বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের পোশাকে অ্যাডিডাস! বিশ্বখ্যাত এই ক্রীড়া সামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের লোগো দেশের ফুটবলারদের পোশাকে দেখে অবাক হতেই পারেন। কী ব্যাপার! অ্যাডিডাস আবার কবে থেকে জাতীয় ফুটবল দলের পৃষ্ঠপোষক হলো! খুশিও হতে পারেন, ফুটবলের এই দুর্দিনে অ্যাডিডাসের মতো ব্র্যান্ড পাশে এসে দাঁড়িয়েছে—এটা তো বিরাট ব্যাপার!
কিন্তু সত্যটা হলো, জাতীয় ফুটবল দলের তো কোনো পৃষ্ঠপোষকই নেই। জাতীয় দল ব্যবস্থাপনা কমিটি খেলোয়াড়দের জন্য যে পোশাকের ব্যবস্থা করেছে, সেগুলো অ্যাডিডাস ব্র্যান্ডের। পয়সা দিয়ে কেনা অ্যাডিডাসের পণ্য দিয়েই এক অর্থে তাদের প্রচারণা চালাচ্ছে বাংলাদেশ ফুটবল দল। পৃথিবীর কোনো জাতীয় দল বিনা পয়সায় তাদের পোশাকে নির্দিষ্ট কোনো ব্র্যান্ডের লোগো ব্যবহার করছে—এমন নজির বোধ হয় খুঁজে পাওয়া যাবে না।
ব্যাপারটা চলছে বহুদিন ধরেই। জাতীয় দলের কোনো ম্যাচ থাকলে বাছবিচার ছাড়াই বিখ্যাত ক্রীড়া সামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের লোগো লাগানো জার্সি, ট্র্যাকস্যুট ইত্যাদি কিনে নিয়ে আসা হয় জাতীয় দলের জন্য। খেলোয়াড়েরা সেটিই ব্যবহার করেন। অথচ, এমনটা হওয়ার কথা নয়। কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নির্দিষ্ট চুক্তি করেই জাতীয় দলের জার্সিতে তাদের লোগো ব্যবহার করা যায়। ফিফার আইন অনুযায়ী ক্রীড়া সামগ্রী প্রস্তুতকারী ব্র্যান্ড ছাড়া আর অন্য কোনো ব্র্যান্ডের লোগো জাতীয় দলের জার্সিতে ব্যবহার করা যায় না। কিন্তু বাংলাদেশ ফুটবল দল লোগো ব্যবহার করে আসছে চুক্তি-টুক্তি ছাড়াই।
ব্যাপারটা যে ‘ভুল’, সেটি প্রকারান্তরে স্বীকার করেছেন জাতীয় ফুটবল দল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ, ‘বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের পৃষ্ঠপোষক অ্যাডিডাস নয়। ভবিষ্যতে আমি বিষয়টি খেয়াল রাখব।’
বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের পৃষ্ঠপোষক নেই বহু বছর ধরেই। জাতীয় দলের অস্তিত্বই তো গত ১৬ মাস ধরে ছিল না, পৃষ্ঠপোষক আসবে কোথা থেকে! শেষ দুই সাফেও বাংলাদেশ খেলেছে কোনো রকম পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই। সেটি হতেই পারে, কিন্তু বিনা পয়সায় বিখ্যাত ব্র্যান্ডের প্রচারণাটা কেন করবে জাতীয় দল?
জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক এক ফুটবলার জানালেন বিষয়টা সব সময়ই দৃষ্টিকটু। কিন্তু তারপরেও কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই কারও, ‘জাতীয় দলের পৃষ্ঠপোষক নেই—এটাই তো লজ্জার। তার ওপর আমরা নির্বিকারভাবে চুক্তি ছাড়াই একটি নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের পোশাক ও জার্সি গায়ে দিয়ে খেলি। এটা কেবল দৃষ্টিকটুই নয়, চরম অপেশাদারিও।’