>মধুর এক প্রতিশোধ নিল বার্সেলোনা। গত বছর নেইমারের রিলিজ ক্লজ ২২২ মিলিয়ন ইউরো পরিশোধ করে পিএসজি যখন তাকে দলে নেয়, ফুটবল বিশ্ব চমকে গিয়েছিল। তবে এবার পিএসজির শিকার ছোঁ মেরে নিজের করে নিল বার্সেলোনা
পিএসজি সঙ্গে বেশ কয়েক বছর ধরে যুদ্ধ লেগেই আছে বার্সেলোনার। এই যুদ্ধ দল বদলের। বার্সেলোনার ঐতিহ্যের বিপক্ষে পিএসজির পেট্রো ডলারের লড়াই। এবার বার্সার আছে হার মানতে হলো পিএসজিকে। ডাচ প্রতিভা ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংকে নেওয়ার দৌড়ে এগিয়ে ছিল ফ্রেঞ্চ ক্লাবটি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই দৌড়ে জিতল বার্সাই। ২১ বছর বছর বয়সী এই তরুণ মিডফিল্ডার এখন বার্সেলোনার। আর এই ব্যর্থতায় চাকরি হারাতে যাচ্ছেন পিএসজির স্পোর্টিং ডিরেক্টর। এমন খবরই জানিয়েছে ইএসপিএন ও স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম এএস।
তরুণ এই ডাচ ফুটবলারের মধ্যে অনেকে নেদারল্যান্ডস ও বার্সেলোনা কিংবদন্তি ইয়োহান ক্রুইফের ছায়া দেখছেন। ডি ইয়ংয়ের বাবাও অনেক আগে জানিয়েছিলেন ছেলে আয়াক্স ছেড়ে কোথাও যদি যায় সেটি বার্সাতেই। যদিও তাঁকে কেনার দেন-দরবার আগেই শুরু করেছিল পিএসজি। ম্যানচেস্টার সিটিরও আগ্রহ ছিল তাঁকে নিয়ে। দলটির কোচ পেপ গার্দিওলা কম চেষ্টা করেননি। তবে তিনি সম্ভাব্য পরিণতি আঁচ করতে পেরেছিলেন। বার্সেলোনা আর রিয়াল মাদ্রিদের কাছে অন্যেরা যে কতটা অসহায় সে কথা সরাসরি স্বীকারও করেছেন গার্দিওলা।
ডি ইয়ংয়ের ব্যাপারে সিটি কোচ বলেছিলেন, ‘যখন কোনো কিছুর পেছনে রিয়াল মাদ্রিদ বা বার্সেলোনা ছুটবে তখন আপনি হারতে বাধ্য।’ গার্দিওলার কথাই সত্যি হলো। ডি ইয়ংকে ৭৫ মিলিয়ন ইউরোয় কিনেছে বার্সা। আর এতে বিপদে পড়লেন এনতেরো হেনরিক। তিনি পিএসজির স্পোর্টিং ডিরেক্টর। পিএসজির দলবদলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন হেনরিক। ডি ইয়ংকে নিতে ব্যর্থ হওয়ায় তাঁর ওপর বেশ চটেছেন পিএসজির মালিক নাসের আল খেলাইফি। এ ছাড়া ফরাসি মিডফিল্ডার আদ্রিয়ান রাবিওতের সঙ্গে চুক্তিতে ব্যর্থ হওয়ার বিষয়টি ভালোভাবে নেননি এই ধনকুবের। আর তাই এসব ব্যর্থতায় নিজের পদ হারাতে যাচ্ছেন হেনরিক। ২০১৭ সালের জুন থেকে এই পদে দায়িত্বে আছেন তিনি।
নতুন ক্লাবে যাওয়া নিশ্চিত হতেই ডি ইয়ং বলেন, ‘পিএসজিতে যাওয়াটা অসাধারণ হতো। তারা আমাকে পাওয়ার জন্য সবকিছুই করেছে। বার্সা যখন আগের সপ্তাহে আমার বিষয়ে তাদের আগ্রহ স্পষ্ট করল তখন আমি আমার স্বপ্নকে অনুসরণ করলাম। এত কিছুর মধ্যে সেখানে যাওয়া নিয়ে কোচের( আর্নেস্তো ভালভার্দে) সঙ্গেও কথা হয়নি আমার। আমি পিএসজিতে যাইনি কারণ দলটি বার্সা।’
ডি ইয়ংয়ের এই উক্তি পিএসজি মালিকের ভালো লাগার কথা নয়। ২০১৪ সালের পর থেকেই পিএসজির সঙ্গে বার্সেলোনার সম্পর্কটা বেশ তেতো হয়ে উঠেছে। বার্সা তখন ব্রাজিলিয়ান ও পিএসজি ডিফেন্ডার থিয়েগো সিলভাকে দলে নেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছিল। খেলাইফি উল্টো রিলিজ ক্লজ পরিশোধ করে মেসিকেই দলে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। আর আগের বছর ২২২ মিলিয়ন ইউরো পরিশোধ করে নেইমারকে দলে ভেড়ায় পিএসজি।এবার পিএসজিকে টেক্কা দিয়ে ডি ইয়ংকে দলে ভিড়িয়ে মধুর প্রতিশোধ নিল স্প্যানিশ ক্লাবটি। আর দুই ক্লাবের এই প্রতিযোগিতায় মাঝে চাকরি হারাতে হচ্ছে হেনরিককে।