টিম হোটেলে দুপুরে খাবার টেবিলে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন আবাহনী লিমিটেডের বিদেশি খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফরা। অনুমিতভাবেই আলোচনার বিষয় এএফসি কাপের প্লে-অফ ম্যাচ খেলতে মালদ্বীপের ক্লাব ভ্যালেন্সিয়ার বাংলাদেশে না আসা।
আর এতেই ওয়াকওভার পেয়ে ১৯ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় প্লে-অফের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলার টিকিট পেয়েছে আবাহনী। এএফসি কাপ ও লিগ নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বললেন রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলা আবাহনীর ফরোয়ার্ড দানিয়েল কলিনদ্রেস।
প্রশ্ন: ওয়াকওভার পেয়ে প্লে-অফ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচ নিশ্চিত হওয়ায় কেমন লাগছে?
দানিয়েল কলিনদ্রেস: পরের ম্যাচটা খেলার সুযোগ পেয়ে অবশ্যই আমরা খুশি। তবে এভাবে জেতার মধ্যে আনন্দ নেই। খেলে জিততে পারলে বেশি ভালো লাগত। ম্যাচটির জন্য আমরা খুব ভালো প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বললেই বুঝতে পারবেন, সবাই ম্যাচটির জন্য কতটা মুখিয়ে ছিল।
প্রশ্ন: কখন শুনেছেন যে ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি হচ্ছে না?
কলিনদ্রেস: কাল (গত পরশু) বিকেলে অনুশীলন শুরুর আগে মারিও (আবাহনী কোচ) বলেছিল, মালদ্বীপের ক্লাবটি বাংলাদেশে আসছে না। ভ্যালেন্সিয়ার গোলকিপার কোচ মারিওর বন্ধু, সে–ই বিষয়টি তাকে জানায়।
প্রশ্ন: এর আগে কখনো আন্তর্জাতিক ম্যাচে এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে?
কলিনদ্রেস: দেপ্রোতিভো সাপ্রিসার (কোস্টারিকার ক্লাব) হয়ে খেলার সময় একবার এমন অভিজ্ঞতা হয়েছিল। কনকাক্যাফ টুর্নামেন্টের একটি খেলা এভাবে বাতিল হয়। প্রতিপক্ষ দলটার নাম মনে আসছে না।
প্রশ্ন: প্লে-অফের পরের ম্যাচটি কলকাতার মোহনবাগানের বিপক্ষে খেলতে হতে পারে। মোহনবাগানকে হারানো সম্ভব?
কলিনদ্রেস: আগে দেখি মোহনবাগান ও শ্রীলঙ্কার ব্লু স্টারের মধ্যে কোন দল জেতে। এরপরে না হয় সেই ম্যাচ নিয়ে আলোচনা করব। আসলে ফুটবলে অনেক কিছুই হতে পারে।
প্রশ্ন: সম্প্রতি এএফসি কাপের কথা উঠলেই ২০১৯ সালে আপনার নেতৃত্বে মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টসকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে দেওয়ার ম্যাচটি সামনে চলে আসে...
কলিনদ্রেস: ম্যাচটি আমার জন্য দারুণ স্মৃতি। হার্নান বার্কোস অসাধারণ খেলেছিল (আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার ৪ গোল করেছিলেন)। দল হিসেবে বসুন্ধরাও ছিল দুর্দান্ত। ওই ম্যাচটি দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবল মানচিত্রে বাংলাদেশের ফুটবলকে নতুন করে চিনিয়েছে।
প্রশ্ন: বসুন্ধরা প্রসঙ্গ চলে এল। ৩ এপ্রিল বসুন্ধরার বিপক্ষে গোল করে যেভাবে উদ্যাপন করলেন, সাধারণত এমনটা তো আপনাকে দেখা যায় না!
কলিনদ্রেস: আমার আট মাসের ছেলে প্রথমবারের মতো আমার খেলার সময় গ্যালারিতে ছিল। তাই এই গোল আমার জন্য বিশেষ কিছু। স্বাভাবিকভাবে ওর কিছুই বোঝার কথা নয়। তবে ছেলেকে একটা গোল উপহার দিতে পারাটা আমার জন্য আনন্দের।
প্রশ্ন: লিগ প্রসঙ্গে আসি। মৌসুমের প্রথম দুটি টুর্নামেন্টের ট্রফি জেতা আবাহনীকে লিগে সেই ছন্দে দেখা যাচ্ছে না কেন?
কলিনদ্রেস: সবার আগে চোটের কথা বলব। ইমন বাবু, হৃদয়, রাফায়েল, দরিয়েলতনরা চোটে ভুগছে। এত খেলোয়াড় চোটে থাকলে সে দল ভালো করতে পারে না, এটাই স্বাভাবিক।
প্রশ্ন: শীর্ষে থাকা বসুন্ধরা আপনাদের থেকে ৪ পয়েন্ট এগিয়ে। শেষ পর্যন্ত তাদের ধরা সম্ভব?
কলিনদ্রেস: ৪ পয়েন্ট খুব বেশি নয়। তবে এই মুহূর্তে বসুন্ধরা খুব ভালো খেলছে। এ ছাড়া শেখ জামাল, সাইফ স্পোর্টিং, চট্টগ্রাম আবাহনীর পারফরম্যান্সের প্রশংসাও করতে হবে। লিগের এখনো অনেক পথ বাকি। যেকোনো কিছুই হতে পারে।
প্রশ্ন: চার বছর আগে এই সময়ে আপনি রাশিয়া বিশ্বকাপ প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন আর এখন বাংলাদেশে। জীবন কতটা বদলেছে ?
কলিনদ্রেস: এটা জীবনেরই অংশ। সেবার আমরা সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিলাম আর এবার আমাদের নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্লে-অফ খেলতে হবে। কোস্টারিকার দলটিতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। দলে থাকা জোয়েল ক্যামবেল, ফ্রান্সিসকো কার্লোর সঙ্গে কথা হলে খোঁজখবর নিই।
প্রশ্ন: শেষ প্রশ্ন, আবার বাংলাদেশে ফেরার পর গণমাধ্যমকে এড়িয়ে চলছেন কেন?
কলিনদ্রেস: কেন, আপনার সঙ্গেই তো আমার কয়েকবার কথা হয়েছে। আসলে এখানকার ( বাংলাদেশের) সাংবাদিকেরা ব্যক্তিগত প্রশ্ন বেশি করেন। খেলার মাঠ ও ব্যক্তিগত জীবনকে আমি আলাদা রাখতে চাই। এ ছাড়া আমি বেশি কথা বলতেও পছন্দ করি না।