গত দেড় দশকে আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের সবচেয়ে উজ্জ্বল তিন ঘটনায় তাঁর সরাসরি অবদান আছে।
২০০৮ অলিম্পিকে নাইজেরিয়াকে হারিয়ে আর্জেন্টিনা যে সোনা জিতল, সে ফাইনালে জয়সূচক গোল করেছিলেন আনহেল দি মারিয়াই। তবে সেটা ছিল বয়সভিত্তিক দলের সাফল্য। ২৮ বছরের শিরোপাখরা ঘুচিয়ে জাতীয় দল গত বছর যে কোপা আমেরিকা জয় করল, সেখানেও দি মারিয়ার গোলটাই ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিয়েছিল।
এ মাসের শুরুতে ইউরোজয়ী ইতালির বিপক্ষে হওয়া বহুল আলোচিত ‘লা ফিনালিসিমা’ ম্যাচেও গোল করেছেন এই উইঙ্গার, ম্যারাডোনা-উত্তর যুগে আর্জেন্টিনার জাতীয় দলকে দ্বিতীয় শিরোপা জেতাতে রেখেছেন ভূমিকা। সে দি মারিয়াই বিশ্বকাপে জায়গা পাওয়া নিয়ে সংশয়ে!
অবশ্য সংশয়ে থাকাটাই স্বাভাবিক। বয়স তো আর কম হলো না। সদ্য পিএসজির সঙ্গে চুক্তি শেষ হওয়া এই উইঙ্গারের বয়স এখন ৩৪। তরুণ অনেক খেলোয়াড়ই জাতীয় দলে কড়া নাড়ছেন। নিকোলাস গঞ্জালেস, আনহেল কোরেয়া, হোয়াকিন কোরেয়া, ইজেকিয়েল জেবায়োস ও হুলিয়ান আলভারেজের মতো অনেক ফরোয়ার্ডই জাতীয় দলে খেলার জন্য প্রস্তুত। দি মারিয়া নিজেও বোঝেন সেটা। বোঝেন বলেই বছরের শেষে আয়োজিত হতে যাওয়া কাতার বিশ্বকাপের আর্জেন্টিনা দলে আদৌ জায়গা হবে কি না, সেটা বুঝতে পারছেন না তিনি।
টিনঅ্যান্ডটি স্পোর্তসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সে সংশয়ের কথাই তুলে ধরেছেন তিনি। সঙ্গে এটাও বোঝেন, বিশ্বকাপে দলে কারওর জায়গা যদি পাকা হয়ে থাকে, সেটা লিওনেল মেসি, ‘ও-ই একমাত্র খেলোয়াড়, যার বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাকা।’
বেনফিকা, রিয়াল মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, পিএসজির মতো ক্লাবে খেলা এই উইঙ্গার এখন কার্যত ক্লাবহীন। এই মাসের শুরুতেই পিএসজির সঙ্গে সাত বছরের সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে, শেষ হয়েছে চুক্তি। দি মারিয়ার পরবর্তী গন্তব্য কোথায়, কেউ জানে না। যদিও বার্সেলোনা থেকে শুরু করে জুভেন্টাস, এমনকি নিজ দেশ আর্জেন্টিনার ক্লাব রোজারিও সেন্ট্রালের মতো ক্লাবও দি মারিয়াকে দলে নিতে আগ্রহী।
কিন্তু যে ক্লাবেই শেষমেশ নাম লেখা না কেন, দি মারিয়া বোঝেন, বিশ্বকাপের মাত্র চার মাস আগে নতুন ক্লাবে গিয়ে খাপ খাইয়ে নিজের ফর্ম ধরে রাখার কাজটা বেশ কষ্টকর, ‘আমাকে নতুন ক্লাবে যেতে হবে, নতুন করে খাপ খাওয়াতে হবে। ভালো খেলতে হবে, খেলাটা উপভোগ করতে হবে। বিশ্বকাপের চার মাস আগে এগুলো ঠিকঠাক করতে পারব কি না, এখনো জানি না।’ যদিও গত বছরের কোপা আমেরিকা থেকে আর্জেন্টিনার মূল একাদশে বলতে গেলে নিয়মিতই খেলে যাচ্ছেন এই উইঙ্গার।
দি মারিয়ার পরবর্তী ক্লাব হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে জুভেন্টাস ও বার্সেলোনা। দুই ক্লাবের প্রতি তাঁর সম্মান থাকলেও, এখনো জানাতে রাজি হননি, কোথায় যাচ্ছেন, ‘জুভেন্টাস ইতালির সবচেয়ে বড় ক্লাব। এমন এক ক্লাব যারা আমার প্রতি আগ্রহী। আমি এখন শুধুই ভাবছি, আর পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাচ্ছি। ওদিকে বার্সেলোনা বিশ্বের অন্যতম বড় ক্লাব যদিও আমাকে সব সময় তাদের প্রতিপক্ষ হয়েই খেলতে হয়েছে।’