ম্যুরাল নয়, আসল মেসির সঙ্গেই এমন সেলফি তোলার সুযোগ বার্সা সমর্থকেরা অন্তত আরও এক বছর পাবেন।
ম্যুরাল নয়, আসল মেসির সঙ্গেই এমন সেলফি তোলার সুযোগ বার্সা সমর্থকেরা অন্তত আরও এক বছর পাবেন।

বার্সাকে আদালতে নিতে চাননি বলেই...

সমঝোতায় নাকি আদালতে? বার্সেলোনার সঙ্গে লিওনেল মেসির বিচ্ছেদ কীভাবে হবে, তা-ই ছিল আলোচনা।

গত ২৫ আগস্ট বুরোফ্যাক্সের মাধ্যমে নিজের ক্লাব ছাড়ার ইচ্ছের কথা মেসি বার্সেলোনাকে জানানোর পর থেকেই আলোচনায় ছিল এটি। শেষ পর্যন্ত বার্সেলোনা না ছাড়ারই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মেসি। চুক্তির আরও এক মৌসুম আছে, সেটি পূর্ণ করেই যাবেন। এরপর কী হবে, এক মৌসুম পর হয়তো জানা যাবে। তবে আপাতত কেন থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মেসি, তার অনেকগুলো কারণের একটি এই যে, নিজের অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে যাওয়া ক্লাবকে আদালতে নিতে চাননি মেসি।

আমি কখনো বার্সার বিরুদ্ধে আদালতে যাব না। এই ক্লাবটাকে আমি ভালোবাসি।
মেসি, বার্সেলোনা অধিনায়ক

মেসি বুরোফ্যাক্স পাঠানোর পরই বার্সেলোনা জানিয়ে দিয়েছিল, মেসি ক্লাব ছাড়তে চাইলে সেটি ১০ জুনের মধ্যে জানাতে হতো, মেসির সঙ্গে বার্সেলোনার চুক্তিতে নাকি সেই তারিখই লেখা ছিল। আবার মেসির পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছিল, করোনাভাইরাসের কারণে উল্টেপাল্টে যাওয়া মৌসুমে এই তারিখটা এবার কার্যকর হওয়া উচিত নয়। বার্সেলোনা আবার জানিয়ে দিয়েছে, তারা মেসিকে ছাড়বে না, যেতে হলে মেসিকে চুক্তির ৭০ কোটি ইউরোর বাইআউট ক্লজ দিয়েই যেতে হবে। কিন্তু মেসির দাবি ছিল, তাঁর চুক্তির বাইআউট ক্লজের ধারাটা এই মৌসুমে আর কার্যকর নয়। চুক্তির ৮.২.৩.৬ ধারাতে সেটি লেখা ছিল বলে আজই স্প্যানিশ লিগ কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে লেখা এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন মেসির বাবা ও তাঁর এজেন্ট হোর্হে মেসি।

দুই পক্ষের এই ১৮০ ডিগ্রি ব্যবধান ঘোচানোর কোনো রাস্তা দেখা যাচ্ছিল না। সমাধান পেতে আদালতে যেতে হতো। কিন্তু মেসি সেটি কখনো চাননি। ২০ বছর ধরে যে ক্লাবের সঙ্গে আত্মার সম্পর্ক, সেই ১৩ বছর বয়সে তাঁকে এনে যে ক্লাবটা তাঁকে ‘মেসি’ বানিয়েছে, যে ক্লাবটাকে জীবনের সবকিছুই দিয়েছেন মেসি...সেই বার্সেলোনাকে আদালতে নেওয়ার কথা একবারও ভাবেননি মেসি।

গোলডটকমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তা-ই বলেছেন মেসি, ‘আরেকটা (ক্লাব ছাড়ার) পথ ছিল, আদালতে যেয়ে সমাধান খোঁজা। কিন্তু আমি কখনো বার্সার বিরুদ্ধে আদালতে যাব না। এই ক্লাবটাকে আমি ভালোবাসি। যে ক্লাবটা আমি এখানে আসার পর থেকে আমাকে সবকিছু দিয়েছে।’

বার্সার প্রতি কৃতজ্ঞতাই ঝরল ৩৩ বছর বয়সী আর্জেন্টাইনের কণ্ঠে, ‘আমার প্রাণের ক্লাব এটা। আমার জীবন গড়েছি এখানে। বার্সা আমাকে সবকিছু দিয়েছে, আমি বার্সাকে সবকিছু দিয়েছি। এতটুকু জানি, বার্সাকে আদালতে নেওয়ার কথা একবারের জন্যও আমার ভাবনায় আসেনি।’

তাঁর যে ক্ষোভটা ক্লাবের বিরুদ্ধে নয়, জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউর অধীন বর্তমান বোর্ডের সঙ্গে—তা তো শুরু থেকেই জানা ছিল। মেসির কথায় সেটি আরও পরিষ্কার হলো।