লিওনেল মেসিকে তাঁর বর্ণাঢ্য ফুটবল ক্যারিয়ারের সবচেয়ে জঘন্য স্মৃতি উপহার দিল ক্রোয়েশিয়া। ক্রোয়েশিয়ার কাছে আর্জেন্টিনা হেরে গেল ৩-০ গোলে। ১৯৫৮ বিশ্বকাপের পর গ্রুপপর্বে তাদের সবচেয়ে বড় পরাজয়। ৬০ বছর পর! ভাবা যায়! ১৯৬২ সালের পর মাত্র একবার আর্জেন্টিনা গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে। এবার সেই শঙ্কার খড়্গ ঝুলছে মাথার ওপর। আর পুরো ম্যাচে মেসিকে তাঁর অচেনা ছায়া বানিয়ে রেখেছিল যে ক্রোয়েশিয়া; তাদের কাছ থেকেই সবচেয়ে বেশি সহমর্মিতা পাচ্ছেন মেসি।
চারদিক থেকে মেসির দিকে সমালোচনার বিষমাখা তির ছুটে যাচ্ছে। নেমে আসছে কর্কশ সব বাক্যবাণের চাবুক। তা মেসির প্রাপ্যও। আজ জাদুকরি কিছু করে দেখানো তো দূরের কথা, মেসি যেন মাঠে দ্বাদশ খেলোয়াড় হয়ে রইলেন। কেউ যেন তাঁকে প্রতিজ্ঞা করিয়েছে, পায়ে বল ধরবে না। মেসিকে এভাবে বোতলবন্দী করে রাখার কৃতিত্ব যাদের, সেই ক্রোয়েশিয়া বলছে, শুধু মেসিকে দোষ দেওয়া অন্যায়।
বার্সেলোনায় মেসির সতীর্থ ইভান রাকিতিচ। আজ খেলেছেন দুর্দান্ত। ক্রোয়েশিয়া এগিয়ে গেছে তাদের দুই মিডফিল্ডার রাকিতিচ ও লুকা মডরিচকে দিয়ে। এই দুজনের সঙ্গেই পেরে ওঠেনি আর্জেন্টিনা। রাকিতিচ এমনিতেই মেসির বড় ভক্ত। মেসিকে আটকে রাখার ভারও অনেকটা ছিল তাঁর কাছে। তাতে ১০০তে ১২০ নম্বর পাওয়া রাকিতিচ ম্যাচ শেষে বললেন, ‘মেসির জন্য সত্যি খুব খারাপ লাগছে। এখনো আশা করছি, ও যেন পরের রাউন্ডে যায়।’
১৯৯৮ বিশ্বকাপের পর প্রতিবার গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নিতে হয়েছে। এবার এই গ্রুপ থেকে সবার আগে নকআউট পর্বে ক্রোয়েশিয়া। তা–ও এক ম্যাচ হাতে রেখে। এটাকে কিন্তু চমক বলতে নারাজ রাকিতিচ, ‘আমি বলব না এটা চমক। আমরা বিশ্বকাপে সেরা দল নিয়ে এসেছি। প্রতিটা ম্যাচ জেতার জন্যই এসেছি। হ্যাঁ, আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ ট্রফির দাবিদার। ওদের গ্রুপ চ্যাম্পিয়নই হওয়ার কথা ছিল। তাদের হারাতে পারা আমাদের জন্য অনেক আনন্দের।’
রাকিতিচ না হয় মেসির ক্লাব–সতীর্থ। অনেক ভালো বন্ধু। কিন্তু মডরিচ তো সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বী। খেলেন রিয়াল মাদ্রিদে। আজ ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় মডরিচই কিন্তু আসল কথাটা বললেন, ‘মেসি অনন্যসাধারণ এক ফুটবলার। কিন্তু ওর একার পক্ষে সব করা সম্ভব নয়। এখন ফুটবলে আপনি একা জিততে পারবেন না। সতীর্থদের সাহায্য আপনার লাগবেই।’
সাহায্য? প্রথমার্ধে আজ সতীর্থেরা মেসিকে সব মিলিয়ে দুবার পাস দিয়েছেন। এটাই তো বলে দিচ্ছে সব!