প্রিমিয়ার লিগের ভেন্যু নিয়ে এবার কম নাটক করেনি বাফুফে। করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সাতটি ভেন্যু থেকে কমিয়ে তিনটিতে খেলা আয়োজন করতে চেয়েছিল দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা।
কিন্তু বাফুফের অদ্ভুত দাবি না মানায় লিগ শুরুর এক দিন আগে ভেন্যু তালিকা থেকে ছেঁটে ফেলা হয় আধুনিক সুযোগ–সুবিধাসম্পন্ন বসুন্ধরা কিংস এরেনা ফুটবল স্টেডিয়ামকে। শেষ পর্যন্ত যে দুটি স্টেডিয়ামে লিগের ম্যাচ আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছে, তার একটি টঙ্গীর শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়াম।
সেখানে খেলা আয়োজন করা নিয়ে আবার আর্চারি ফেডারেশনের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে বাফুফে। ২০১৪ সালে শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়ামটি বরাদ্দ পায় আর্চারি ফেডারেশন। এর পর থেকে তারাই স্টেডিয়ামটি তত্ত্বাবধান করছে।
কিন্তু আর্চারির সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই সে মাঠে খেলা আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়ায় সংবাদ সম্মেলন ডেকে বাফুফের বিপক্ষে অভিযোগ তুলেছিলেন আর্চারি ফেডারেশনের সভাপতি লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মঈনুল ইসলাম।আপাতত ফুটবল-আর্চারির দ্বন্দ্বের মীমাংসা হলেও বাফুফের সমালোচনা চলছে এখনো।
আজ এ নিয়ে বাফুফের সমালোচনা করেছেন স্বয়ং ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান। আজ গুলিস্তানের শেখ রাসেল রোলার স্কেটিং কমপ্লেক্সে শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার জাতীয় টার্গেটবল চ্যাম্পিয়নশিপের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তিনি। সেখানেই ফুটবল-আর্চারির দ্বন্দ্ব নিয়ে কথা বলেছেন। প্রতিমন্ত্রী মনে করছেন, বাফুফে টঙ্গী স্টেডিয়াম জবরদখল করেছে।
জাহিদ আহসান বলেন, ‘ফুটবল ও আর্চারি ফেডারেশনের মধ্যে যে ঝামেলা হয়েছে, সেটি হওয়ার কথা ছিল না। গত বছর আমরা যখন ফুটবলকে অনুমোদন দিয়েছিলাম; তখন বলা হয়েছিল, আর্চারি যেহেতু স্টেডিয়ামটি ব্যবহার করছে, তাই তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ফুটবলকে ব্যবহার করতে হবে।আর্চারি যদি মনে করে ফুটবল স্টেডিয়াম ব্যবহার করতে পারবে, তাহলে ব্যবহার করবে। না হলে অন্য জায়গায় যেতে হবে। এটা আমাদের লেখা ছিল। গতবারও তারা (বাফুফে) সেটা করেনি, এবার তারা আরও ভয়াবহ কাজ করেছে।’
ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বিষয়টি মানতে পারছেন না, ‘যে ঝামেলা হয়েছে, এটা কারও কাম্য নয়। চিঠিতে উল্লেখ ছিল, আর্চারির সঙ্গে আলোচনা করেই তারা সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু সেটা না করা...একেবারে জবরদখলের মতোই। আমার কাছে এটা সঠিক মনে হয়নি।
যে কয়টি খেলায় আমরা আন্তর্জাতিকভাবে ভালো করছি, সেগুলোর মধ্যে আর্চারি অন্যতম। এটিকে (মাঠ ব্যবহার) আমরা ভালোভাবে দেখিনি। ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড হলে তাদের স্টেডিয়াম বরাদ্দ দেওয়াই কঠিন হবে।’
আপাতত স্টেডিয়ামটি সর্বোচ্চ পর্যায়ের ফুটবলের উপযোগী নয় বলেও মনে করেন জাহিদ আহসান, ‘এই স্টেডিয়াম ফুটবলের মতো বড় ইভেন্ট, বিশেষ করে জাতীয় লিগ করার মতো এবং সব দলের সুযোগ–সুবিধা দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই। সে ধরনের ড্রেসিংরুম নেই, সাংবাদিকদের বসার স্থান নেই। স্টেডিয়ামটি আর্চারি অনুশীলনের জন্য ব্যবহার করছে বলে এ নিয়ে নতুন করে ভাবিনি।’
২০ ফেব্রুয়ারির পর সেখানে সপ্তাহে একটি করে ম্যাচ আয়োজন করতে হবে বলেও জানিয়ে রেখেছেন প্রতিমন্ত্রী। বর্তমানে সপ্তাহে পাঁচটি প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ হচ্ছে।