বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল।
বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল।

ফুটবল–আকাশে রঙিন সূর্যের দেখা কি মিলবে

সারা বিশ্বে ফুটবলের নবীন তারাগুলো যেখানে আলোর মিছিলে যোগ দিচ্ছে, সেখানে আলো হারিয়ে অন্ধকারে বাতি খোঁজার ব্যর্থ চেষ্টা করছে না তো বাংলাদেশ! দিন দিন পেছনের দিকে ধাবিত হচ্ছে না তো দেশের ফুটবল। কী বলছেন ফুটবলসম্পৃক্ত মানুষগুলো?

সাবেক খেলোয়াড়দের দাবি যেমন ছিল, সেখানেই থমকে আছে বাংলাদেশের ফুটবল। তবে র‍্যাঙ্কিংয়ের দিকে নজর দিলে দেখা যায়, দিন দিন পিছিয়েছে বাংলাদেশ। সমশক্তির দলগুলোর দ্রুত উন্নতিতে ক্রমাগত পেছনে পড়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

ফুটবলে আমরা আগের জায়গায়ও নেই। দিন দিন অধঃপতনে গেছে এ দেশের ফুটবল।
আলফাজ আহমেদ, জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক

স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল দিয়ে শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের ফুটবলের অগ্রযাত্রা। ১৬টি প্রীতি ম্যাচ খেলে মুক্তিযোদ্ধা ফান্ডে ৫ লাখ টাকা জমা করে স্বাধীনতাসংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল তারা। যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন দেশের প্রথম জাতীয় ফুটবল দল গঠিত হয় ১৯৭২ সালে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শুরুটা মন্দ হয়নি বাংলাদেশের। ১৯৭৩ সালে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে ২-২ গোলে ড্র করে জাতীয় দল।

১৯৭৪ সালে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি) ও ১৯৭৬ সালে ফিফার অনুমোদন লাভ করে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তখনো নবীন বাংলাদেশ। ১৯৭৯ সালের এএফসি এশিয়ান কাপ-১৯৮০–এর বাছাইপর্বে আফগানিস্তানকে হারিয়ে এবং কাতারের সঙ্গে ড্র করে কোয়ালিফাই করে বাংলাদেশ। এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের ফুটলে সবচেয়ে বড় অর্জন সেটাই। অথচ ফিফা সদস্য হওয়ার তিন বছরও পূর্ণ হয়নি তখন।

সাফল্যের খাতায় ১৯৮৫ সালে মালদ্বীপের বিপক্ষে ৮-০ গোলের জয়, ১৯৯৫ সালে মিয়ানমারে চার জাতি প্রতিযোগিতামূলক টুর্নামেন্ট জয়, ১৯৯৯ সাফ গেমসে সোনার পর ২০০৩ সালে সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়ন। ফুটবল নিয়ে নতুন কিছুর স্বপ্ন দেখা শুরু করে সমর্থকেরা। কিন্তু বাংলাদেশের ফুটবলের গল্পটা কখনো সরলরৈখিক ছিল না।

বাংলাদেশের ফুটবলে বদল মানে কোচ পরিবর্তন

১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে প্রথমবারের মতো প্রকাশিত ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে ১৫০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৩৩তম। পরের বছরের আগস্টে দল বেড়ে হয় ১৫৬টি। বাংলাদেশের অবস্থান এগিয়েছে এই সময়ে। ১২০তম বাংলাদেশের চেয়ে একটু এগিয়ে ছিল ক্রোয়েশিয়া (১১৭)। অবশ্য যুগোস্লাভিয়ার কাছ থেকে স্বধীন হওয়া ক্রোয়েশিয়া ফুটবল প্রতিভায় সব সময়ই এগিয়ে ছিল। ফলে তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা টানলে গেলে হাস্যাস্পদ হতে হবে।

বাংলাদেশের ফুটবলে সেরা সময় ধরা হয় ১৯৯৬ সালে। ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ের নিজেদের সেরা অবস্থানটা ছিল তখনই। ১৭৫টি দলের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১১০। ১৯৯৬ সালের ২৪ এপ্রিল প্রকাশিত র‍্যাঙ্কিং অনুযায়ী তখন ভেনেজুয়েলা (১১৬), ইরান (১১৮), উত্তর কোরিয়া (১২৭) এবং ইরাকের (১২৯) মতো দেশগুলো বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে ছিল। ভেনেজুয়েলা ছাড়া বাকি সব দলই বিশ্বকাপ খেলে ফেলেছে এর মধ্যে। দক্ষিণ আমেরিকায় ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ের মতো তিন দলের পাশে চতুর্থ হওয়ার কড়া প্রতিযোগিতায় এবারও ব্যর্থ হলেও ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে এখন ৫৮তম দল ভেনেজুয়েলা।

