছেন সমান ১৭৬ ম্যাচ।
ঘরের মাঠে এস্তোনিয়াকে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে ইতালি। এ নিয়ে টানা ২০ ম্যাচে অপরাজিত রইল ইতালি। ২০১৮ সালে নেশনস লিগে পর্তুগালের কাছে হারের পর এই ২০ ম্যাচের মধ্যে ১৫টিতে জিতেছে তারা। কোভিড-১৯ সংক্রমণের কারণে এ ম্যাচে কোচ রবার্তো মানচিনিকে পায়নি ইতালি।