জেমি ডের চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে কাল। গত বছর মে মাসে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের দায়িত্ব নেওয়া ৩৯ বছর বয়সী কোচের সঙ্গে নতুন করে এক বছরের চুক্তি বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন।
বেশ কিছুদিন ধরেই ফুটবল পাড়ায় গুঞ্জন বাংলাদেশে ফিরছেন না জাতীয় ফুটবল দলের ইংলিশ কোচ জেমি ডে। সেই গুঞ্জন জোরালো হয় ছুটি কাটিয়ে নির্ধারিত সময়ে জেমির ঢাকা না ফেরায়। জেমির সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তির মেয়াদ ছিল ৪ মে পর্যন্ত। দুইয়ে-দুই মিলিয়ে ধরেই নেওয়া হয়েছিল বাংলাদেশের ফুটবলে জেমি অধ্যায় শেষ। জেমি ভক্তদের জন্য ভালো খবর হলো ইংলিশ এই কোচের সঙ্গে নতুন এক বছরের চুক্তি করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন।
জামাল ভূঁইয়াদের সঙ্গে জেমি আরও এক বছর থাকছেন বলে নিশ্চিত করেছেন বাফুফে টেকনিক্যাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক ডিরেক্টার পল স্মলি। জেমি ঢাকা ফিরে বিশ্বকাপ প্রাকবাছাইয়ের প্রস্তুতি শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন স্মলি, ‘জেমির সঙ্গে পুরোনো চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন তাঁর সঙ্গে নতুন করে ১২ মাসের চুক্তি করেছে। জেমি এ মাসের তৃতীয় সপ্তাহে ঢাকা ফিরবেন। এর পরে লাওস ম্যাচের জন্য শুরু হবে প্রস্তুতি।’ বিশ্বকাপ প্রাকবাছাইয়ে লাওসের বিপক্ষে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে খেলবে বাংলাদেশ। ৬ জুন বাংলাদেশকে প্রথম ম্যাচ খেলতে হবে প্রতিপক্ষের মাটিতে। দ্বিতীয় পর্বের ম্যাচটি ১১ জুন ঢাকায়।
প্রতিপক্ষ হিসেবে লাওস বাংলাদেশের কাছে যথেষ্ট পরিচিত। গত বছরের অক্টোবরে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে এই লাওসকেই সিলেটে ১-০ গোলে হারিয়েছিল জেমি ডের দল। এর আগে অ্যান্ড্রু ওর্ডের আমলে গত বছর মার্চে ভিয়েনতিয়েনে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে ২-০ গোল পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত ২-২ গোলে ড্র করেছিল বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক এমন পারফরম্যান্সের পরও লাওসকেই এগিয়ে রাখছেন বাংলাদেশ কোচ। ইংল্যান্ড থেকে প্রথম আলোকে বাংলাদেশ কোচ জানিয়েছেন, ‘লাওস আমাদের চেয়ে র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে। জয়ের ক্ষেত্রেও এগিয়ে আছে তারা। যদি জয়-পরাজয়ের সম্ভাবনার কথা বলি, জয়ের ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ এগিয়ে আছে লাওস। বাকি ৪০ শতাংশ আমাদের।’
জেমির কথা শুনে বাংলাদেশ সমর্থকদের হতাশার কিছু নেই। আশার রাস্তাও দেখিয়েছেন কোচ। প্রাকবাছাই পাড়ি দেওয়ার জন্য ফুটবলের সেই চিরাচরিত কথাটাই তুলে ধরেছেন ডে, ‘ওদের সঙ্গে খেলার সুবাদে শক্তি ও দুর্বলতা জানা আছে। তেমনি ওরাও জানে আমাদের শক্তি ও দুর্বলতা। প্রতিপক্ষ হিসেবে তারা শক্তিশালী। তবে আমাদের খেলোয়াড়েরা প্রস্তুত আছে। খেলোয়াড়েরা যদি দুই ম্যাচেই নিজেদের সেরাটা দিতে পারে, পরবর্তী রাউন্ডে যাওয়া সম্ভব।’
এই বাধা টপকাতে পারলে আটটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ নিশ্চিত হবে বাংলাদেশের। সঙ্গে থাকা যাবে কাতার বিশ্বকাপ খেলার নামকাওয়াস্তে দৌড়েও। কিন্তু ব্যর্থ হলে দিতে হতে পারে চরম মূল্য। ছিটকে যেতে হবে আগামী চার বছরের আন্তর্জাতিক ফুটবলের মূল স্রোত থেকে। কারণ, বাদ পড়াদের জন্য এখনো পরবর্তী চার বছরের কোনো সূচি ঘোষণা করেনি এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি)। যদিও গতবার বাদ পড়ে যাওয়া দলগুলো নিয়ে এএফসি সলিডারিটি কাপের আয়োজন করেছিল এশিয়ান ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা।