বছর দু-এক আগে আলোচনায় এসেছিল এক আফগান শিশু। আকাশি-সাদা পলিথিন কেটে জার্সি বানিয়ে, সেই 'জার্সি'তে মেসির নাম লিখে সেই শিশুটি মেসির প্রতি তার অনুরাগের কথা জানিয়েছিল সবাইকে। মেসিও নিজ উদ্যোগে সেই শিশুর জন্য নিজের স্বাক্ষর-সংবলিত জার্সি পাঠিয়েছিলেন, পরে তার সঙ্গে দেখাও করেছিলেন। এখন ওই শিশু ঘরছাড়া হয়ে উদ্বাস্তু জীবন কাটাচ্ছে।
মাত্র সাত বছর বয়সেই জীবনের অনেক দিক দেখা হয়ে যাচ্ছে আফগান শিশু মুরতাজা আহামাদির। দুই বছর আগে নিজের নায়ক লিওনেল মেসির সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়ে যে শিশুটি আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছিল, দুই বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো উদ্বাস্তু হয়ে জীবনের কঠিনতম দিকটাও দেখা হয়ে যাচ্ছে তার। এলাকার তালিবান নেতাদের কাছে আক্রমণ আর অপহরণের হুমকি পেয়ে মুরতাজার গোটা পরিবারই এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
বেশি না, মাত্র দুই বছর আগের কথা। ২০১৬ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে একটা ভিডিও খুব সাড়া ফেলল। ভিডিওতে দেখা গেল যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের দারিদ্র্যপীড়িত ‘গজনি’ এলাকার এক মেসিভক্ত শিশু আসল আর্জেন্টিনার জার্সির আদলে পলিথিন কেটে ‘জার্সি বানিয়েছে। আকাশি-সাদা পলিথিন কাটা সেই জার্সিতে আবার মেসির নাম আর জার্সি নম্বরও সে লিখেছে পরম মমতায়, কালো কালি দিয়ে। টুইটার, ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া সেই ভিডিও একজন-দুজন করে পৌঁছে গেল স্বয়ং মেসির কাছে। ইউনিসেফের মাধ্যমে শিশুটিকে নিজের জার্সি পাঠালেন, সইসহ । কাতারের দোহায় খেলতে গিয়ে সে শিশুটির সঙ্গে দেখাও করলেন, নিজেই ব্যবস্থা করলেন সে যেন আফগানিস্তান থেকে কাতারে আসতে পারে। স্বপ্নের মতো কয়েকটা দিন কাটিয়েছিল মুরতাজা।
মেসির সঙ্গে দেখা করে মুরতাজা রাতারাতি বৈশ্বিক তারকা হয়ে গেল। ব্যাপারটির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও কম হলো না। তালিবান সন্ত্রাসবাদীদের কুনজরে পড়ে গেল মুরতাজার পরিবার। অর্থ আদায়ের জন্য হুমকি দেওয়াও শুরু হলো। প্রাণ বাঁচাতে তারা এখন রাজধানী কাবুলে। সংসারের কিছুই সঙ্গে করে নিয়ে আসতে পারেনি তারা। এমনকি মেসির কাছ থেকে পাওয়া সেই বিখ্যাত জার্সিটাও নয়।