সর্বশেষ র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮৮। তারমানে বাংলাদেশ ক্রমাগত পেছাচ্ছে। আসলে কি তাই? ২০১৭ সালের শেষ থেকে ২০১৮ সালের মে মাস পর্যন্ত বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ইতিহাসের সর্বনিম্ন ১৯৭তম স্থানে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পেছনে ছিল মাত্র ৯টি দল।

২০০৮ সাল থেকে বাফুফের সভাপতির পদে কাজী সালাউদ্দিন, কিন্তু উন্নতির দেখা মেলেনি

সর্বশেষ মার্চে প্রকাশিত র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের পেছনে ছিল আরও ২৩টি দেশ। অর্থাৎ এক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ফুটবল যেখানে ছিল, প্রায় সেখানেই থমকে আছে। কিন্তু সমশক্তির দেশগুলো নিজেদের উন্নতি করার ফলে এবং ইউরোপের বেশ কিছু শক্তিশালী দল বিভক্ত হয়ে পড়ায় র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান পিছিয়েছে।

ফুটবলের চেয়ে নির্বাচন নিয়ে বেশি মাতামাতিতে থাকেন বাফুফে কর্তারা। কীভাবে কোন জায়গায় কাকে বসালে চার বছর পরে ক্ষমতায় আসা যাবে, সেটা নিয়ে বেশি ভাবা হয়।
আরিফ হোসেন মুন, সাবেক ফুটবলার

ফলে র‍্যাঙ্কিং দিয়ে আসলে ফুটবলের সঠিক চিত্রটা পাওয়া কঠিন। বাংলাদেশের ফুটবলের বর্তমান অবস্থা ও অগ্রগতি কেমন, সেটা বোঝার জন্য কথা হয় সাবেক ফুটবলার গোলাম সারোয়ার টিপু, আলফাজ আহমেদ, আরিফ হোসেন মুন ও দেশের অন্যতম সেরা কোচ মারুফুল হকের সঙ্গে। ফুটবল–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অধিকাংশই একমত, ফুটবলে এগিয়ে যেতে পারেনি বাংলাদেশ। ফলে সমশক্তির দলগুলো থেকে পিছিয়েছে।

আলফাজ আহমেদের কণ্ঠে ভিন্ন সুর। তাঁর ধারণা, বাংলাদেশ নিজেদের অবস্থানও ধরে রাখতে পারেনি, ‘ফুটবলে আমরা আগের জায়গায়ও নেই। দিন দিন অধঃপতনে গেছে এ দেশের ফুটবল।’ সাবেক স্ট্রাইকার যোগ করেন, ‘আপনি দর্শকদের কাছে মতামত নেন, এগিয়েছে বলার হার ১ শতাংশও হবে না। একসময় আমরা সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছি, চার জাতি টুর্নামেন্ট জিতেছি। তিনটি আন্তর্জাতিক শিরোপা জিতেছি। এখন তো সাফের সেমিতেও যেতে পারে না।’

দুর্দশা থেকে উত্তরণের একটি সুপরিকল্পিত ধারণা দিয়েছেন মারুফুল হক

জাতীয় দলের খাতায় সর্বশেষ অর্জন ২০০৩ সালের সাফ ফুটবলে চ্যাম্পিয়নশিপ হওয়া। এরপর থেকেই অবনমনের শুরু। যার পূর্ণতা পায় ২০১৭ সালে। একটুর জন্য র‍্যাঙ্কিংয়ে দ্বিশতক করার হাত থেকে বেঁচে গেছে বাংলাদেশ।

ঠিক বিপরীতে মালদ্বীপ। বাংলাদেশের অবনমনের সময়ে ফুটবলে উন্নতি শুরু মালদ্বীপের। ২০০৩ সালের পর এক প্রীতি ম্যাচ বাদে এই দ্বীপদেশকে আর হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। একসময়ের খর্বশক্তির প্রতিপক্ষের কাছে এখন হার এড়ানোই যেন দায়। গত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সর্বশেষ আসরে সাতবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে তারা। সমশক্তির অন্য দলগুলো কীভাবে এগিয়ে নিচ্ছে তাদের? কেন সেটা পারছে না বাংলাদেশ!

