ঝড় তাহলে থেমেছে? আপাতদৃষ্টিতে তেমন মনে হওয়াই স্বাভাবিক। বার্সেলোনা ছাড়ার সিদ্ধান্ত পাল্টে থেকে যাচ্ছেন লিওনেল মেসি। বার্সেলোনা সমর্থকেরা খুশি হলেও রিয়াল মাদ্রিদ কিংবদন্তি হুগো সানচেজ কিন্তু খুশি হতে পারেননি। মেক্সিকোর ইতিহাসে অন্যতম সেরা এ ফুটবলার মনে করেন, বাবা ও এজেন্ট হোর্হে মেসির কুমন্ত্রণায় বার্সায় থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেসি।
চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ৮-২ গোলে হারের পর বার্সা ছাড়ার সিদ্ধান্ত বুরোফ্যাক্সের মাধ্যমে ক্লাবকে জানান আর্জেন্টাইন তারকা। এরপরই পরিস্থিতি জটিল হতে থাকে। মেসি চুক্তির শর্ত ভেঙে ফ্রি এজেন্ট হিসেবে যেতে পারেন না এবং যেতে হলে ৭০ কোটি ইউরো দিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে দেয় বার্সা। পরে ক্লাবটির সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য আর্জেন্টিনা থেকে স্পেনে পা রাখেন মেসির বাবা ও এজেন্ট হোর্হে মেসি। দুই পক্ষে বৈঠকে বসেও কোনো সুরাহা করতে পারেনি। নিজেদের দাবিতে অনড় থাকে বার্সা। এরপর সংবাদমাধ্যম গোল ডট কমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বার্সায় থাকার কথা জানিয়ে দেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড।
সানচেজ মনে করেন, বাবা ও এজেন্টের দায়িত্বে থাকা হোর্হে মেসির বাজে পরামর্শে ক্লাবে থেকে যাওয়া ছাড়া মেসির আর কোনো পথ ছিল না। রিয়ালের হয়ে পাঁচবার লা লিগা সানচেজ ইএসপিএনকে বলেন, ‘অসময়ে পাঠানো বুরোফ্যাক্স বার্সেলোনা সভাপতির ভাবমূর্তিকে শক্তিশালী করেছে এবং মেসির সিদ্ধান্তকে দুর্বল করতে সময় পেয়েছেন তিনি। বাবা ও আইনজীবীদের কুমন্ত্রণার কারণে মেসির বার্সায় থেকে যাওয়া ছাড়া আর কোনো পথ ছিল না। কারণ তারা চাইলে বুরোফ্যাক্স করা থেকে থামাতে পারতেন মেসিকে। এটা দলের মধ্যে তার ভাবমূর্তিকে দুর্বল করেছে।’
ফুটবল ক্যারিয়ারে ব্যাকফ্লিপের জন্য বিখ্যাত সাবেক এ ফরোয়ার্ড মনে করেন, ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েই থাকলে দেরি করা হয়নি মেসির। ‘কাকতালীভাবে মেসির আইনজীবী আগে বার্সেলোনার সঙ্গে কাজ করেছে। কিন্তু স্বার্থের সংঘাতের কারণে কাতালান ক্লাবটি কৌশল পাল্টায়। মেসি এবং তার বাবা আগেই বার্সা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকলে তাদের সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষা করা ঠিক হয়নি। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, মৌসুম শেষ হওয়ার আগে ক্লাব ছাড়ার কথা জানাতে হবে। ভাবনাটা এমন হলে তাদের সেভাবেই কাজ করা উচিত ছিল। মেসির দ্বিতীয় সমস্যা হলো বুরোফ্যাক্স করা—সেটাও অন্য কোনো ক্লাব তাকে ৭০ কোটি ইউরো দিয়ে কিনবে সে নিশ্চয়তা ছিল না। করোনাভাইরাসের এ সময়ে কোনো দলই এত টাকা বিনিয়োগ করবে না।’
সানচেজ মনে করেন মেসি বার্সায় ফেরার সিদ্ধান্ত নিলেও সমস্যা এখনো থেকেই গেছে, ‘বার্সার সঙ্গে সমস্যাটা তাকে আগামী মৌসুমে সেভাবে মনোযোগী হতে দেবে না। সে আগের তরুণটি আর নেই যে পুরো মাঠ দাপিয়ে বেড়াবে।’মেসি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, মৌসুমের মাঝে যতবার বার্সা সভাপতি জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউকে ক্লাব ইচ্ছের কথা জানিয়েছেন মেসি, ততবারই নাকি বার্তোমেউ তাঁকে মৌসুমের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলে গেছেন। কিন্তু মৌসুম শেষে যখন মেসি আনুষ্ঠানিক ভাবে সিদ্ধান্ত জানালেন, তখন নিজের কথা পাল্টে ফেলেন বার্তোমেউ।