হাভিয়ের কাবরেরার চোখ আজ চকচক করে ওঠার কথা। প্রিমিয়ার লিগের শুরু থেকে টঙ্গী ও মুন্সিগঞ্জ ঘুরে বেড়াচ্ছেন জাতীয় ফুটবল দলের নতুন কোচ। কিন্তু জাতীয় দলের ফরোয়ার্ডদের পায়ে গোল দেখছিলেন না।
আজ মুন্সিগঞ্জে বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে জাতীয় দলের তরুণ ফরোয়ার্ড ফয়সাল আহমেদের সঙ্গে গোল পেয়েছেন জাতীয় দলের পাইপলাইনে থাকা মারাজ হোসেনও। ক্লাবের কোচ দিয়েগো ক্রুসিয়ানিকে ছাপিয়ে এতে খুশি হওয়ার কথা কাবরেরারই।
ফয়সাল ও মারাজের গোলেই রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটির বিপক্ষে ৩-১ গোলে জয় পেয়েছে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। সাইফের অন্য গোলটি এমেকা ওগবুগের। এতে প্রিমিয়ার লিগে টানা দ্বিতীয় জয় পেয়েছে সাইফ আর রহমতগঞ্জ হারল টানা দুই ম্যাচে।
মৌসুমের দ্বিতীয় টুর্নামেন্ট ফেডারেশন কাপে রানার্সআপ হয়ে চমক দেখিয়েছিল রহমতগঞ্জ। কিন্তু টুর্নামেন্ট আর লিগের পার্থক্যটা যে আকাশ-পাতাল, সেটি এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে রহমতগঞ্জ।
ক্রুসিয়ানির দলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়ে তুলতে পারেনি পুরান ঢাকার ক্লাবটি। সাইফের তরুণ দলটি ক্রুসিয়ানির অধীনে কিন্তু উপভোগ্য ফুটবলই উপহার দিচ্ছে। মাঝখানে কয়েকটি পাস খেলে উইংয়ে খেলাটি ছড়িয়ে দেওয়া, সাইফের খেলায় দেখা যাচ্ছে বারবার।
জামাল ভূঁইয়া, উজবেকিস্তানের আশরোর গফুরোভ ও মারাজ। আর দুই উইঙ্গার ফয়সাল ও রহিমউদ্দিনকে যেন স্বাধীনভাবে উড়ে বেড়ানোর স্বাধীনতা দিয়ে রেখেছেন ক্রুসিয়ানি।
ব্যস এতেই উপভোগ্য হয়ে উঠছে সাইফের ফুটবল। ১৬ মিনিটে ফয়সালের গোলেই এগিয়ে গিয়েছিল সাইফ। ডান প্রান্তে মারাজের ক্রসে দূরের পোস্টে থেকে হেড করেই গোলটি করেছেন ফয়সাল। আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার হিসেবে যেভাবে ম্যাচটি খেলছিলেন মারাজ, শুধু গোল করানো নয়; তাঁর গোল পাওয়াটাও ছিল প্রত্যাশিতই। ৬২ মিনিটে দলের হয়ে তৃতীয় গোল করে গোলের খাতায় নাম লেখালেন তিনিও।
সেটিও দারুণ এক মুভে। মাঝমাঠের ওপর থেকে এমেকাকে পাস দিয়ে পেছন পেছন ফলো থ্রতে বক্সে চলে গেলেন মারাজ। এমেকার পা থেকে পেয়ে গেলেন প্রত্যাশিত পাসটিও। বক্সের মধ্যে বলটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দেখেশুনে গোলকিপারের পায়ের ফাঁক দিয়ে জড়িয়ে দিলেন জালে।
এর আগে সাইফের হয়ে দ্বিতীয় গোলটি করেছেন নাইজেরিয়ার এমেকা। এর জন্য অবশ্য বড় কৃতিত্ব দিতে হবে উজবেকিস্তানের মিডফিল্ডার গফুরোভকে। মাঝমাঠে প্রতিপক্ষের পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে বক্সের মধ্যে জায়গা নেওয়া এমেকাকে পাস দেন, নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দূরের পোস্ট দিয়ে গোলটি করেছেন এমেকা। মারাজের গোলে ৩-০ হয়ে যাওয়ার পরই কার্যত ম্যাচটি শেষ হয়ে যায়। ৭১ মিনিটে শুধু ব্যবধান কমানোর কাজটিই করতে পেরেছেন সানডে সিজোবা।
সব ছাপিয়ে ম্যাচ শেষে আলোচনায় ফয়সাল ও মারাজের গোল। মাঠে বসে দেখা দুটি গোলেরই প্রশংসা করেছেন কাবরেরা, ‘দুজনই খুব ভালো খেলেছে। বিপিএলে তরুণেরা ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিয়েছে, এটা দেখে ভালো লেগেছে।’