ফুটবলে অগ্রগতিতে সবচেয়ে ভূমিকা রেখেছে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন অব মালদ্বীপের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও সরকারি সহযোগিতা। রাজধানী শহরের বিভিন্ন স্থানে ফুটবল সংস্থার পক্ষ থেকে ছোট ছোট টার্ফ স্থাপন করা হয়েছে। শহরে ছোট–বড় মিলিয়ে রয়েছে কমপক্ষে ৩০টি টার্ফ। শহরের বাইরেও বিভিন্ন দ্বীপে টার্ফ বসিয়ে সেখানে শিশু-কিশোরেরা অনুশীলন করে।

একটা ছেলে কিসের আশায় ফুটবল নিয়ে পড়ে থাকবে? আজকে যাদেরকে সাবেক তারকা বলা হয়, তারাও কিন্তু স্থানীয় পর্যায় থেকে উঠে আসছে।
গোলাম সারোয়ার টিপু, জাতীয় দলের সাবেক কোচ

বাংলাদেশের ফুটবলে নেই কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা। সাবেক ফুটবলার ও বাফুফে সদস্য আরিফ হোসেন মুন তো এমনটাই জানালেন, ‘বাফুফে সব সময় বর্তমান নিয়েই পড়ে থাকে। দীর্ঘমেয়াদি সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা নেই। দায়সারাভাবে আজকের দিনটি কীভাবে যাবে, সেটা নিয়ে ভাবা হয়, আগামী পাঁচ বা দশ বছর পরে কী হবে, সেটা নিয়ে ভাবনা নেই। ভবিষ্যতে কোন রোড ম্যাপ দিয়ে সামনে এগোবে, তার কোনো নির্দেশনা নেই। যার জন্য আমাদের ফুটবল থমকে আছে। আর অন্যরা ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে।’

বাফুফের আন্তরিকতার অভাবে বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে ব্যর্থ হচ্ছে বলে মনে করেন মুন, ‘ফুটবল সংস্থার কিন্তু অর্থের কোনো অভাব নেই। অভাব হলো আন্তরিকতা, এগিয়ে নেওয়ার মানসিকতার। ফুটবলের চেয়ে নির্বাচন নিয়ে বেশি মাতামাতিতে থাকেন বাফুফে কর্তারা। কীভাবে কোন জায়গায় কাকে বসালে চার বছর পরে ক্ষমতায় আসা যাবে, সেটা নিয়ে বেশি ভাবা হয়।’

এদিকে ফুটবলকে এগিয়ে নিতে তৃণমূল পর্যায়ে ফুটবলকে ছড়িয়ে দেওয়ার গুরুত্ব দেন গোলাম সারোয়ার টিপু, ‘একসময় খুলনা, চট্টগ্রাম, রাজশাহীতে নিয়মিত লিগ হতো। তখন ওই সব এলাকা থেকে অনেক খেলোয়াড় উঠে আসত। কিন্তু এখন তো সবই ঢাকাকেন্দ্রিক। একাডেমি থেকে ভালো খেলোয়াড় কজন উঠে আসে? এমবাপ্পের মতো খেলোয়াড়েরা তো একাডেমি থেকে উঠে আসেনি। এগুলো স্থানীয় পর্যায় থেকে খুঁজে বের করতে হবে।’

দেশের ফুটবল মানেই যেন হতাশার এমন দৃশ্য

দেশের ফুটবলকে এগিয়ে নিতে তাই জেলা পর্যায়ে লিগগুলো চালু করার পরামর্শ দেন টিপু। দেশের ৬৪টা জেলার অর্ধেক জেলাতেও লিগ চালু হলে বছরে জেলাপ্রতি কমপক্ষে একজন করে খেলোয়াড় পাওয়া গেলেও ৩০ বা ৩২ জন কোয়ালিটি খেলোয়াড় পাওয়া যাবে। তাঁর কথা, একাডেমি করে জোর করে ভালো খেলোয়াড় পাওয়া যায় না। প্রতিভা খুঁজে নিতে হয়।

মালদ্বীপে তৃণমূলের ফুটবলে জোর দিতে প্রতিবছর সেখানে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের লিগ অনুষ্ঠিত হয়। মালদ্বীপ জাতীয় দলের প্রায় সব খেলোয়াড় এসব লিগ থেকে উঠে এসেছেন। ফুটবলে তাদের উন্নতির পেছনে মূলত এগুলো ভূমিকা রেখেছে।

