দশ দিন ধরে চলতে থাকা নাটক শেষ হলো অবশেষে! আসলেই কি শেষ হলো? নাকি লিওনেল মেসির এই সাক্ষাৎকারের পর নতুন কোনো দিকে মোড় নেবে ঘটনা! ফুটবল বিষয়ক ওয়েবসাইট গোল-কে দেওয়া যে সাক্ষাৎকারে মেসি নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বার্সেলোনায় থাকার ঘোষণায় শুধু দেননি, ধুয়ে দিয়েছেন বার্সা সভাপতি জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউকে। আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের দাবি, বার্তোমেউ তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন, কথা দিয়ে কথা রাখেননি।
বার্সেলোনা ছাড়ার সিদ্ধান্তটা যে হঠাৎ করে নেননি, সেটি উঠে এসেছে মেসির কথায়, ‘আমি ক্লাব ও সভাপতিকে বলেছিলাম আমি যেতে চাই। পুরো বছর জুড়েই আমি তাঁকে এটি বলে এসেছি। আমি বিশ্বাস করেছি আলাদা হওয়ার এটাই সময়। আমি বিশ্বাস করেছি ক্লাবের আরও বেশি তরুণ খেলোয়াড় দরকার, নতুন খেলোয়াড় দরকার। আমি ভেবেছি বার্সেলোনায় আমার সময় শেষ। আমার খারাপ লাগত কারণ আমি সব সময়ই এখানে ক্যারিয়ার শেষ করতে চেয়েছি।’
আমি সভাপতিকে বলেছি, আর সভাপতি সব সময় বলে এসেছেন আমি থাকব কি থাকব না সেই ব্যাপারে মৌসুম শেষে সিদ্ধান্ত নিতে। কিন্তু শেষে তিনি কথা রাখলেন না।মেসি, ক্লাব ছাড়ার প্রসঙ্গে
লিসবনে চ্যাম্পিয়নস লিগে বায়ার্ন মিউনিখের ৮-২ গোলে কাছে হারের সঙ্গে এ সিদ্ধান্তের কোনো যোগসূত্র নেই বলে দাবি মেসির, ‘খুব কঠিন বছর ছিল এটি। অনুশীলন, ম্যাচ ও ড্রেসিংরুমে আমাকে অনেক যন্ত্রণা সইতে হয়েছে। আমার জন্য সবকিছুই কঠিন হয়ে গিয়েছিল। আর এমন একটা মুহূর্ত এল যখন নতুন পথে হাঁটার কথা ভাবতে লাগলাম। চ্যাম্পিয়নস লিগে বায়ার্নের বিপক্ষে ম্যাচের ফলের কারণে এমনটা হয়নি, আমি অনেক আগে থেকেই এমনটা ভাবছিলাম।’
কিন্তু মৌসুমের মাঝে যতবার বার্সা সভাপতি জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউকে নিজের ইচ্ছের কথা জানিয়েছেন মেসি, ততবারই নাকি বার্তোমেউ তাঁকে মৌসুমের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলে গেছেন। কিন্তু মৌসুম শেষে যখন মেসি আনুষ্ঠানিক ভাবে সিদ্ধান্ত জানালেন, তখন নিজের কথা পাল্টে ফেলেন বার্তোমেউ। সাক্ষাৎকারে এটাই দাবি করেছেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড, ‘আমি সভাপতিকে বলেছি, আর সভাপতি সব সময় বলে এসেছেন আমি থাকব কি থাকব না সেই ব্যাপারে মৌসুম শেষে সিদ্ধান্ত নিতে। কিন্তু শেষে তিনি কথা রাখলেন না। বছরজুড়েই আমি সভাপতিকে বলেছি আমি যেতে চাই, বলেছি সময় এসেছে নতুন লক্ষ্য ঠিক করার ও ক্যারিয়ারটাকে নতুন পথে নিয়ে যাওয়ার। তিনি (সভাপতি) সব সময়ই বলে এসেছেন, ‘‘আমরা কথা বলব তবে এখন নয়’’।’
এই প্রতারণার পরেও মেসি আইনি লড়াইয়ে না গিয়ে বার্সেলোনায় থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শুধু বার্সেলোনার কথা ভেবে, ‘ব্যুরোফ্যাক্স পাঠিয়ে আমি আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দিলাম যে আমি যেতে চাই, আমি মুক্ত এবং এই বছরে আমি থাকতে বাধ্য নই। তাঁরা যা বলছে তা হলো, আমি কেন ১০ জুনের আগের জানালাম না। তাঁকে আমি আবারও বলছি আমরা সব টুর্নামেন্টের মধ্যে ছিলাম, আর ওটা ঠিক সময় ছিল না। কিন্তু ওটা ছাড়া সভাপতি সব সময়ই আমাকে বলে এসেছেন ‘মৌসুম শেষ হলে তুমি সিদ্ধান্ত নেবে থাকবে না চলে যাবে।’ তিনি কোনো দিন তারিখ ঠিক করেননি। আমি শুধু থাকতে চাই না সেটিই আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছি। আমি কোনো লড়াই শুরু করতে চাইনি, আমি ক্লাবের বিপক্ষে লড়াই করতে চাইনি।’