আলফ্রেডো ডি স্তেফানোর বিশ্বকাপ-হতাশার কথা কারও অজানা নয়। স্পেন, আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়া—তিন দেশের হয়ে ফুটবল খেলেছেন রিয়াল মাদ্রিদের এই কিংবদন্তি। কিন্তু কখনো বিশ্বকাপে খেলা হয়নি তাঁর।
বিশ্বকাপ খেলতে না পারার হতাশা নিয়ে ক্যারিয়ার শেষ করা এমন অনেক বিখ্যাত খেলোয়াড়ই আছেন। তারিক ল্যাম্পটি ও ইনাকি উইলিয়ামস এমন কোনো বিখ্যাত ফুটবলার নন। কিন্তু বিশ্বকাপ না খেলার হতাশা নিয়ে ক্যারিয়ার শেষ করতে চান না তাঁরা।
ল্যাম্পটি ইংল্যান্ডের ফুটবলার। ইংল্যান্ডের বয়সভিত্তিক বিভিন্ন দলে খেলেছেনও। ২১ বছর বয়সী ব্রাইটনের রাইট উইং ব্যাক বুঝে গেছেন, এবার ইংল্যান্ডের হয়ে বিশ্বকাপ খেলার কোনো সম্ভাবনাই তাঁর নেই। চার বছর পর আরেকটি বিশ্বকাপে কী হবে, সেটাও তো জানা নেই ল্যাম্পটির। অন্যদিকে উইলিয়ামস স্পেনের ফুটবলার। স্পেন ও বস্ক কান্ট্রির হয়ে ম্যাচও খেলেছেন তিনি। তবে অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের ২৮ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডের স্পেনের হয়ে বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ নেই বললেই চলে।
ল্যাম্পটি আর উইলিয়ামসরা এটা বুঝে গেছেন বলেই হয়তো জাতীয় দল হিসেবে ঘানাকে বেছে নিয়েছেন। এরই মধ্যে ঘানার ফুটবল ফেডারেশনকে তাঁরা ঘানার হয়ে বিশ্বকাপ খেলার ইচ্ছার কথা জানিয়ে দিয়েছেন।
কেউ চাইলেই তো আর আন্তর্জাতিক ফুটবলে পরিচয় বদলে আরেকটি দলের হয়ে খেলতে পারেন না! ল্যাম্পটি ও উইলিয়ামসের এমন চাওয়ার পেছনে যুক্তিযুক্ত কারণও আছে। তাঁরা দুজনই যে ঘানাইয়ান বংশোদ্ভূত। ফিফার নিয়ম অনুযায়ী ঘানার হয়ে খেলার যোগ্য।
ল্যাম্পটির জন্ম লন্ডনের হিলিংডনে। বেড়ে ওঠাও লন্ডনেই। কিন্তু তাঁর ধমনিতে বইছে আফ্রিকান রক্ত। ল্যাম্পটির মা–বাবা দুজনই ঘানাইয়ান। উইলিয়ামসের জন্ম ও বেড়ে ওঠা বস্ক কান্ট্রিতে। তাঁর মা ও বাবা সাহারা মরুভূমি পাড়ি দিয়ে ঘানা থেকে স্পেনে গিয়ে বসতি গেঁড়েছিলেন উইলিয়ামসের জন্মের অনেক আগেই।
স্পেনের হয়ে বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনা নেই বলেই যে ঘানা দলে নাম লেখাতে চান, সেটা বলেননি উইলিয়ামস। ঘানার হয়ে বিশ্বকাপ খেলতে চাওয়ার পেছনে তাঁর যুক্তিটা এ রকম, ‘আমি মনে করি, আমার শিকড় খোঁজার সময় এসে গেছে। আফ্রিকা ও ঘানা আমার এবং আমার পরিবারের কাছে সব সময়ই বিশেষ কিছু।’
শুধু ল্যাম্পটি আর উইলিয়ামসই নন, ঘানার হয়ে বিশ্বকাপে খেলার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন আরও তিনজন—জার্মানির ক্লাব হামবুর্গের ডিফেন্ডার স্টেফান আম্ব্রসিয়ুস ও স্ট্রাইকার র্যানসফোর্ড ইয়েবোয়াস এবং ডার্মস্টাডের ডিফেন্ডার প্যাট্রিক ফেইফার। তাঁদের সবারই ঘানার সঙ্গে সংযোগ আছে।
এবারের বিশ্বকাপে ঘানা এইচ গ্রুপে পর্তুগাল, উরুগুয়ে ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে লড়বে। এবারের বিশ্বকাপে কঠিন গ্রুপগুলোর একটি ধরা হচ্ছে এটিকে।