রাত তখন ১১টা। রাউল মোরো গাড়ি চালাচ্ছিলেন। গাড়িতে তাঁর বাবাও ছিলেন। পুলিশের পোশাকে চারজন এসে গাড়ি আটকান। পুলিশের পোশাক দেখেই হয়তো কোনো সংশয় ছিল না রাউল মোরোর মনে, গাড়ি থামান। কিন্তু এমন বিপদ যে সামনে অপেক্ষা করছে, তা যদি আগে থেকে ঘুণাক্ষরেও টের পেতেন ইতালিয়ান ক্লাব লাৎসিওর ১৯ বছর বয়সী উইঙ্গার!
পুলিশের পোশাকে আসা ওই চার ছিনতাইকারী এসেই রাউল ও তাঁর বাবাকে মারধর শুরু করেন। এরপর রাউলের ‘মার্সিডিজ ক্লাস এ’ গাড়িটি নিয়ে চলে যান! রোম শহরের গ্রান্দে রাকোর্দো আনুলারেতে গত পরশু ঘটেছে এ ঘটনা।
রাউল ও তাঁর বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। লাৎসিও ক্লাবের যোগাযোগ বিভাগের পরিচালক দে মার্তিনো জানিয়েছেন, রাউল সুস্থই আছেন। তাঁদের গাড়িটিও পরে আর নিয়ে যাননি ছিনতাইকারীরা। ফুটবলবিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএন জানাচ্ছে, রোম শহরেই অরক্ষিত অবস্থায় গাড়িটা ফেলে রেখে চম্পট দিয়েছেন ছিনতাইকারীরা।
রাউল একসময় বার্সেলোনায় ছিলেন। কাতালান আরেক ক্লাব এসপানিওলের একাডেমি থেকে বার্সায় গিয়ে এক বছর কাটিয়েছেন সেখানকার যুব একাডেমিতে, কিন্তু আরও নিশ্চিত ভবিষ্যতের খোঁজে চলে যান ইতালিতে। লাৎসিওর একাডেমিতে যোগ দেন।
রোমে অবশ্য এমন ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এই গত মাসেই লাৎসিওরই মিডফিল্ডার টমাস বেসিচের হাতের দামি রোলেক্স ঘড়িটা বন্দুক ঠেকিয়ে ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন ছিনতাইকারীরা। এর আগে লাৎসিওর নগরপ্রতিদ্বন্দ্বী রোমার ডিফেন্ডার ক্রিস স্মলিংয়ের বাড়িতে চোর ঢুকে দামি গয়না ও ঘড়ি চুরি করে নিয়ে গেছে।
রাউল মোরোর এমন সময়ে এ দুঃস্বপ্নের মতো অভিজ্ঞতা হলো, যখন লাৎসিওর জার্সিতে তাঁর সময়টা কাটছে দারুণ। একসময় স্পেনের অনূর্ধ্ব-২১ দলে খেলা রাউল নগরপ্রতিদ্বন্দ্বী এসপানিওলের একাডেমি থেকে বার্সার একাডেমিতে গিয়েছিলেন ১৬ বছর বয়সে। কিন্তু, সেখানে এক বছর থাকার পরই পাড়ি জমান লাৎসিওতে।
দুই বছর সেখানে ‘পড়াশোনা’র পর ২০২০ সালের জুলাইয়ে লাৎসিওর জার্সিতে অভিষেক, তা-ও আবার জুভেন্টাসের বিপক্ষে। তবে এই মৌসুমেই মূলত ক্লাবের জার্সিতে আলো ছড়াতে শুরু করেছেন তিনি।
গত মৌসুমেও মাত্র একটি ম্যাচে সুযোগ পেয়েছিলেন, কিন্তু এ মৌসুমের শুরু থেকে মরিসিও সারির মিডফিল্ডে নিয়মিত মোরো এখন পর্যন্ত মোট ১৮ ম্যাচ খেলেছেন লাৎসিওর জার্সিতে, এর ১১টিই লিগে। এখন পর্যন্ত অবশ্য গোল পাননি ক্লাবের জার্সিতে, এ মৌসুমে লিগে গোল করিয়েছেন একটি।