‘ফুটবল উন্নয়নে বাংলাদেশের উচিত ভারতকে অনুসরণ করা’ সাম্প্রতিক সময়ে কথাটি অনেকের মুখেই শোনা যায়। প্রকাশ্যে সে কথা বলেছেন জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। কাল ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের ইনস্টাগ্রাম লাইভ প্রোগ্রামে যোগ দিয়ে কথাটি বলেছেন তিনি। প্রায় আধা ঘণ্টার আলাপচারিতায় প্রতিবেশী দুই দেশের ফুটবল ছাড়াও নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও কথা বলেছেন বাংলাদেশের ফুটবলের পোস্টারবয়।
গত ২৪ ডিসেম্বর কলকাতা মোহামেডান দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন জামাল। এরপর থেকেই ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের নিয়ম অনুযায়ী দলের সঙ্গে হোটেলে কোয়ারেন্টিনে আছেন তিনি। কাল কোয়ারেন্টিন পর্ব শেষ হওয়ায় আজ সকালে হোটেল জিম করেছে জামালের দল। আগামীকাল থেকে মাঠের অনুশীলন শুরু করবেন জামালরা।
এর আগে কোয়ারেন্টিনে রুমে থেকে ভারত ফুটবল ফেডারেশনের ইনস্টাগ্রামে এসে চুটিয়ে গল্প করেছেন জামাল। ডেনমার্কে জন্ম নিয়ে বাংলাদেশের জার্সিতে খেলা থেকে শুরু করে কলকাতায় বাংলাদেশ–ভারতের মুখোমুখি হওয়া, এশিয়ান গেমসে কাতারের বিপক্ষে তাঁর একমাত্র গোলে জয় পাওয়াসহ বাংলাদেশ ও কলকাতার মধ্যে সাদৃশ্যের গল্প শুনিয়েছেন জামাল।
বাংলাদেশের অধিনায়ক ভারতের আই লিগে এবারই প্রথম যোগ দিয়েছেন। তবে দুই দেশের ফুটবলটা অনেক দিন ধরেই তো কাছ থেকে দেখা হচ্ছে তাঁর। প্রতিবেশী দুই দেশের জন্য জামালের বার্তা কী? এমন প্রশ্নে জামাল বলেন, ‘দুই দেশকেই অনেক উন্নতি করতে হবে। বড় বড় টুর্নামেন্টে খেলতে হবে। ভারতের র্যাঙ্কিং এক শর মধ্যে থাকে। এটা অনেক বড় অর্জন। ভারত সঠিক পথেই আছে। বাংলাদেশের উচিত ভারতকে অনুসরণ করা।’ তবে আইসল্যান্ডের মতো দেশ কয়েক লাখ জনসংখ্যা নিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে পারলে ভারত কেন পারবে না, সে প্রশ্নও রেখেছেন জামাল।
৯ জানুয়ারি শুরু হবে আই লিগ। প্রথম দিনেই সুদেভা মুনলাইটের বিপক্ষে মাঠে নামবে জামালের দল। লিগে মোহামেডান কত দূর যাবে, সে মন্তব্য এখনই করতে চান না বাংলাদেশ অধিনায়ক। প্রথম ম্যাচটি খেলার পর ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে চান তিনি, ‘চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখি। তবে একটা দল অনেক দিন পরে (সাত বছর) আই লিগে ফিরেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে, এটা বলা ঠিক নয়। লক্ষ্য থাকবে প্রথম ম্যাচটি জেতা। প্রথম ম্যাচ দেখার পর বলতে পারব আমাদের দল কত দূর যাবে।’
মোহামেডান ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ওয়াসিম আকরাম জামালকে চ্যাম্পিয়ন খেলোয়াড় ছাড়াও এশিয়ার অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। সঞ্চালক কথাটি জামালকে স্মরণ করিয়ে দেন। প্রত্যুত্তরে জামাল বলেন, ‘এটা প্রমাণ করাই হবে আমার কাজ। আমাকে প্রমাণ করতে হবে যে মোহামেডান আমাকে নিয়ে ভুল করেনি। একজন পেশাদার ফুটবলার হিসেবে অনেক চাপই নিতে হয়। আমি এটা উপভোগ করি। চাপ না থাকলে কোনো মজা নেই। আমি এই চ্যালেঞ্জ নিচ্ছি।’
কলকাতা পৌঁছে সেখানকার সঙ্গে বাংলাদেশের জীবন ব্যবস্থা প্রায় একই রকম মনে হচ্ছে জামালের। ভাষা, সংস্কৃতি ও খাদ্যাভ্যাসে তেমন কোনো পরিবর্তন না পেলেও ঢাকার চেয়ে কলকাতায় ট্র্যাফিক জ্যাম কিছুটা কম বলে জানিয়েছেন।