বিশ্বকাপ মানেই নানা দলের অন্তর্ভুক্তি। কয়েকটি দল অবশ্য চিরচেনা—ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জার্মানি, ফ্রান্স। কিছু কিছু দলের দেখা মেলে কালেভদ্রে, অনেকটা শীতকালীন অতিথি পাখির মতো! এক প্রজন্ম বিশ্বকাপ খেলে যায়, তারা গল্প করে সেই অভিজ্ঞতার। সেই গল্প শুনতে শুনতে বড় হয় অন্য প্রজন্ম, আবার জায়গা করে নেয় বিশ্বকাপে। চলুন, দেখে নিই এবারের বিশ্বকাপের কিছু অতিথি দলকে
২৮ বছর পর মিসরের গোল
এবারে বিশ্বকাপে মিসরের নামটা একটু বেশি শোনা গেছে, মোহাম্মদ সালাহর কারণেই। টানা দুই ম্যাচ হেরে গিয়ে আলোচনার স্রোত কমিয়ে দিয়েছে তারা। তবু ২৮ বছর পরে বিশ্বকাপ বলে কথা। সর্বশেষ বিশ্বকাপটি যে তারা খেলেছিল ১৯৯০ সালে! তবে আফ্রিকান দেশ হিসেবে প্রথম বিশ্বকাপ খেলার রেকর্ডটি কিন্তু মিসরের। ১৯৩৪ সালে বিশ্বকাপ খেলা মিসর, এরপর মাত্র দুবারই খেলেছে বিশ্বকাপ।
এত বছর পর সুযোগ পেয়েও সবাইকে তাক লাগানোর মতো তেমন কিছুই করতে পারেনি দলটি। প্রথম ম্যাচে উরুগুয়ের বিপক্ষে তো গোলের দেখাই পায়নি, দ্বিতীয় ম্যাচেও গোল পাওয়া নিয়ে ছিল সংশয়। তবে শেষমেশ গোল করেছে মিসর, ৭৩ মিনিটে পাওয়া পেনাল্টির কল্যাণে। ভাগ্যিস, পেনাল্টি পেয়েছিল মিসর, না হলে হয়তো ২৮ বছর পরও বিশ্বকাপের মঞ্চে গোলের দেখা পেত না দলটি।
৩৬ বছরের আক্ষেপ এখনো মেটেনি পেরুর
চার বছর পরপর আসে বিশ্বকাপ। তবে পেরুর জন্য বিশ্বকাপ এসেছে ৩৬ বছর পর! প্রতিবার বাছাইপর্বের বাধা পেরোতেই যেন তাদের দম ফুরিয়ে আসে। তবে আগে কিন্তু এমন ছিল না দলটি। প্রথম বিশ্বকাপেই ছিল তারা। ১৯৭০ ও ৭৮–এর বিশ্বকাপও খেলেছে পেরু। কিন্তু ১৯৮২ বিশ্বকাপের পর আর সুবিধা করে উঠতে পারেনি। অবশেষে আবারও বিশ্বমঞ্চে দলটি। এত বছরের হতাশা কিন্তু তাদের খেলায় আগুন হয়ে ফুটে ওঠেনি; বরং প্রথম ম্যাচে ডেনমার্কের বিপক্ষে পেরুর ক্রিস্টিয়ান কেভা পেনাল্টি মিস করে চক্ষুঃশূল হয়েছেন সবার।
১৬ বছরের ক্ষুধা মিটল সেনেগালের
সেনেগালের বিশ্বকাপের ইতিহাসটা বলতে গেলে একদম আনকোরা। এই তো ২০০২ বিশ্বকাপের কথা, প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের মঞ্চে পা রাখে দলটি। সবাইকে অবাক করে কোয়ার্টার ফাইনাল অব্দি পৌঁছে যায় দলটি। কিন্তু হায়! এত ভালো বিশ্বকাপ খেলেও পরের তিনটি বিশ্বকাপে সুযোগই পায়নি তারা! তবে রাশিয়া বিশ্বকাপ মিস করেনি দলটি। ১৬ বছর পর বিশ্বকাপ খেলতে আসা সেনেগাল বেশ ক্ষুধার্তই, আর প্রথম ম্যাচে এর প্রতিফলনও ঘটেছে। পোল্যান্ডের সঙ্গে প্রথম ম্যাচেই ২-১ গোলে জয় পেয়েছে সেনেগাল।
২০ বছর পর দুর্ভাগ্যের শিকার মরক্কো
২০ বছর পর বিশ্বকাপে। এত বছর পর বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়ার পর যেকোনো দলেরই নিজেদের চেনানোর বাড়তি তাগিদ থাকে। মরক্কোও চেষ্টা করেছে, গোলও করেছে কিন্তু সেটি ছিল আত্মঘাতী গোল। রাশিয়ায় খেলতে এসে প্রথম ম্যাচের ৯৫তম মিনিটে নিজেদের জালে বল জড়িয়েছে তারা। আর এতেই ইরানের কাছে ১-০ গোলে হেরেছে মরক্কো।
আজ দ্বিতীয় ম্যাচেও ভালো খেলেছে মরক্কো। কিন্তু ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর্তুগালের সঙ্গে পেরে ওঠেনি তারা। আরেকটি ১-০ ব্যবধানের হারে প্রথম দল হিসেবে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে মরক্কো।