>আত্মঘাতী গোল করে খুন হয়েছিলেন আন্দ্রেস এসকোবার। কলম্বিয়ার এই ফুটবলারের এই মৃত্যুর কীনারা হয়নি আজও।
বিশ্বকাপ প্রাণ কেড়েছিল আন্দ্রেস এসকোবারের। ১৯৯৪ বিশ্বকাপে একটা আত্মঘাতী গোল কাল হয়েছিল এই কলম্বিয়ান ডিফেন্ডারের। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে গ্রুপপর্বের ম্যাচে সেই আত্মঘাতী গোলেই ত্বরান্বিত হয়েছিল কলম্বিয়ার বিদায়। সেই আত্মঘাতী গোলের কারণেই দেশে ফেরার পর গুলি করে হত্যা করা হয় এসকোবারকে। অথচ, কী দুর্দান্ত দলই না ছিল অ্যাসপ্রিয়া-ভালদেরামাদের দেশ! কিন্তু প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির মেলবন্ধন ঘটেনি। সে তো নাও ঘটতে পারে! কিন্তু এসকোবারের হত্যার ঘটনাটি যেন আজও কাটার মতো বিঁধে আছে কলম্বিয়ান ফুটবলে। বিশ্ব বিমূঢ় হয়ে দেখেছিল আনন্দ-উৎসবের বিশ্বকাপ কখনো কখনও প্রাণ হন্তারকও হয়ে উঠতে পারে।
আগেই বলা হয়েছে, চুরানব্বইয়ে কলম্বিয়া ছিল রীতিমতো হট ফেবারিট। স্বয়ং ফুটবল কিংবদন্তি পেলেও আশাবাদী হয়েছিলেন কলম্বিয়ার সম্ভাবনা নিয়ে। অনেকেই বলেন, এখনো পর্যন্ত নিজেদের সেরা জাতীয় দলটি নিয়েই কলম্বিয়া সেবার বিশ্বকাপে খেলতে গিয়েছিল। কিন্তু প্রথম ম্যাচে রোমানিয়া আর দ্বিতীয় ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হেরে বিশ্বকাপ শেষ হয়ে যায় তাদের। রোমানিয়ার বিপক্ষে হারের ব্যবধান ছিল ৩-০, আর যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ২-১। কেবল সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষেই জয় তুলে নিয়েছিল তারা। কিন্তু তত দিনে বড় দেরি হয়ে গেছে।
কলম্বিয়ার এই ব্যর্থতা মেনে নেয়নি কেউই। কিন্তু ব্যর্থতার মূল্যটা যে এসকোবারকে এভাবে চুকাতে হবে, সেটা আর কে ভেবেছিল। মিডফিল্ডার গ্যাব্রিয়েল গোমেজও মৃত্যুর হুমকি পেয়েছিলেন। কিন্তু এসকোবারকে গুলি করে হত্যা করেই নিজেদের ক্ষোভ মেটাতে চেয়েছিল উগ্র ফুটবলপ্রেমীরা।
‘তোমার আত্মঘাতী গোলের জন্য ধন্যবাদ।’ ফুটবল কল্পকাহিনিতে স্থায়ী জায়গা পেয়ে গেছে হামবার্তো কাস্ত্রো মুনোজের এই একটি লাইন। এসকোবারকে গুলি করার ঠিক আগমুহূর্তে এটিই বলেছিল সেই খুনি!
তবে এসকোবারের বন্ধু-পরিবার আর সেই সময়ের কলম্বিয়া কোচ ফ্রান্সিকো মাতুরানার বিশ্বাস, কলম্বিয়ার নিত্যদিনের সন্ত্রাসেরই বলি হয়েছিলেন এসকোবার। আত্মঘাতী গোল স্রেফ উপলক্ষ মাত্র। তবে ওই আত্মঘাতী গোলে ১৯৯৪ বিশ্বকাপ থেকে কলম্বিয়ার বিদায় আর দু সপ্তাহ পরই নিজ শহরে এসকোবারের খুন হওয়া মিলেই তৈরি হয়েছে নানা ধরনের আখ্যান।
এসকোবারের মৃত্যুর পর কেটে গেছে ২৪ বছর। কিন্তু কী আশ্চর্য সেই হত্যাকাণ্ডের কীনারা এখনো করতে পারেনি কলম্বিয়া। তিনি যেন বিশ্বকাপের এক ট্র্যাজিক নায়ক!