>এল ক্লাসিকোর ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়েই শেষ হয়েছে। বেশ কিছু ভালো সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি রিয়াল কিংবা বার্সেলোনা।
সবাই মুখিয়ে ছিলেন কিভাবে বার্সেলোনাকে আটকানোর ছক আঁকেন জিদান সেটা দেখার জন্য। অথচ ম্যাচের পর এটা বলাই যায় বার্সেলোনাকে নয় বরং রিয়ালকেই রুখে দিয়েছে বার্সেলোনা।
চোটজর্জরিত রিয়ালকে নিজেদের মাঠে পেয়ে এল ক্লাসিকোর ক্যানভাসে যেমন খুশি তেমন আঁকবে বার্সেলোনা। কারণ বার্সেলোনার মেসির কাছাকাছি মানের একজন খেলোয়াড়ও রিয়ালের নেই। উল্টো নিজেদেরই সেরাদের পাচ্ছেন না রিয়াল বস!— ম্যাচের আগে এসব কথামালার জবাব মাঠেই দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। অন্তত প্রথমার্ধের খেলা দেখে এই কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। প্রথমার্ধে রিয়াল মাদ্রিদ কর্নারই পেয়েছে ৫টি। আর বার্সেলোনা পেয়েছে ১টি!
স্বাগতিকদের রক্ষণে ভয় ধরিয়ে দেওয়া একের পর এক আক্রমণের পরও গোল পায়নি রিয়াল মাদ্রিদ। বেশ কিছু ভালো সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি বার্সেলোনাও। শেষতক গোলশূন্য ড্র রেখেই ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজান রেফারি। ১৭ বছর পর গোলশূন্য ড্র হলো বার্সা–রিয়াল ম্যাচ। পুরো ম্যাচে ৭০ মিনিট পর গ্যারেথ বেল একবার বল জালে জড়িয়ে পিনপতন নীরবতা নামিয়ে আনেন ক্যাম্প ন্যুতে। সেই গোলও অবশ্য বাতিল হয় অফসাইডের ফাঁদে পড়ে।
বার্সেলোনার জার্মান গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগান বারবার পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছেন। পরীক্ষায় উতরেও গেছেন বেশ কয়বার। নিজে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছেন। কিংবা ডিফেন্ডারদের সুবাদে রক্ষা পেয়েছেন। ম্যাচের ১৭তম মিনিটেই ন্যু ক্যাম্পের গ্যালারি ঠাসা প্রায় ১ লাখ দর্শককে হতাশার চাদরে মুড়ে দিতে পারত রিয়াল মাদ্রিদ। বার্সেলোনার হয়ে পিকে ছিলেন স্বয়ং দেবতা রূপে। প্রথমার্ধে রিয়ালও নিশ্চিত গোল হজমের হাত থেকে রক্ষা পায়। পিকের বদলে অতিথিদের ছিলেন রামোস। ৩১তম মিনিটে মাদ্রিদ জায়ান্টদের রক্ষা করেন রামোস। রিয়ালের ডি বক্সে জটলায় বল পেয়ে শট নিয়েছিলেন মেসি। বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন তারকার শট রুখে দেন রামোস।
ঝিমিয়ে পড়া এল ক্লাসিকোয় খানিকটা রং লাগা শুরু করে তখন। দুই দলই খেলায় গতি বাড়ায়। গোলের সুযোগও তৈরি করে। কিন্তু গোলের দেখা পায় না কেউই। ডি বক্স থেকে কাজ হচ্ছে না দেখে দূরপাল্লার শটে চেষ্টা চালায় জিদান শিষ্যরা। ইসকো-ভালভার্দে-বেনজেমাদের ডি বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শটেও শেষতক কাজ হয়নি।
দ্বিতীয়ার্ধেও ম্যাচের একই দশা। বলের গায়ে ঠিকমতো ঠিকানা লিখতে পারছেন না কেউ। তারপর আবার গোলের সুযোগ পেয়ে সেটাও কাজে লাগাতে পারছেন না। স্বয়ং মেসি করছেন শিশুসুলভ মিস। ম্যাচের ৬০তম মিনিটে মেসি গোল দিলে গোলের দেখা পেত কাতালানরা। গ্রিজমানকে বল বাড়িয়ে দিয়ে কার্বাহালকে ফাঁকি দেন মেসি। বল পেয়ে সেটা ফের মেসির দিকে ঠেলে দেন গ্রিজমান। ভালভার্দের সেরা শিষ্য আরও একবার হতাশায় ডোবান সমর্থকদের। পরের মিনিটেই সুযোগ পান সুয়ারেজ। বার্সেলোনার উরুগুইয়ান তারকাও বল জালে জড়াতে ব্যর্থ।
তবে আজকের ফলাফলে নিশ্চিতভাবে তৃপ্ত হবেন রিয়াল বস। হ্যাজার্ড-রদ্রিগেজ-মার্সেলোকে ছাড়া তাঁর দল যা দেখিয়েছে সত্যি অনন্য। অন্যদিকে ভালভার্দে কেন যে বুসকেটসকে একাদশে রাখলেন না এই আলোচনা চলবে সামনের কয়দিন।