বিশ্বকাপ জিতবে কে—এ প্রশ্নের উত্তরে ঠারেঠোরে হলেও বেলজিয়ামের নাম আসে। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনার মতো বড় ভক্তের দল নেই। নেই জার্মানি কিংবা স্পেনের মতো শিরোপা জেতার ইতিহাস। কিন্তু দুর্দান্ত যেসব খেলোয়াড় নিয়ে রাশিয়া গেছে দেশটি, তাতে ফেবারিটের তকমা লাগাতে সমস্যা নেই। ফ্রান্সের পর দ্বিতীয় বড় দল হিসেবে প্রত্যাশিত জয় পেয়েছে ‘রেড ডেভিল’রা। বিশ্বকাপ অভিষেকে ৩-০ গোলে হারল পানামা।
ম্যাচের প্রথমার্ধে অবশ্য হতাশ করেছে বেলজিয়াম। স্কোরলাইনে কোনো দাগ ফেলতে না পারার ব্যর্থতা তো ছিলই। সেই সঙ্গে ছিল অগোছালো ফুটবলের প্রদর্শনীও। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আচমকা এক শট নিলেন দ্রিস মের্তেন্স। ৪৭ মিনিটের দুর্দান্ত সেই গোলের পরই যেন বেলজিয়ামের মনে পড়েছে, তারা এ ম্যাচে ফেবারিট। ৬ মিনিটের মধ্যে রোমেলু লুকাকুর দুই গোলে ব্যবধান বেড়েছে। পানামা গোলরক্ষক হাইমে পেনেদো বাধা হয়ে না দাঁড়ালে অনেক বড় জয় নিয়েই বিশ্বকাপ শুরু করতে পারত বেলজিয়াম।
বিশ্বকাপের অভিষেকটা পানামার যে খুব খারাপ হয়েছে তা নয়। কিন্তু প্রথমার্ধে আক্রমণাত্মক ফুটবলের ছিটেফোঁটাও ছিল না তাদের মাঝে। প্রথম ভালো কোনো সুযোগ সৃষ্টি করতেই ৫৪ মিনিট লেগেছে তাদের। দারুণ একটা ক্রস পেয়েও মিখায়েল মুরিয়ো বল ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি। যখন বল আওতায় পেলেন, ততক্ষণে থিবো কোর্তোয়া বেরিয়ে এসেছেন। মুরিয়োর শটও ভালোভাবে ঠেকিয়ে দিয়েছেন কর্নারের বিনিময়ে।
পরবর্তী ভালো আক্রমণটা করতে পানামার লেগেছে আরও ৩৫ মিনিট। ফিদেল এস্কোবারের সে শটেও কোনো ঝামেলা হয়নি কোর্তোয়ার। ব্যস, বিশ্বকাপ অভিষেকে পানামার গোলের সুযোগ বলতে এটুকুই। বাকি সময়গুলো বেলজিয়ামের আক্রমণ ঠেকিয়েই পার করেছে তারা। কিন্তু এডেন হ্যাজার্ড, কেভিন ডি ব্রুইনা, মের্তেন্স ও ইয়ানিক কারাসকো সমৃদ্ধ একটি আক্রমণ ভাগের কাছ থেকে যতটুকু প্রত্যাশা করা হয়, তেমনটা ঝড় দেখা যায়নি। হ্যাজার্ডের একটি শট জালের পাশে লেগেছে, ব্রুইনাও বারের ওপর দিয়ে বল পাঠিয়েছেন। আর মের্তেন্স , কারাসকোদের হতাশ করার জন্য তো পেনেদো ছিলেনই!
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বক্সের মধ্যে একটা আলগা বল পেয়ে পরিস্থিতি বদলে দিয়েছেন মের্তেন্স। ডান দিক থেকে নেওয়া দারুণ এক ভলিতে বাঁ পোস্টের ওপরের কোনায় পাঠিয়েছেন বল। ঝাঁপ দেওয়া পেনেদোর পক্ষেও সেটা ধরা সম্ভব হয়নি। এরপরই খেলার গতি বেড়েছে। ফ্রিকিক আরেকটুর জন্য ব্যবধান দ্বিগুণ করে ফেলেছিলেন ডি ব্রুইনা। নিজে গোল করতে ব্যর্থ হলেও লুকাকুকে গোল বানিয়ে দিতে সমস্যা হয়নি তাঁর। ৬৯ মিনিটে প্রথমবারের মতো ব্রুইনার পাস খুঁজে পেল লুকাকুকে। দারুণ এক হেডে লুকাকুও পেয়ে গেলেন গোল।
৬ মিনিট পরেই হ্যাজার্ডও নাম লেখালেন গোল বানিয়ে দেওয়াদের খাতায়। তাঁর পাস থেকে গোল করতে এবার অবশ্য একটু কষ্ট করতে হয়েছে লুকাকুকে। আগুয়ান পেনেদোকে দেখে দারুণ এক চিপ করতে হয়েছে ‘রেড ডেভিল’ ফরোয়ার্ডকে।