তৃণমূল পর্যায়ে ফুটবলের প্রসারের দিকে আরিফ হোসেনও নজর দেওয়ার পরামর্শ দেন। বাফুফে একটি জাতীয় সংস্থা। কিন্তু এর কার্যক্রম সব ঢাকাকেন্দ্রিক। ফুটবলকে স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার পরামর্শ তাঁর, ‘কাগজে–কলমে নামমাত্র একাডেমিতে কী হচ্ছে? জেলাগুলোতে নিয়মিত লিগ হলে সারা বছর খেলোয়াড়েরা অনুশীলন করত। একটা ছেলে কিসের আশায় ফুটবল নিয়ে পড়ে থাকবে? আজকে যাদেরকে সাবেক তারকা বলা হয়, তারাও কিন্তু স্থানীয় পর্যায় থেকে উঠে আসছে।’

স্থানীয় কর্মকর্তারা যদি খেলা না চালু করেন, সে দায়ভার তো বাফুফের নয়। ফুটবলকে এগিয়ে নিতে তাদেরও দায়িত্ব আছে।
আবু নাইম সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক, বাফুফে

দেশের ফুটবলের এই দুর্দশা থেকে উত্তরণের উপায় কী? একটি সুপরিকল্পিত ধারণা দিয়েছেন দেশের অন্যতম সেরা কোচ মারুফুল হক।

‘যুগোপযোগী টেকসই পরিকল্পনা ও পর্যাপ্ত আর্থিক জোগান। তৃণমূলে ফুটবলের ব্যাপক প্রসার ঘটানো। ফুটবল শিক্ষায় শিক্ষিত কোচের অংশগ্রহণ। বয়সভিত্তিক ফুটবলে শক্তিশালী পরিচর্যা করা। দেশের সর্বোচ্চ লিগ সুসংগঠিত, অবিচ্ছিন্ন ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করা এবং দেশের সেরা খেলোয়াড়দের বিদেশি লিগে অংশগ্রহণ।’ এই কাজগুলোর মধ্য দিয়ে প্রাথমিকভাবে ফুটবলকে সামনে এগিয়ে নেওয়া যাবে। শৌখিন ও পেশাদারত্বের ফুটবলে এখনো এ দেশের খেলোয়াড়দের পেশাদার মনোভাব তৈরি হয়নি বলে মনে করেন এই কোচ।

এদিকে দেশের ফুটবলকে এগিয়ে নিতে ফুটবলকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে বলে জানান বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ, ‘নির্ধারিত সূচির খেলাগুলো যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রিমিয়ার লিগ, চ্যাম্পিয়নশিপ, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগসহ জেলা পর্যায়ে লিগ চালু হচ্ছে। জাতীয় দলের জন্য শিক্ষিত হাইপ্রোফাইল কোচিং প্যানেল গঠন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক ম্যাচের আগে ক্যাম্প করে অনুশীলনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ছেলেদের পাশাপাশি নারী ফুটবলারদের জন্য আলাদা একাডেমি করা হয়েছে। এ ছাড়া ফুটবলের অবকাঠামোগত উন্নয়নে স্টেডিয়াম তৈরি ও অন্যান্য কাজে সরকারের সহযোগিতায় একটি পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়িত হলে ফুটবলের অগ্রগতি দৃশ্যমান হবে।’

বাফুফের আন্তরিকতায় ঘাটতির কথা বলেন অনেকে

জেলা পর্যায়ে লিগ কবে চালু হচ্ছে, জানতে চাইলে আবু নাইম সোহাগ বলেন, ‘বাফুফের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং যথাসম্ভব আর্থিক সহায়তাও দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা যদি খেলা না চালু করেন, সে দায়ভার তো বাফুফের নয়। ফুটবলকে এগিয়ে নিতে তাদেরও দায়িত্ব আছে।’

আধুনিক সময়ে বদলেছে বিশ্ব। বদলেছে ফুটবলের ধরন। ফুটবলে এখন গতি, গতি আর গতি। পায়ের দক্ষতার চেয়েও শারীরিক সক্ষমতার দিকে এগোচ্ছে দলগুলো। প্রকৃতিপ্রদত্ত প্রতিভাকে হার মানাচ্ছে শারীরিক দক্ষতা ও শৃঙ্খলিত প্রশিক্ষণ। দক্ষিণ আমেরিকান দলগুলো যে কারণে গত ২০ বছরে বিশ্বকাপের দেখা পায়নি। সেখানে বাংলাদেশ তো আধুনিকতার সঙ্গে তাল মেলাতে ব্যর্থই।

বাফুফে ফুটবলকে নতুনভাবে ঢেলে সাজানোর দাবি করছে। এমন প্রতিজ্ঞা অবশ্য গত দুই দশকে অনেকবারই শোনানো হয়েছে। দেখা যাক, অমাবস্যার অন্ধকার ভেদ করে এ দেশের ফুটবল–আকাশে নতুন সূর্য ওঠে কি না।