>
লিওনেস মেসির বার্সেলোনাকে ৮–২ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে জার্মানির বায়ার্ন মিউনিখ
অবিশ্বাস্য! অবিশ্বাস্য!! অবিশ্বাস্য!!!
অবিশ্বাস্য ব্যাপারটাই ঘটে গেল লিসবনে। লিওনেল মেসির বার্সেলোনাকে ৮–২ গোলে বিধ্বস্ত করেই উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে উঠে গেলো বায়ার্ন মিউনিখ।
ম্যাচ শুরুর আগে বাজির দর বায়ার্নের পক্ষেই ছিল। কিন্তু বায়ার্ন কয় গোলে জিতবে সেই বাজিতে নিশ্চিত কেউ ৮–২ গোলের কথা বলেননি। কীভাবেই বা বলবেন, বার্সেলোনা সেই কবে এক ম্যাচে ৮ গোল খেয়েছে তা তো ভুলেই বসেছিলেন সবাই। লিসবনে বায়ার্ন ৯০ মিনিটে বার্সাকে ছাড়খার করে দেওয়ার পর পুরোনো সেই রেকর্ড–পত্তরে আবার হাত পড়ল। কম তো নয় সেই ১৯৪৬ সালে সর্বশেষ এক ম্যাচে ৮ গোল খেয়েছিল বার্সেলোনা। ১৯৪৬ সালে কোপা ডেল রেতে সেভিয়ার কাছে ৮–০ গোলে হেরেছিল বার্সা।
৭৪ বছর আগের সেই দুঃস্মৃতি এবার রঙিন হয়ে ফিরে এলো বার্সার কাছে। দলটির ইতিহাসের সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসিকে সাক্ষী করে বার্সাকে দুমরেমুচড়ে জিতল মুলার–লেভানডফস্কির বায়ার্ন।
ম্যাচের আগেই একটি দুঃসংবাদ পেয়েছিলেন মেসিরা। চোটের কারণে স্পেনে রেখে আসা ডিফেন্ডার স্যামুয়েল উমতিতির করোনা পজিটিভ হওয়ার খবর পেয়েছিলেন তাঁরা। তখন তাঁরা জানতেন না ৯০ মিনিটের লড়াই কী দুঃসহ অভিজ্ঞতা উপহার দিতে যাচ্ছে।
৪ মিনিটেই শুরু বায়ার্ন গোল উৎসবের। বাঁ দিক থেকে পেরিসিচের ক্রস বক্সের ঠিক বাইরে ধরলেন টমাস মুলার। মুলারের কাছ থেকে লেভানডফস্কির পা হয়ে আবার মুলারের পায়ে বল। বাঁ পা দিয়ে টের স্টেগেনের ডান পাশ দিয়ে বল জালে ঠেলে দিলেন বায়ার্ন ফরোয়ার্ড।
৩ মিনিট পর ডেভিড আলাবার আত্মঘাতী গোলে ম্যাচে সমতা। জমজমাট এক লড়াই প্রতিশ্রুতিই তখন দিচ্ছিল ম্যাচটি। ১০ মিনিটে মেসির ক্রসটি সাইড পোস্টে না লাগলে এগিয়েও যেতে পারত বার্সা। এই সুযোগ মিসের পরই এলেমেলো বার্সেলোনা। বায়ার্নের চাপে একেবারে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল দলটির ডিফেন্স। ২২ থেকে ৩১, এই ৯ মিনিটে ৩ গোল করে ম্যাচটি হাতের মুঠোই তুলে নেয় বায়ার্ন। দ্বিতীয় গোলটি ইভান পেরিসিচের, ২৮ মিনিটের সার্জ নাবরি ৩–১ করার পর ৩১ মিনিটে মুলারের দ্বিতীয় গোলে ৪–১। প্রথমার্ধে আর গোল হয়নি।
বিরতি শেষে ৫৭ মিনিটে লুইস সুয়ারেজ একটি গোল করে ব্যবধান কমিয়েছিলেন। তাতে যেন মৌচাকেই ঢিল পড়ল। ৬৩ মিনিট ৫–২। মেসি বার্সার সবচয়ে বেশি গোল খাওয়ার রেকর্ডও হয়ে যায় তাতে। অবিশ্বাস্য ড্রিবলিংয়ে বার্সার ডিফেন্সকে ছিঁড়েখুঁড়ে ফেলে আলফোনসো ডেভিস পাসটা বাড়ালেন জশুয়া কিমিখের দিকে। ছন্নাছাড়া বার্সেলোনা ডিফেন্সকে আরেকটি গোল উপহার দিতে ভুল করলেন না কিমিখ।
২২ মিনিট পর মেসি যুগের লজ্জাও পেছনে পড়ে গেলে। রবার্ট লেভানডফস্কি ও ফিলিপে কুতিনহোর আরও ২টি গোলে বায়ার্ন এগিয়ে ৭–২ গোলে। ইউরোপিয়ান ফুটবল ইতিহাসে বার্সেলোনার জালে এই প্রথম ৭ গোল।
চার মিনিট পরে কুতিনহোর আরেকটি গোল। বায়ার্ন ৮, বার্সা ২।
সেমিফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটি অথবা লিওঁর বিপক্ষে খেলবে বায়ার্ন।