বার্সেলোনা পয়েন্ট হারাল অ্যাটলেটিকোর কাছে

এভাবেই টানাটানি করেছেন দুই দলের খেলোয়াড়েরা। মেসিকে টেনেও অবশ্য শেষ রক্ষা হয়নি। মেসির দুর্দান্ত পাস থেকেই গোল করেন ডেম্বেলে। ছবি: এএফপি
এভাবেই টানাটানি করেছেন দুই দলের খেলোয়াড়েরা। মেসিকে টেনেও অবশ্য শেষ রক্ষা হয়নি। মেসির দুর্দান্ত পাস থেকেই গোল করেন ডেম্বেলে। ছবি: এএফপি
>লা লিগায় অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে বার্সেলোনা। বার্সার হয়ে গোল করেন ডেম্বেলে। অ্যাটলেটিকোর গোলটি করেন কস্তা।

লা লিগায় শনিবার রাতের ম্যাচে খেলার চেয়ে বেশি হয়েছে ‘ঠেলাঠেলি’, ‘হাতাহাতি’। দুই দল মিলে ফাউল করেছে ৩১টি! ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত ১-১ গোলের সমতায় শেষ হয়।

নিজেদের মাঠে জিতলেই পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে যেত অ্যাটলেটিকো। স্বাগতিকেরা সে জন্য লড়েছেন সবকিছু উজাড় করেই। আর প্রতিপক্ষের রক্ষণের বেশির ভাগ মূল খেলোয়াড়ই যখন চোটের কারণে খেলার বাইরে, তখন মেসি-সুয়ারেজরা চাইবেন অ্যাটলেটিকোর জালে গোলবন্যা বইয়ে দিতে। পয়েন্টের ব্যবধানটা আরেকটু বাড়িয়ে নিতে। দুই দলই চেয়েছে জয়। কারণ, পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে পৌঁছাতে কিংবা স্থান ধরে রাখতে জয়ের বিকল্প নেই। কিন্তু কিসের কী! প্রথমার্ধের খেলা শেষ। দ্বিতীয়ার্ধের খেলাও শেষের পথে। অথচ গোলের দেখা নেই! হতাশার বহিঃপ্রকাশ করেন দুই দলের খেলোয়াড়ই। তবে সেটা শরীর দিয়ে। এতে ম্যাচে উত্তেজনা ছড়ালেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। বার্সেলোনার তিনজন আর অ্যাটলেটিকোর পাঁচজন পেয়েছেন হলুদ কার্ডের দেখা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য দুই দলই গোল পেয়েছে। পয়েন্ট ব্যবধান সেই আগের জায়গাতেই। বার্সেলোনা ১৩ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আর সমানসংখ্যক ম্যাচ খেলে অ্যাটলেটিকোর সংগ্রহ ২৪ পয়েন্ট।


বল দখলের লড়াইয়ে অ্যাটলেটিকোর চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে ছিল বার্সেলোনা। গোলমুখে শটও বেশি নেন ভালভার্দের শিষ্যরা। অ্যাটলেটিকো গোলমুখে শট নেয় ৩টি, যার একটি মাত্র ছিল লক্ষ্যে। আর মেসি-সুয়ারেজরা গোলমুখে শট নেয় ৮টি। এসব পরিসংখ্যান দিয়ে অবশ্য খেলার মেজাজটা ঠিক বোঝানো মুশকিল হবে। আক্রমণ–পাল্টা আক্রমণে আগুন ঝরিয়েছে দুই দলই। স্বাগতিকেরা যতবারই বার্সার ডি বক্সে বল নিয়ে ঢুকেছে, ততবারই অতিথিদের রক্ষণ কেঁপে উঠেছে ভয়ে। পিকে বারবার ইশার দিয়ে সতীর্থদের ঠান্ডা থাকতে বলছেন। ডাগআউট থেকে ভালভার্দেও বলছেন গোছানো খেলা খেলতে। আক্রমণে থাকা মেসি খেলেছেন তাঁর মতো করেই।

গোলের পর সুয়ারেজের সঙ্গে ডেম্বেলের উদ্‌যাপন। ছবি : এএফপি

ম্যাচের ৭০ মিনিটে উমতিতি আর কস্তা বল দখল নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে সেটা হাতাহাতিতে রূপ নেয়। তবে ঘটনা বেশি দূর গড়ায়নি রেফারির মধ্যস্থতায়। দুজনকেই হলুদ দেখতে হয়েছে অবশ্য। প্রতিশোধটা প্রথমে নেন স্পেনের ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভূত ফরোয়ার্ড কস্তাই। ৭৭ মিনিটে গ্রিজমানের নেওয়া কর্নার থেকে দুর্দান্ত হেডে গ্যালারিতে উল্লাসের ঢেউ তোলেন কস্তা। পিছিয়ে পড়ে বার্সা খেলোয়াড়েরা তেতে ওঠে। ধাক্কাধাক্কির পরিমাণও তখন বেড়ে যায়। মেসি বার দুয়েক ফ্রি কিক পান সুবিধাজনক জায়গা থেকে। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি।

ম্যাচের ৯০ মিনিট, খেলাও প্রায় শেষ। বার্সা সমর্থকদের বুকের ধিকধিকানি তখন তুঙ্গে। তখনই জাদুকরের মতো নিজের ঝোলা থেকে জাদুর কাঠি বের করলেন মেসি। শেষ রক্ষা করলেন স্প্যানিশ জায়ান্টদের। তাঁর দুর্দান্ত পাস থেকে বদলি হিসেবে নামা ডেম্বেলের অসাধারণ ফিনিশিংয়ে পরাজয় এড়ায় বার্সেলোনা।