অসাধারণ এক গোল করে ফ্রাঙ্কফুর্টকে এগিয়ে দিয়েছিলেন আনসগার কানাউফ
অসাধারণ এক গোল করে  ফ্রাঙ্কফুর্টকে এগিয়ে দিয়েছিলেন আনসগার কানাউফ

বার্সাকে রুখে দিল ১০ জনের ফ্রাঙ্কফুর্ট

এক দল পড়ে আছে বুন্দেসলিগার পয়েন্ট তালিকার নয়ে। আরেক দল সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে অপরাজিত টানা ১৩ ম্যাচে। প্রথম দলটি আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্ট, দ্বিতীয়টি বার্সেলোনা। ইউরোপা লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে সেই ফ্রাঙ্কফুর্ট রুখে দিয়েছে স্প্যানিশ পরাশক্তিদের। ইতিহাসে প্রথম দেখায় ঘরের মাঠে বার্সেলোনার সঙ্গে ১–১ গোলে ড্র করেছে শেষ ১২ মিনিট ১০ জন নিয়ে খেলা ফ্রাঙ্কফুর্ট।

শেষ ষোলোর প্লে–অফে নাপোলির সঙ্গে ১–১, শেষ ষোলোতে গালাতাসারাইয়ের সঙ্গে ০–০, এরপর ফ্রাঙ্কফুর্টের সঙ্গে ড্র। প্রথম লেগে ড্র করাটাই যেন নিয়ম বার্সেলোনার। নাপোলি ও গালাতাসারাইয়ের সঙ্গে ঘরের মাঠে প্রথম লেগটা খেলেছিল বার্সা, এবার ফ্রাঙ্কফুর্টের মাঠে—পার্থক্য বলতে এতটুকুই।

তবে দুদলের শক্তির পার্থক্য ঘুচিয়ে এগিয়ে গিয়েছিল ফ্রাঙ্কফুর্টই। স্বাগতিকেরা এগিয়ে যায় দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই। কী অসাধারণ এক গোলই না করেছেন আনসগার কানাউফ! ৪৮ মিনিটে বক্সের মাথায় বল পেয়ে যান জার্মানি অনূর্ধ্ব–২১ দলের উইঙ্গার। চোখের পলকেই গোল। শূন্যে ভেসে বল চলে যায় জালে। বাঁ দিকে ঝাঁপিয়েও বলের নাগাল পাননি বার্সার জার্মান গোলরক্ষক মার্ক–আন্দ্রে টের স্টেগেন। এই গোলের পর মিনিট দশেক বার্সার ডিফেন্সকে দম ফেলতে দেয়নি ফ্রাঙ্কফুর্ট।

বার্সাকে সমতা এনে দেওয়ার পর সতীর্থ ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংয়ের সঙ্গে ফেরান তোরেস

বার্সা সমতা ফেরায় ৬৬ মিনিটে। দারুন দলীয় প্রচেষ্টার ফসল গোলটি। উসমান দেম্বেলে, ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংয়ের পা ঘুরে বল আসে ফেরান তোরেসের কাছে। স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড গোল করতে ভুল করেননি।

৭৮ মিনিটে ১০ জনের দল হয়ে যায় ফ্রাঙ্কফুর্ট। পেদ্রিকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ব্রাজিলিয়ান সেন্টারব্যাক তুতা।

গোলশূন্য প্রথমার্ধে গোলের ভালো সুযোগ পেয়েছিল দুই দলই। তবে এগিয়ে যাওয়ার প্রথম সুযোগ পায় বার্সেলোনা। তৃতীয় মিনিটের শুরুতেই গোল পেতে পারত সফরকারীরা। পেনাল্টি বক্সের বাইরে থেকে পোস্টের বাঁ কোণ লক্ষ্য করে নেওয়া ফেরান তোরেসের শটটা অসাধারণ ক্ষিপ্রতায় আঙুল ছুঁয়ে বাইরে পাঠিয়ে দেন ফ্রাঙ্কফুর্ট গোলরক্ষক কেভিন ট্রাপ।

দর্শক সমর্থন কাজে লেগেছে ফ্রাঙ্কফুর্টের

পরের ৬–৭ মিনিট বলের দখল বেশি ছিল ফ্রাঙ্কফুর্টের। এ সময়ে জার্মান ক্লাবটি গোলের সুযোগও নষ্ট করেছে বেশ কয়েকটি। পাঁচ মিনিটে আনসগার কানাউফের শট কর্নারের বিনিময়ে বাঁচান গাভি। ষষ্ঠ মিনিটে তো সহজ সুযোগ নষ্ট করে স্বাগতিকেরা। কাউন্টার অ্যাটাক থেকে ইয়েসপার লিন্ডস্টর্ম পাস খুঁজে পায় জিবরিল সোকে। ফাঁকায় বল পেয়েও সুইস মিডফিল্ডার কীভাবে যেন বলটাকে বাইরে পাঠালেন।

১২ মিনিট পরে বার্সাও হারায় গোলের সুযোগ। এ মৌসুমেই আর্সেনাল ছেড়ে বার্সায় যোগ দেওয়া স্ট্রাইকার পিয়ের–এমেরিক অবামেয়াং খুব কাছ থেকেও মারেন বাইরে।
২৩ মিনিটে চোটের কারণে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন জেরার্ড পিকে। তাঁর বদলি হিসেবে নামেন ক্লেমঁ লংলে।

লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ছেন তুতা

৩৭ মিনিটে পেনাল্টি পেয়ে যায় ফ্রাঙ্কফুর্ট। বাঁ পাশ থেকে বাড়ানো ফিলিপ কস্তিচের ক্রস টের স্টেগেন ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেননি। প্রথম মনে হয়েছিল বলের দখল পেতে এগিয়ে যাওয়া ফ্রাঙ্কফুর্ট ফরোয়ার্ড রাফায়েল বোরেকে ফেলে দিয়েছেন বার্সা অধিনায়ক সের্হিও বুসকেতস। সঙ্গে সঙ্গেই পেনাল্টির বাঁশি বাজিয়েছিলেন রেফারি। তবে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) বাঁচিয়ে দেয় বার্সাকে। রিপ্লে দেখায় বোরের পায়ে নয় বুসকেতসের পা লেগেছে শুধুই বলে।

আগামী বৃহস্পতিবার ক্যাম্প ন্যুতে দ্বিতীয় লেগে মুখোমুখি হবে দুদল।