সব কটি বয়সভিত্তিক স্তর পেরিয়ে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন বেশি দিন হয়নি। ২০১৯ সালে ঢাকায় ভুটানের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে বদলি হিসেবে শুরু। জাতীয় দলের জার্সিতে ওমানের বিপক্ষে ছিলেন একাদশে। গত মাসে কিরগিজস্তানে প্রথম দুটি ম্যাচ খেলেছেন। এখন পর্যন্ত ৫ থেকে ৬টি ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়েছে ইয়াছিন আরাফাতের। তবে গতকালই ভারতের বিপক্ষে সমতাসূচক গোল করে আলোচনার এলেন জাতীয় দলের ১৯ বছর বয়সী এই লেফট ব্যাক।
বাংলাদেশের জার্সিতে এটিই প্রথম আন্তর্জাতিক গোল ইয়াছিনের। অনূর্ধ্ব-১৮ ও অনূর্ধ্ব-১৯ দলে ৩টি গোল করেছেন ভারত, জর্ডান ও ভুটানের বিপক্ষে। ৩ গোলের ২টি হেডে। অনূর্ধ্ব-১৮ সাফ ফাইনালে গোল করার পর সেটি হয়ে গিয়েছিল তাঁর জন্য হরিষে বিষাদ। উত্তেজনায় জার্সি খুলে ফেলেছিলেন তিনি। জার্সি খোলার শাস্তি হলুদ কার্ড। তাঁর মনেই ছিল না আগেই হলুদ কার্ড দেখা আছে। দুই হলুদ কার্ড দেখে বাধ্য হয়েছিলেন মাঠ ছাড়তে।
বয়সভিত্তিক দল পেরিয়ে জাতীয় দলে অল্প কদিনেই মানিয়ে নিয়েছেন ইয়াছিন। দলে নিয়মিত মুখ হয়ে উঠছেন। মালেতে কোচ অস্কার ব্রুজোন তাঁর ওপর আস্থা রেখেছেন দুটি ম্যাচেই। সেই আস্থার প্রতিদান দিয়ে রক্ষণ যেমন করছেন, গোল করে দলকে মূল্যবান পয়েন্ট এনে দিয়েছেন ভারতের বিপক্ষে।
গতকাল ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘ভারতে বিপক্ষে গোল করতে পারা ভাগ্যের ব্যাপার। আমি ভীষণ আনন্দিত এই গোল করে।’ সেই আনন্দের রেশ ধরে আজ অনুশীলন শেষে বলে গেলেন, ‘সুযোগ পেলে আরও গোল করতে চাই জাতীয় দলের হয়ে। যেকোনো সময়ই চলে আসতে পারে সুযোগ। তাই তৈরি থাকি। আক্রমণে উঠি।’
ইয়াছিনের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সৈয়দপুরে। তপু বর্মণের বাড়ি থেকে আট-নয় কিলোমিটার দূরে। শুধু এ দুজন নয়, বাংলাদেশ ফুটবল দলে বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের খেলোয়াড় তিনজন। অন্যজন হলেন তরুণ মিডফিল্ডার মোহাম্মদ হৃদয়। চলমান সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের ২টি গোলই নারায়ণগঞ্জের দুই ফুটবলারের।
একসময় নারায়ণগঞ্জকে বলা হতো ফুটবলারের খনি। এখন ফুটবলার সরবরাহ কমে এলেও ইয়াছিনরা ধরে রেখেছেন নারায়ণগঞ্জের পতাকা। ইয়াছিন সম্পর্কে তপু বলেন, ‘ও দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ডিফেন্ডিংও ভালো। যে কারণে কোচ ওর ওপর আস্থা রাখে।’
সাইফ স্পোর্টিংয়ের সঙ্গে তিন বছরের চুক্তি শেষে এ বছর মুক্ত খেলোয়াড় ইয়াছিন। নতুন মৌসুমে নতুন কোনো দলে নাম লেখাতে চান। হতে চান দেশের সেরা ডিফেন্ডার।