অবশেষে নাটক ছাড়া একটি দিন পার করল ফেডারেশন কাপ। প্রথম দুদিন মিলিয়ে তিনটি ওয়াকওভার ম্যাচ দেখেছিলেন দর্শকেরা। কাল তৃতীয় দিনে খেলোয়াড়দের বাস থেকে নামিয়ে এনে হয়েছে টাইব্রেকার নাটক। আজ চতুর্থ দিনে কোন নাটক দেখতে হয় কি না, সেটাই ছিল শঙ্কার বিষয়।
বড় খবর আজ কোনো নাটক হয়নি। দিনের একমাত্র ম্যাচে বাংলাদেশ পুলিশ ফুটবল ক্লাবকে ২–০ গোলে হারিয়ে গ্রুপ ‘সি’ থেকে সবার আগে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে চট্টগ্রাম আবাহনী। দুই অর্ধেই হয়েছে একটি করে গোল—একটি করেছেন আরিফুর রহমান, আরেকটি উইলিয়াম টোয়ালা।
কয়েক দিন আগে শেষ হওয়া স্বাধীনতা কাপে চমক দেখিয়েছিল পুলিশ। সেমিফাইনালে হারলেও বসুন্ধরা কিংসের বিপক্ষে তাদের লড়াকু পারফরম্যান্স প্রশংসিত হয়েছিল। কয়েক দিনের ব্যবধানে ফেডারেশন কাপে এসে পুলিশের সেই দাপট আর নেই। আগের ম্যাচে সাইফের সঙ্গে ১–১ গোলে ড্রর পর আজ আবাহনীর কাছে হার। গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায়ের শঙ্কা জেগেছে পুলিশের। আগামী বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম আবাহনীর বিপক্ষে সাইফ হার এড়াতে পারলেই পুলিশের বিদায়। তখন কোয়ার্টার ফাইনালে আবাহনীর সঙ্গী হবে সাইফ।
পারফরম্যান্সে পুলিশের হয়েছে অবনমন আর মারুফুল হকের চট্টগ্রাম আবাহনীর হয়েছে উন্নতি। এবার চট্টগ্রাম আবাহনীকে চিনতে হয় কোচ মারুফুলকে দেখে। মৌসুম শুরুর টুর্নামেন্ট স্বাধীনতা কাপ থেকে দলটির বিদায়ের পরেই মারুফুল বুঝে যান, একঝাঁক অখ্যাত খেলোয়াড় নিয়েই স্রোতের বিপরীতে সাঁতরাতে হবে তাঁকে। তাই ফেডারেশন কাপের আগে এক সপ্তাহের জন্য দল নিয়ে চলে যান বিকেএসপিতে। সেখানে নিবিড় অনুশীলনের ফল আজ প্রথম ম্যাচে পেয়ে গেলেন চট্টগ্রাম আবাহনীর কোচ মারুফুল।
দুই বিদেশি ছাড়াই পুলিশের বিপক্ষে আজ দারুণ খেলেছে চট্টগ্রাম আবাহনী। দুই মিনিটেই গোল পেতে পারত তারা। পুলিশের এক ডিফেন্ডার ব্যাক পাস দেন তাঁদের গোলরক্ষক মোহাম্মদ নেহালকে। বিপন্মুক্ত করতে গিয়ে আবাহনীর ফরোয়ার্ড রুবেল মিয়ার পায়ে বল তুলে দেন নেহাল। বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সামনে থাকা এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে শট নিলে ক্রস বারের ওপর দিয়ে চলে যায়।
২৪ মিনিটে প্রথম গোল এনে দেন আরিফুর। মিডফিল্ডার সোহেল রানার পাস অফ সাইড ফাঁদ ভেঙে বক্সে ঢুকে পড়েন। গোলরক্ষক নেহাল পোস্ট ছেড়ে বের হয়ে এলে তাঁকে কাটিয়ে দুরূহ কোণ থেকে বল জালে জড়িয়ে দেন আরিফুর। ৬০ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন টোয়ালা। লেফটব্যাক কামরুল ইসলামের ক্রসে দক্ষিণ আফ্রিকার ফরোয়ার্ড টোয়ালার হেড করলে বল চলে যায় পোস্টে, ২–০।
পুলিশের অন্যতম শক্তির জায়গাটা তাদের মরক্কোর মিডফিল্ডার আদিল কুসকুস। চোটের কারণে শুরুতে নামানো হয়নি তাঁকে। ২ গোলে পিছিয়ে পড়লে বদলি হিসেবে কুসকুসকে মাঠে নামান পুলিশ কোচ। বিপজ্জনক হয়ে ওঠার আগেই তাঁর পেছনে একজন মিডফিল্ডারকে মার্কিংয়ে লাগিয়ে দেন মারুফুল। কুসকুসও আর আজ কার্যকর হয়ে উঠতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে আবাহনী। মৌসুমে এটি তাদের প্রথম জয়।