>নেইমার চোট কাটিয়ে ফিরেছেন এই তো কদিন হলো। এর মধ্যেই এমন এক কাজ করলেন তিনি, যাতে তাঁর আবারও মাঠের বাইরে চলে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সমর্থককে ঘুষি মেরেছেন তিনি।
চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বাদ পড়ার পর ঘরোয়া ‘ডাবল’ জেতার স্বপ্নে বিভোর ছিল পিএসজি। লিগ তো জেতা হয়ে গেছেই, ফরাসি কাপ জিতলেই ডাবল হয়ে যেত নেইমারদের। কিন্তু তা আর হলো কোথায়? রেনেঁর কাছে পেনাল্টিতে হেরে কাপ জয়ের শিরোপা বিসর্জন দিয়েছে পিএসজি। কাপ হারানোর সঙ্গে সঙ্গে মেজাজও হারিয়েছেন নেইমার। ম্যাচ শেষে পুরস্কার প্রদানের সময় এক সমর্থকের ওপর চড়াও হন এই ব্রাজিলীয় তারকা।
প্রথমার্ধের ২১ মিনিটের মধ্যেই ২-০ গোলে এগিয়ে গিয়েছিল পিএসজি। ১৩ মিনিটে প্রথম গোল করেন ব্রাজিলিয়ান রাইটব্যাক দানি আলভেস, পরের গোলটা করেন নেইমার। এর পরেই আড়মোড়া ভেঙে জেগে ওঠে রেনেঁ। ৪০ মিনিটে আত্মঘাতী গোল করেন পিএসজির ডিফেন্ডার প্রেসনেল কিমপেম্বে। ৬৬ মিনিটে রেনেঁকে সমতায় ফেরান মোজাম্বিকের সেন্টারব্যাক মেক্সার। পরে ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ালে ৬-৫ ব্যবধানে পিএসজিকে হারায় রেনেঁ। ম্যাচ শেষে নিজের মেজাজ হারিয়ে ফেলেন নেইমার।
নেইমারের এই লজ্জাজনক মুহূর্ত ধরা পড়েছে বেশ কিছু দর্শকের মোবাইল ফোনে। তাঁরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় ভিডিওটা ছড়িয়ে দিতে দেরি করেননি। ভিডিওতে দেখা গেছে, ম্যাচ শেষে গ্যালারির দর্শকদের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন পিএসজির খেলোয়াড়েরা, রানার্সআপ মেডেল নেওয়ার জন্য। আশপাশের দর্শকেরা প্রিয় খেলোয়াড়দের ছবি তুলছেন, ভিডিও করছেন। নেইমারের বিষয়টা পছন্দ হয়নি। এক ভক্তের হাত থেকে ফোন কেড়ে নিতে চাইলেন তিনি। শুধু তা–ই নয়, ফোন না কাড়তে পেরে তাঁর দিকে ঘুষি মারতে গিয়েছেন নেইমার। পরে পিএসজির অন্য খেলোয়াড়েরা তাঁকে ধরাধরি করে ওপরে নিয়ে যান। এখনো জানা যায়নি সেই ভক্ত নেইমারকে উসকানিমূলক কিছু বলেছিলেন কি না। দুজনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হচ্ছে বোঝা গেলেও নেইমার রেগেমেগে সে সমর্থককে কী বলেছেন, সেটাও জানা যায়নি। তবে যা বোঝা গেছে, তাতেই যে নেইমার বিরাট এক সমস্যায় পড়তে যাচ্ছেন, তা বলাই বাহুল্য।
মাত্রই গতকাল জেনেছেন, সামনের মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন লিগের ৩ ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন নেইমার। শেষ মুহূর্তের বিতর্কিত পেনাল্টিতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে হেরে চ্যাম্পিয়নস লিগের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়েছিল পিএসজি। ম্যাচের পর নেইমার ইনস্টাগ্রামে গালাগাল করেছিলেন উয়েফাকে। আর এতেই তিন ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন তিনি।
নেইমারের চোটপ্রবণতা, মাঠের ভেতর ডাইভ দেওয়ার ‘অভ্যাস’, দলবদলের সময়ে মাঠের বাইরে বিভিন্ন দলের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে সাক্ষাৎকার দেওয়া, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উল্টোপাল্টা কাণ্ড ঘটানো, সর্বশেষ দর্শকের সঙ্গে এমন দুর্ব্যবহার—পিএসজিতে এসে যতটা না ইতিবাচক কারণে খবর হয়েছেন নেইমার, তার চেয়ে ঢের বেশি নেতিবাচক কারণে খবরে এসেছেন তিনি। প্রশ্ন হলো, নেইমারের জন্য পিএসজির ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাবে না তো?